আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফেহাজতের হত্যাকান্ড নিয়ে ইকোনমিস্ট

শুভেচ্ছা বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমগুলো যদিও ঘুমন্ত হেফাজতের উপর সরকারের পৈচাশিক আক্রমনকে নানাভাবে হালাল করার কাজে ব্যস্ত, বিশ্ম মিডিয়া তখন এই ঘটনায় সরকারের সমস্যাই দেখছে। হেফাতের মূল অবস্থান থেকে বার বার শান্তিপূর্ন কর্মসূচীর কথা বলা হয়েছে। তা সত্ত্বেও অবরোধের দিনে বেশ কিছু সহিংস ঘটনা ঘটেছে যার জন্য সমস্ত হেফাজতীদের স্ক্যাপগোট বানিয়ে রাতের অন্ধকারে টিভি চ্যানেল বন্ধ করে মিডিয়া কর্মীদের সরিয়ে সরকার এই হামলা চালিয়েছে। বেশীর ভাগ দেশী সংবাদ মাধ্যমগুলো এই হামলাকে বৈধতা দিলেও বিদেশী সংবাদ মাধ্যমগুলোকে সরকার হাত করতে পারে নি। তারই অংশ হিসেবে ইকোনমিস্টের নীচের প্রতিবেদন: ============================================= বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শিল্প বিপর্যয়ে সেনারা যখন মৃতদেহের হিসাব করছেন তখন ৬ মে প্রথম প্রহরে ইসলামপন্থিদের ওপর গণহত্যার (ম্যাসাকার) বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বাণিজ্যিক এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। রোববার গভীর রাতে সরকারি বাহিনীর নৃশংস অভিযানে হেফাজতে ইসলামের বহু নেতাকর্মীকে হত্যার ঘটনা নিয়ে গতকাল অনলাইন দ্য ইকোনমিস্ট ‘বাংলাদেশ: ভায়োলেন্স অন দ্য স্ট্রিটস’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। এ হত্যাযজ্ঞে নিহতের সংখ্যা সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংখ্যার চেয়ে প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে। বাংলা সংবাদপত্র প্রথম আলোর উদ্ধৃতি দিয়ে ইকোনোমিস্ট বলেছে, দু’দিনব্যাপী হেফাজতের সাথে সংর্ঘষে বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ৪৯জন নিহত হয়েছেন। তাদের বেশির ভাগই নিহত হয়েছেন রাজধানীতে।

ঢাকার বাইরে নিরাপত্তা রক্ষাকারীরাও নিহত হয়েছেন। কিন্তু ঢাকায় যারা নিহত হয়েছেন তাদের বেশির ভাগই লক্ষাধিক প্রতিবাদীর মধ্য থেকেই। শাপলা চত্বরের গণহত্যার বর্ণনা দিয়ে ইকোনোমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ৬ই মে আসলে কি ঘটেছিল তার বিস্তারিত এখনও অস্পষ্ট। সহিংসতার গ্রাফিক ছবি ও ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ঢাকার বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিলের রাস্তায় রাস্তায় পড়ে আছে রক্তাক্ত মৃতদেহ। এ ঘটনা সরাসরি সমপ্রচার করছিল দু’টি ইসলামপন্থি টেলিভিশন চ্যানেল।

চ্যানেল দু’টি বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। এর ফলে এখন বিরোধীপন্থি একটিমাত্র টেলিভিশন চ্যানেল (বাংলাভিশন) চালু রয়েছে। এখন শহরে চার জনের বেশি জনসমাগমকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ভয়াবহ সংঘাত অন্য স্থানেও হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রাজধানীর দক্ষিণে নারায়ণগঞ্জ, দক্ষিণে বন্দর নগরী চট্টগ্রামের কাছে হাটহাজারীতে ও দক্ষিণ-পশ্চিমের বাগেরহাটে।

এতে ২০ জন নিহত হয়েছেন বলে বলা হচ্ছে। আরেকটি নৃশংস হত্যার দু’মাসের মাথায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটলো। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় হত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, নির্যাতন ও পীড়নের অভিযোগে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইসলামী দলের এক নেতাকে অভিযুক্ত করে যুদ্ধাপরাধ আদালত। এর পরেই সহিংস সংঘাতে কমপক্ষে ৬৭ জন নিহত হন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এখন নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের অ্যাকশনকে যথার্থতা দেয়ার চেষ্টা করছে।

সম্ভবত তারা ভেবে থাকবেন যে, এ রকম হত্যাকাণ্ডের ফলে ইসলামী অধিকারের দাবি তীব্র হতে পারে। ৬ই মে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, সরকারের পতন ঘটাতে ঢাকা এসেছে হেফাজত। প্রতিবেদনে আশংকা প্রকাশ করে বলা হয়, এভাবেই সামনের মাসগুলো হাঙ্গামাময় হয়ে উঠছে ক্রমশ। যুদ্ধাপরাধ আদালত ১০ জন অপরাধীর বিরুদ্ধে রায় দেয়ার পথে। কয়েকটি আপিলের রায় দেবেন।

এ বছরের মধ্যে ফাঁসি কার্যকর করার বিষয়টি তত্ত্বাবধান করছেন তারা। প্রতিবাদে বিএনপি নিয়মিত হরতাল আহ্বান করছে। আজ ও কাল এই হরতাল। এ বছর থেকে হরতালের কারণে এরই মধ্যে ৩০টি কর্মদিবস হারিয়ে গেছে। এমন দিনগুলোতে আরও রক্তপাতের আশংকা রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছের লোকজন বলছেন, আরও সহিংসতা এড়ানোর জন্য তিনি যুদ্ধাপরাধ আদালতের রায়ের একটি বা দু’টি রায় কার্যকর করার পথ বেছে নিতে পারেন। ১৯৯১ সালের পর ৬ষ্ঠ বারের মতো আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বেগম জিয়া লড়াই করবেন। এ নিয়ে পূর্বাভাস হলো অন্ধকারাচ্ছন্ন। উত্তেজনা, রাজপথে সহিংসতা ও তীব্র অস্থিতিশীলতা- এসবই সেই সংকেত দিচ্ছে। সামনের একটি বছর নিয়ে আসবে কঠিন সময়।

========================================== ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.