facebook.com/almamun.sohag
ঈবলিশ আলীর ঈবলিশনামাঃ এক সময়কার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রাস অভি, নিরু, ইলিয়াস এর কথা কে শোনেনি!ইলিয়াস আলী তার ছাত্রনেতা জীবন থেকে আজ পর্যন্ত কতগুলো মানুষকে হত্যা করেছে, কত সন্ত্রাসী তৈরী করেছে, কত মায়ের বুক খালি করিয়েছে, কত দুর্নীতি, ডাকাতি করেছে, কত সন্ত্রাসী বাহিনী পরিচালনা করে তার হিসাব কেউ রাখেনা।
সেদিন এক বন্ধু বলছিল, প্রথম যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকি - ইলিয়াস আলি আর অভির কি দাপট। বন্ধুক যুদ্ধ এদের কাছে তখন ছেলেখেলার মত। একদিন মনে আছে - এরা মনের সুখে গোলাগুলি করছে আর আমরা লেকচার থিয়েটারের বারান্দায় উপুর হয়ে শুয়ে আছি। কোথাও যেতে পারছি না আর টিয়ার গ্যাসের ঝাঝে জান যায় যায়।
রাত নয়টা কি দশটার দিকে আই বি এ ভবন টপকিয়ে কোনভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হই। পরের দিন পেপারে দেখলাম একজন ছাত্র নিহত। এটা প্রায়ই হত। আমার এতকিছু ভাল করে মনে নেই -তবু মনে হয় ইলিয়াস সাহেবকে এর কিছুদিন পর ইউনিভারসিটি থেকে বের করে দেয়া হয়। পরবর্তিতে ইনিই হন ছাত্রদলে নেতা।
পরে আরও অনেক বড় একজন নেতা হয়েছেন (!)। বাংলাদেশের এত বড় নেতা, ঈবলিশের চরিত্রের অধিকারী না হয়ে এদেশে কেউ বড় নেতা তার নজির তো গত ৪১ বছরের ইতিহাসে নেই। উনি বিশাল ব্যাবসায়ি(!)। এই কিছুদিন হল শতকোটি টাকা ব্যায়ে ঢাকায় হাউজ নামে এক বিশাল বাড়ি করেছেন।
এই ইলিয়াস আলী... সেই ইলিয়াস আলী, যিনি ছিলেন দাপুটে ছাত্র নেতা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পসের অন্যতম ত্রাস। যার বিরুদ্ধে ছিল হত্যা ও গুম করার অনেক অভিযোগ। গত দশ পনের বছর সিলেটের রাজনীতির কলকাটি নাড়ছেন যে ক’জন রাজনীতিবিদ তার মধ্যে ইলিয়াস আলীর ভূমিকায় প্রনীধান যোগ্য। সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের সময় কিছুটা চাপের মধ্যে থাকলেও এসময়ে তিনিই বৃহত্তর সিলেটের রাজনীতির পাকা খেলোয়াড়। বিরোধীদলের একজন নেতা হওয়ার পরও ইচ্ছেমত ছড়ি ঘোরাতেন সিলেটের রাজনৈতিক ময়দানে।
সিলেটের এমসি কলেজে এইচএসসি অধ্যয়নকালে ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত হন ইলিয়াস আলী। সে সময় তিনি ছিলেন ছাত্রলীগের একজন কর্মী। ১৯৮১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগে ভর্তি হওয়ার পর তিনি ছিলেন জসিম উদ্দিন হলের আবাসিক ছাত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েই ইলিয়াস আলী যোগ দেন এরশাদের ছাত্রসমাজে। এসময় অস্ত্রবাজির রাজনীতি শুরু করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকাতে থাকেন অস্ত্রের চালান। নতুন বাংলা ছাত্রসমাজের ক্যডার হিসেবে যোগ দিলেও পরে দলবদল করে ছাত্রদলের নেতা হয়ে ওঠেন ইলিয়াস আলী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতিতে গ্রুপিংয়ের রাজনীতি ঢুকিয়েছিলেন ইলিয়াস আলী। গড়ে তুলেছেন নিজস্ব গ্রুপ। ছাত্রদলের বিশাল ক্যাডার, এই পরিচিতি দিয়েই উত্থান তার।
একের পর এক ঘটনার নায়ক হয়ে জন্ম দিতে থাকেন অভন্তরীণ সংঘাত। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন হলে ও ক্যামপাসে ঘটে যায় বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। ইলিয়াস আলী পরিণত হন ত্রাস সৃষ্টিকারী এক সন্ত্রাসনির্ভর ছাত্রনেতায়। বহু খুনের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। সে কারণে একাধিকবার গ্রেফতার করা হয় তাকে।
