কিছু দেশ দেখার সুযোগ হয়েছে এই জীবনে। ভ্রমণ আমার ভাল লাগে্ তাই সবার মাঝে তা জানাতে চাই। সবার উপরে ভালোবাসি বাংলাদেশ । ধন্যবাদ
কুয়ালালামপুর কিংবা লংকাউই থেকে এ শহরটা একটু আলাদা, তবে অনেক অফিস আদালত, ব্যাংক আছে। হাইরাইজ বিল্ডিং এখন তৈরী হচ্ছে, মোটামুটি পরিস্কার শহর।
ভারতীয় দেখলাম বেশ। বন্দর নগরী বলে বহু ধরনের মানুষের সমাগম হয় এখানে । চার্চ ও আছে বেশ কিছু । দুপুরে সেন্ট্রাল মশজিদে নামাজের জন্য গাড়ী পাকিং করলাম মসজিদের পাকিং লটে। বিশাল কারবার , বড় মসজিদ কার্পেট পাতা সারা মাস জুড়ে।
অনেক ধর্মীয় বই রাখা আছে সব মালয়ী ভাষায় । ওযু গোসল ও টয়লেটের জন্য বিশাল এলাকা। পর্যাপ্ত পানি ও পরিচ্ছন্ন জায়গা। ওযু করে যোহরের নামাজ পড়লাম। মসজিদের পাশে এবং পেনাং শহরের আশেপাশের দৃশ্যের ছবি তুললাম ।
দ্বীপের মাঝে বেশ উচু পাহাড় সারি । পাহাড়ের উপর অনেক বাংলো বাড়ী । জর্জ টাউন একসময় ব্রিটিশদের অধীনে ছিল ।
তারা তাদের পছন্দমত পাহাড়ের আবাসগুলো সৃষ্টি করেছে । পর্যটকদের জন্য এখানে আকর্ষণ হচ্ছে হিল ট্রেনে ভ্রমন ।
ট্রেন ষ্টেশনে এলাম, পেনাং হিল সবচেয়ে পুরাতন কলোনীয়াল হিল ষ্টেশন । আঠারহ সালের দিকে এই ষ্টেশন ব্রিটিশরা তৈরী করেছিল । পেনাং এর জর্জ টাউনের কোলাহল এবং এর উষ্ণ আবহাওয়া থেকে মুক্তি পেতে পাহাড়ের চূড়ায় ব্রিটিশরা তাদের আবাসন গড়ে তুলেছিল ।
অনেকগুলো পাহাড় নিয়ে এই পেনাং হিল এবং এর সর্বোচ্চ উচ্চতা সাগর সমতল থেকে ২৭২০ ফিট । ১৯০১ সালে পেনাং হিল রেলওয়ে লাইন তৈরী শুরু হয়েছিল এবং এটা শেষ হয় ১৯০৫ সালে।
প্রথমে কাঠের বগির ট্রেন এই পথে চলত। এর রেপ্লিকা এখন দর্শকদের জন্য সাজানো আছে হিলটপে । ১৯০৯ সালে দ্বিতীয় আরেকটা লাইনের কাজ শুরু হয় এবং ১৯১৪ সালে শেষ হয়। ১লা জানুয়ারী ১৯২৪ সালে ২০০৭ মিটার লম্বা এই ফানিকুলার রেলপথ তৎকালীন গভর্ণর উদ্ভোধন করেন। ১৯৭৭ সালে এটা আপগ্রেড হয় এবং ২০১০ সালে এর ওভারহলের কাজ শেষ হয়।
বর্তমানে এটা চমৎকার একটা বিনোদনের মাধ্যম। প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য টিকেটের দাম ৩০ রিংগিত এবং য¡ক্রছ¡পষ জন্য ১৫ রিংগিত তবে মালেশিয়ান নাগরিকদের জন্য ভ্রমন খরচ অনেক কম । কিউ গিয়ে টিকিট, ঢ়য¡ষ জন্য ১০০ রিংগিত লাগলো । ষ্টেশনের চারধারে সুভেনিরের মার্কেট, খাবার ও বিক্রি হচ্ছে । মানুষ আসছে যাচ্ছে ।
সাজসাজ রব যদিও জ্যামপ্যাক না । টিকিট করে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছি । বিচিত্র ট্রেন । প্রায় ৩০ ডিগ্রী কোনাকুনি দাঁড়ানো এক সাথে লাগানো ২/৩ টা বগি, বসার ব্যবস্থা আছে ।
একটু পরে ট্রেন চলতে শুরু করল ।
খাড়া পাহাড়ের ঢাল বেয়ে দ্রুত ট্রেন উপরে উঠছে কখনো কখনো ৮০/৯০ ডিগ্রী খাড়া । পরে বুঝলাম এটা ট্রেন হলেও কেবল কারের মত মোটা লোহার রশি দিয়ে টানার ব্যবস্থা আছে এবং লাইনের উপর দিয়ে এটা চলে । উঠতে উঠতে একদম পাহাড় চূড়ায় এসে ট্রেন থামল । সুন্দর করে সাজানো চূড়া, রেলিং লাগানো, ওয়াক ওয়ে আছে । রেলিং ধরে নীচে আরো নীচে সাগর ও পেনাং শহরের ভেতরের দৃশ্য দেখা যায় ।
গোটা পাহাড় পর্যটকদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে । হেঁটে হেঁটে পাশের পাহাড়ে গেলাম, এখানে একটা হিন্দু মন্দির আছে বেশ রং বেরং এর মুর্তি । পেনাং হিল লেখা মঞ্চ থেকে ছবি তোলার ব্যবস্থা আছে । পুরানা আমলের কাঠের ট্রেনের একটা মডেল বগি দর্শকদের জন্য রাখা আছে । একটা মিনি চিড়িয়াখানা আছে ।
ফেরীওয়ালা আছে বেশ কিছু, তারা শুকনো খাবার, ড্রিংকস্, পানি বিক্রি করছে ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।