আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্লগার লাল চাঁন vs ব্লগার মুহিব!

(খেলা শেষে আমি আর মুহিব ভাই) ব্লগার লাল চাঁন vs ব্লগার মুহিব! না ব্লগার মুহিব এর সাথে আমার কোন ব্যক্তিগত শত্রুতা নাই বা ব্লগের ট্যাগ সংক্রান্ত অর্থাৎ ছাগু, ভাদা, পাদা, আস্তিক, নাস্তিকতা নিয়ে তার সাথে কোন ঝামেলা টামেলা বাধেনি। তবে একটা কিছুতো হয়েছেই তা হলো ব্লগার মুহিব ক্রিকেট খেলার মাঠ এবং অপজিশন খুজছিলেন আমারও পোষ্টটি চোখে পড়লো,আমিও তখন ফুরফুরা, মাত্র আমার ক্যাপ্টেনসিতে আমাদের কর্পোরেট টিম ইউনাইটে লিজিং এর সাথে জিতলো আমিও চ্যালেঞ্জ করলাম আমাদের টিমের সাথে খেলার জন্য। খেলার ভেনু আমাদেরই এক কর্মকর্তা ঠিক করে দিলেন, ভেনু- বিআরপি প্লে গ্রাউন্ড তারিখ-২৩.০৩.২০১২, সকাল ৮টা, ২০ ওভার মানে টি-২০ ক্রিকেট। এদিকে সারাদেশে চলছে এশিয়া কাপের উত্তেজনা, ভারত আর শ্রিলংকাকে হারিয়ে আমরা আনন্দের জোয়ারে ভাসছি। ২২ তারিখ ফাইনালের পরের দিন খেলা, ফাকিস্তানিদের হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হবো সারারাত আনন্দের পর সকালে খেলবো কি দারুন অনুভূতি।

মুহিব ভাইকে বললাম আমাদের খেলা নিয়ে পোষ্ট দিতেযথারিতি সেই সুন্দর পোষ্ট কিন্তু বিধিবাম আমাদের মাঠ যে জোগাড় করে দিয়েছিলো সেই কর্মকর্তা ফোনে জানালো ঐ মাঠে সমস্যা চলছে খেলা যাবে না আমি হতাশ হলাম না। খিলগাওয়ের এক ছোট ভাইকে বললাম মাঠ জোগাড় করে দিতে সে বলল ভাই মাঠ কোন ব্যাপার না খিলগাও গভমেন্ট স্কুলে ব্যবস্থা করে দেবো। আমি বললাম বাংলাদেশতো জিতবে তার পরের দিন খেলা বুড়া, গুরা,জুয়ান এমনকি বাংলাদেশের জয়ের আনন্দে পেটে থাকা বাচ্চাও মাঠে ব্যাট বল নিয়ে নেমে যাবে, তখন কি হবে? ছোট ভাই আশ্বস্ত করলো, দরকার হয় ভাই নতুন মাঠের জন্ম দিমু তারপরও খেলবেন। আমিও মুহিব ভাইকে ব্যাপারটা জানিয়ে দিলাম। মুহিব ভাই খুব টেনশন করছিলেন আর বলছিলেন ভাই খেলা হবে তো? মুহিব ভাই জানালেন খেলা দেখতে তাদের কিছু লেডি কলিগ আসবেন আমিও আমাদের লেডি কলিগদের আসতে বললাম।