৮৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ৮৮ সালের ১১ ডিসেম্বর ছাত্রদল নেতা বজলুর রহমান শহীদ হত্যাকান্ড, ৮৯ সালের ২৯ নভেম্বর তার নেতৃত্বে ডাকসু কার্যালয় ভাংচুর, ৯২ সালের ৩ আগস্ট ছাত্রদলের রতন গ্রুপের সঙ্গে ইলিয়াস গ্রুপের বন্দুকযুদ্ধে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির নিহত হওয়া এবং এই সংঘর্ষের জের ধরে ৯২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মামুন ও মাহমুদ নাম দুই ছাত্রদল নেতার হত্যাকাণ্ডের মূল নায়ক ছিলেন ইলিয়াস আলী। মামুনকে হত্যা করে তার লাশ গুম করা হয়েছিলো সূর্যসেন হলের পানির ট্যাংকিতে। এছাড়াও প্রতিপক্ষ গ্রুপের সঙ্গে সশস্ত্র সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা মির্জা গালিব ও ছাত্রলীগ নেতা লিটন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৯৯১ সালে গ্রেফতার করা হয় ইলিয়াস আলীকে। ওই বছর ক্ষমতায় আসে বিএনপি।
তাই এক বছরের মধ্যেই ছাড়া পান ইলিয়াস আলী। এর পর দলের প্রত্যক্ষ মদদে ছাত্রদলে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হন তিনি।
৯২ সালে ১৬ জুন ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠন করা হলে রহুল কবির রিজভী আহমেদ সভাপতি ও এম ইলিয়াস আলী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। কিন্তু সন্ত্রাসী তখনও কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠায় বিএনপির শীর্ষ নীতিনির্ধারকরা তার প্রতি বিরগভাজন হয়ে ওঠেন। মাত্র ৩ মাসের মাথায় ছাত্রদলের কমিটি ভেঙ্গে দেওয়া হয়।
এ সময় বিএনপি ক্ষমতায় থাকা স্বত্বেও ৯৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মামুন ও মাহমুদ হত্যা মামলায় আবার গ্রেফতার হন ইলিয়াস আলী। রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। ২ বছর কারাবাসের পর মুক্তি পান তিনি। শর্ত হিসেবে বিএনপির হাইকমান্ডকে ইলিয়াস আলী কথা দেন কেবলমাত্র তার নিজ এলাকা বিশ্বনাথ-বালাগঞ্জে বিএনপিকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করা ছাড়া অন্যকিছু নিয়ে মাথা ঘামাবেন না। এরপর ঢাকার রাজনীতি ছেড়ে সিলেটে যান ইলিয়াস আলী।
কিন্তু সিলেট গিয়েই ভুলে বসেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে দেওয়া তার ওয়াদার কথা। সে সময় থেকেই ভংয়কর মূর্তি নিয়ে সিলেট দাপিয়ে বেড়ান এই নেতা। শুধু নিজ এলাকায় বিএনপি সংগঠিত করা নয় সিলেটে তাকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের একটি শক্তিশালী গ্রুপ গড়ে উঠে, সিলেটকে অস্ত্রবাজীর তীর্থভূমি করে তোলেন। তিনি নিজেও তার বেপরোয়া আচরণ অব্যাহত রাখেন। নিজস্ব বলয় গঠন করে সিলেটের রাজনীতির আলোচনায় উঠে আসেন ইলিয়াস আলী।
১৯৯৬ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচনে প্রথমবারের মতো দলীয় মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। সিলেটের অনেক সিনিয়র রাজনীতিবীদ ইলিয়াস আলীর ও তার দলবলের হামলার মুখে পড়েন। বর্ষীয়ান রাজনীতিবীদ এম সাইফুর রহমান, আবদুস সামাদ আজাদ, সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, এসএমএ কিবরিয়া, হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী, আব্দুল মাল আবদুল মুহিতের মতো ব্যক্তিরা ইলিয়াস আলীর রাজনৈতিক কূটচালের কাছে অসহায় হয়ে পড়েন। শুধু সিলেট আর ঢাকায় নয় দেশের বাইরেও উশৃংখল আচরণের দায়ে পুলিশের নজরবন্দি হতে হয় ইলিয়াস আলীকে।
২০০১ সালে এমপি হওয়ার পর তার এলাকা বিশ্বনাথ বালাগঞ্জে ত্রাসের রাজনীতি কায়েম করার অভিযোগ উঠে ইলিয়াস আলী বিরুদ্ধে।
