আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মিনার মাহমুদের মৃত্যু ‘বিষক্রিয়ায়’

নিজের সম্পর্কে লেখার কিছু নাই মিনার মাহমুদের মৃত্যু ‘বিষক্রিয়ায়’ আশির দশকের আলোচিত সাময়িকী ‘বিচিন্তা’র সম্পাদক মিনার মাহমুদের ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার মৃত্যু হয়েছে বিষক্রিয়ায়। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, “বিষক্রিয়ায় মিনার মাহমুদের মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা প্রাথমিক ধারণা করছি। ভিসেরা টেস্টের জন্য তার রক্ত, হৃদপিণ্ড, ডিএনএ ও অন্যান্য নমুনা রাখা হয়েছে। ” ঢাকা রিজেন্সি হোটেলের সপ্তমতলার একটি কক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মিনার মাহমুদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই কক্ষে প্রায় একশটি ঘুমের বড়ির খোসা পেয়েছে পুলিশ ।

সোহেল মাহমুদ জানান, মৃত্যু হতে পারে এমন কোনো আঘাতের চিহ্ন মৃতদেহে পাওয়া যায়নি। ডান হাতের বাহুতে একটি আঘাতের চিহ্ন থাকলেও এর জন্য মৃত্যু হওয়ার কারণ নেই। হোটেল কর্তৃপক্ষের ভাষ্য অনুযায়ী বুধবার সকালে ওই হোটেলে উঠেছিলেন মিনার মাহমুদ। তবে তার পাকস্থলীতে কোনো খাবার পাননি ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক। তিনি বলেন, “খাবার না থাকলেও সাদা রংয়ের তরল ছিলো, যা ওষুধের তরলও হতে পারে।

মৃত্যুর ঘণ্টা দুয়েক আগে তিনি ওই ওষুধ খেয়েছেন বলে আমার ধারণা। ” বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে কোনো এক সময় মিনার মাহমুদের মৃত্যু হয় বলে উল্লেখ করেন সহকারী অধ্যাপক সোহেল। ৫০ বছর বয়সী মিনারের জন্ম ফরিদপুর শহরে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের এই ছাত্র আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে সাপ্তাহিক ‘বিচিত্রা’য় লেখালেখির মধ্য দিয়ে শিল্প-সংস্কৃতি-সাংবাদিকতা জগতে পা রাখেন। এইচ এম এরশাদের সামরিক শাসনামলে ১৯৮৭ সালের ১০ জুন মিনারের সম্পাদনায় প্রকাশ হয় সাপ্তাহিক ‘বিচিন্তা’।

সামরিক শাসনবিরোধী লেখালেখির কারণে ৮৮ সালের জানুয়ারিতে তিনি গ্রেপ্তার হলে বন্ধ হয়ে যায় সাপ্তাহিকটির প্রকাশনা। ১৯৯০ সালে গণঅভ্যুত্থানে এরশাদ সরকারের পতন হলে ১৯৯১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি আবারো প্রকাশ হয় ‘বিচিন্তা’। তবে সে বছরই প্রকাশনা বন্ধ করে আমেরিকা চলে যান মিনার। দীর্ঘ দেড় যুগ পর ২০০৯ সালে তিনি দেশে ফেরেন। ২০১০ সালের ১০ অক্টোবর আবারো শুরু হয় ‘বিচিন্তা’র প্রকাশনা।

কিন্তু গত বছরের মার্চে মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি পূর্ণ বিশ্রামে যান। ‘বিচিন্তা’র তৃতীয় দফা প্রকাশনাও বন্ধ রয়েছে তখন থেকেই। চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে মিনার মাহমুদ ছিলেন সবার বড়। মিনারের ভাই মেহেদী হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তার ভাইয়ের মৃতদেহ হাসপাতাল থেকে প্রথমে উত্তরা চার নম্বর সেক্টরের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জানাজা শেষে সোয়া ২টার দিকে কফিন নিয়ে তারা রওনা হন ফরিদপুরের আলিপুরের উদ্দেশ্যে।

শনিবার সকাল ৯টায় সেখনে দ্বিতীয় জানাজা শেষে ঢাকায় ফিরিয়ে এনে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে মিনার মাহমুদকে দাফন করা হবে বলে জানান মেহেদী। মিনারের স্ত্রী লাজুক শুক্রবার মর্গে এলেও সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি কথা বলেননি। পুলিশ জানিয়েছে, হোটেল কক্ষ থেকে মিনারের লাশের সঙ্গে পাঁচ পৃষ্ঠার একটি চিঠিও পাওয়া গেছে, যা তিনি লিখেছেন লাজুককে উদ্দেশ্য করে। লাজুকের সঙ্গে বিয়ের আগে মিনারের দাম্পত্য কাটে নির্বাসিত লেখক তসলিমা নাসরিনের সঙ্গে। ব্যক্তিগত জীবনে নিঃসন্তান ছিলেন মিনার।

তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে কেউ সন্তানের দাবি নিয়ে এলে সুরাহার জন্য মিনারের ডিএনএ রেখে দেওয়া হয়েছে। সোর্স  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।