২২ তারিখ সারা বাংলাদেশের মানুষ তাকিয়ে আছি ১১ জন বীরের দিকে, কত কত প্লান সারারাত আনন্দ করবো আরো কত কি! রাতে খেলা দেখার সময় উত্তেজনায় ১৫-২০ বার হিসু দিতে টয়লেটে, উরি বাব্বা পুরাই ডায়বেটিস এর রোগী হইয়া গেলাম, আমার কিনা চৌদ্দ গুষ্টিতে ডায়বেটিস নাই!অবশেষে লড়াই করে বীরের মতো হার! বিছানায় শায়িত আমি হাত, পা কাপছে চোখের কোনে পানি জমছে, বউ এসে শান্তনা দিচ্ছে, চোখের পানি মুছে দিচ্ছে, আমাকে হাত ধরে টেনে উঠানোর নিরন্তর চেষ্টা কিন্তু একি আমি উঠতে পারছি না! স্যালাইন বানিয়ে খাওয়ালো তারপর কিছুটা সুস্থ হলাম, নাহ্ আমাকে সুস্থ থাকতে হবে কাল সকালে যে খেলা! সকাল ৬টায় মাঠে উপস্থিত। আমাদের দলের তিনজনই বাংলাদেশ হারায় রাতে ঘুমাতে পারেনি, তারা অসুস্থ আসতে পারবে না ম্যাসেজ দিলো, আমারতো মাথায় হাত। মুহিব ভাই মাঠে আসলেন পরিচয় হলো এই প্রথম কোন ব্লগারের সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ, বেশ পুলকিত হলাম। উনি অত্যন্ত নম্র এবং ভদ্রলোক মনে হলো। মুহিব ভাইয়ের দল ম্যাভরিকস্ এর টিমে বেশ ইয়ং প্লেয়ারে ভর্তি (মুহিব ভাই ও আর একজন ছাড়া), কিছুটা ভড়কে গিয়েছিলাম তবে মনোবল হারাইনি।

আর আমাদের দলে সেই গতবারের মতো ভুরিওয়ালারা (পাভেল আর আদনান ছাড়া) । গতবারের মতো এবারো টসে হারলাম এবং ব্যাটিং পেলাম। ২০ ওভারে আমাদের দল মেট্রোসেম কর্পোরেট টিম করলো ২১৫/৮। গত ম্যাচের হাফ সেঞ্চুরিয়ান পাভেল এবার করলো ১০৬! আর আমি গত ম্যাচে ১১ ওভার ক্রিজে টিকে ১১ করেছিলাম এবং ব্যপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলাম, ম্যাচ জিতেছিলাম বলে হয়তো যুক্তি দেখাতে পেরেছিলাম। এবারও সেই ১১তেই আটকে গেলাম কট হলাম ব্লগার মুহিব ভাইয়ের কাছেই।

টার্গেট নিয়ে ভালোই খেলছিলো মুহিব ভাইয়ের টিম ম্যাভরিকস্ কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি ১৮৯/৮ ই ২০ ওভারের খেলা শেষ হয়ে যায়। দ্বিতীয় বারের মতো আমি দলকে চ্যাম্পিয়ন করি। গতকাল দিনটা ভালোই গেলো না হয় হয়তো আগের দিনের কষ্টটা দিনভর উকি দিতো। আসুন খেলার কিছু ছবি দেখি : (ম্যান অব দ্যা ম্যাচ পাভেল, ১০৬ রান ২ উইকেট, পুরস্কার নিচ্ছেন ম্যাভরিকস্ এর ম্যানেজার সাপ্লাই চেইন এর কর্মকর্তার হাত হতে) (চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নিচ্ছি আমি, মোঃ হাফিজুর রহমান, রিপন প্রধান অতিথি মেট্রোসেম গ্রুপের ডিজিএম এর হাত হতে) (ট্রফি নিয়ে ফটোসেশনে অন্যান্য খেলোয়ারবৃন্দ) (ট্রফি হাতে আমি ও উইকেট কিপার শওকত) (মুহিব ভাইদের টিমের একাংশ, কিছুটা বিষন্ন মনে হলো) (স্যার ঝারছেন! বাবা ২১৫ করেও হারতে বসেছিলে কি অধিনায়কত্ব করো?) (আজ সকালে ট্রফি তুলে দিচ্ছি পরিচালক মহোদয়ের হাতে, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সহ অন্যানরাও ছিলেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহোদয় আজকে রেস্টুরেন্টে বিজয়ী দলকে খাওয়ানোর ঘোষনা দিয়েছেন এবং পাভেলকে বিশেষ পুরুস্কার দিবেন বলেছেন! আমি কি তাহলে ধৈঞ্চা? কিছুই পাইলাম না) উৎসর্গ: ব্লগার মুহিব ভাই  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.