তার নির্বাচনী এলাকায় সন্ত্রাসী বাহিনী আর প্রশাসনকে ইচ্ছেমতো দলীয়করণের প্রচেষ্টায় নামেন তিনি। প্রকাশ্য আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে মাঠে নামে ‘ইলিয়াস বাহিনীর লোক’ নামে পরিচিত একদল ক্যাডার-এমন অভিযোগ তার নির্বাচনী এলাকার মানুষের। এসব কিছুর প্রতিবাদ করারও সাহস ছিলো না মানুষের এমনকি ভুক্তভোগীদের। ২০০১ সালের ওইসব ঘটনার জের ধরে মামলা হয়েছে ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার পরের দিন সকালে। সিলেটের বিশ্বনাথ থানায় তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগ এনে দুটি মামলা হয়।
২০০১ সালে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ এনে মামলা দুটি করেছেন আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক ব্যবসায়ী বশারত আলী বাঁচা। মামলায় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, ভয় দেখানো, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আনা হয়েছে। বলা হয়েছে ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ইলিয়াস আলী ও তার লোকেরা বাদীর ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। এতসব অত্যাচার নিপিড়ণের অসংখ্য বিতর্কিত ঘটনার নায়ক ইলিয়াস আলী সবকিছু পাশ কাটিয়ে ফিল্মি স্টাইলে দেশব্যাপী পরিচিত হয়ে উঠেন।
সর্বশেষ সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এম এ কিবরিয়া হত্যা এবং ব্রিটিশ হাইকমশিনার আনোয়ার চৌধুরীরকে হযরত শাহজালাল মাজার গেটে হত্যা চেষ্টার অভিযোগও ওঠে তার বিরুদ্ধে।
তবে এতকিছুর পরেও ইলিয়াস আলীর নির্বাচনী এলাকা বিশ্বনাথ বালাগঞ্জের সরকারী অসংখ্য প্রজেক্ট নিয়ে উন্নয়নে অনেক অবদান ও দুর্নীতি ও গ্রুপ পালন করতেন। সাধারণ মানুষ তাই রাজনীতির কূটচাল ভুলে ইলিয়াস আলীকে তাদের উন্নয়নের কাণ্ডারী ভাবেন। আর সিলেট-লন্ডন কানেকশন, কোটি কোটি টাকার লেনদেন এসব বিষয় নিয়েও কথা শোনা যায়।
ক্রসফায়ারে ছিন্তাইকারী থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসী পর্যন্ত গুলি করে ফেলে রাখতে পারলেও দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জন্মদাতা বাপদের টাচও করতে পারেনি, র্যাব, যৌথ্য বাহিনী কেউ। এবার গুম বাহিনী আশির্বাদ হয়ে এসেছে জাতীর স্বপ্নের সেই মহৎ কাজটি করছে, ওরা ফেরেশ্তার কাজ করছে।
গুম-হত্যা বাহিনী এগিয়ে চল, আরও শত ইলিয়াসকে গুম কর, আমরা জিনিষটাকে বড়ই লাইক করলাম, ক্রস ফায়ারের চেয়ে বেশি। ক্রসফায়ারকে যারা সমর্থন করে তাদের চেয়ে আমাদের লজিক ও উদ্দেশ্য অনেক মহান। সুশিলরা ভন্ডামী না করে আমাদের সাথে বলুন, গুম বাহিনীরা সমাজে প্রাকৃতিক পরিষ্কারক হিসাবে কাজ করছে। আমরা সেদিন সবচেয়ে খুশি হবো যেদিন শুনবো আমেরিকায় বা যুক্তরাষ্ট্রে কেউ গুম হবে। ক্রসফায়ারের খবর শুনে খারাপ লাগলেও কেন যেন ইলিয়াস আলী কথাটা শুনে মন খারাপ হয়নি।
নিজে যা করবে তোমার পরিনতিও তাই হবে। এই দুই মহিলারও একদিন এই হবে, এদের সন্তান ও সন্তানের সন্তানকেও ভোগ করতে হবে হাজার হাজার মানুষের অভিশাপ। এদের কবরও একদিন এদেশের মানুষ এদেশের মাটিতে রাখবে না।
গুম বড় ভালো সিস্টেম, ক্রসফায়ারের চেয়েও মহৎ এর উদ্দেশ্য। তবে দূঃখের বিষয় ক্রসফারের পরদিনই সন্ত্রাসীর লাশ পাওয়া গেলেও গুমের অনেক দেরী হয়, আহ কালই যদি দেখতাম এই ঈবলিশ আলির ডেডবডি কোথাও পরে আছে।
আমরা RAB এর ক্রসফায়ার ও গুম বাহিনীর গুম করা দুইটাই সমর্থন করি। বরং গুমকে ক্রসফায়ারের চেয়ে বেশি মর্যাদার আসনে বসাই।
মূল লেখা: অপ্রকাশিত সত্য (ফেসবুক) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।