হিমুর সাথে……….
১.
এসো, বোসো। । তারপর তোমার নাম কি যেন?
হিমু
ও..
আমি মোটামুটি একটু বিশ্বিত হলাম। কারন, স্বাভাবিক ভাবে কাউকে ‘হিমু’ নামটা বললে তারা বিশ্বিত হয়। আজ এই ধারার ব্যাতিল্রম হল বলে আমিই বিশ্বিত।
যার সাথে দেখা করতে এসেছি তিনি হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তণ রসায়ন এর অধ্যক্ষ ড. আতিয়ার রহমান। রূপা এর দুঃসম্পরকের চাচা। এ হিসেবে তিনি আমার চাচা হন। আমি একটু confusion এ আছি চাচা ডাকব নাকি স্যার।
‘বুইছ’ আমি দীর্ঘ ১৮ বছর শিক্ষকতা করেছি।
‘বুইছ’ এর ভেতর আমি একদিনও দেরি করে ক্লাস এ যাই নাই। ‘বুইছ’ এমনও অনেক দিন আছে, যেদিন ভার্সিটি বন্ধ থাকলেও আমি ভার্সিটি চলে গেছি। হে হে হে….. ‘বুইছ’………….
বুইলাম যে উনি ‘বুইছ’ শব্দটাকে মুদ্রাদোষ হিসেবে বেশ ভাল ভাবেই গ্রহণ করে নিয়াছেন। একটা ঘড়ি থাকলে ভাল হত, হিসাব করা যেত উনি মিনিটে কয়বার ‘বুইছ’ বলছেন। কিন্তু আমি তো মহাপুরুষ, আমার কাছে সময় এর হিসেব করা ঠিক নয়।
কথাও যেন শুনেছিলাম যে কোন লোক যদি ১২ বছর শিক্ষকতা করেণ তাহলে আদালতে তার স্বাক্ষ্য নেয়া হয় না। মনে হচ্ছে কথাটা ভুল না। উনি নিজে নিজেই কথা বলে যাচ্ছেন। উনি এই বিষয়টা খেয়ালি করেন নাই যে, আমি তার বাসায় এসেছি আমার কোন প্রয়্জনে। উনাকে একটু ভড়কে দেই।
শিক্ষকদের ভড়কানো সহজ।
আচ্ছা, স্যার আপনি তো রসায়ন এ পি. এইস. ডি. করেছেন, তাই না?
উনি গর্বের সুরে বললেন, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে।
তাহলে, বলেন তো ‘রসায়ন’ কাকে বলে?
যারা অনেক বেশি ঞ্জানী তাদের ঞ্জান বেশীর ভাগ সময় বড় বিষয় এ সীমাবধ্য। উনার ক্ষেত্রেও ব্যাতিক্রম হল না। কিন্তু উনি বেশ দ্রুত সামলে নিলেন।
তোমার নামটা যেন কি বললে? হিমু?
বলো, কি কারনে এসেছ?
আমাকে রূপা পাঠিয়েছে, আপনার সাথে ওর একটা বিষয় নিয়া আলোচনা করার আছে, সিলিকন ভিত্তিক জৈব যৌগ নিয়ে। আপনি একটু সময় করে ওদের বাসায় গেলে ভাল হত। এক নিঃশ্বাসে এই কথাগুলো বলে ফেললাম।
হঠাত করে ওনার মুখ উজ্জ্বল হঅয়ে উঠল।
বুইছ, sillicon based organic chemistry ছিল PHD thesis এর বিষয়।
ওনার ‘বুইছ’ টা আবার শুরু হওয়ায় বুজলাম উনি আবার স্বাভাবিক হয়ে গেছেন। তার অর্থ হল এখনি আবার ওনার লেকচার শুরু হবে। কিন্তু মহাপুরুষেরা লেকচার শুনে না, লেকচার দেয়। অতএব আমার উঠে যাওয়াই উচিত।
স্যার, আমি এখন উঠি।
উঠবে? ঠিক আছে। যাও। মা, অর্পা হিমুকে একটু এগিয়ে দিয়ে আয় তো।
না না ঠিক আছে আমি একাই চলে যেতে পারব। ওনার কষ্ট করে আসতে হবে না।
না বাবা বাইরে একটা বিদেশী কুকুর আছে। বুইছ, এলছেসিয়ান কুকুর। অচেনা কাউকে দেখলেই তাড়া করে। বুইছ, যখন তুমি এসেছিলে তখন জেরী প্রাতঃ ভ্রমনে বের হয়েছিল। বুইছ…
বাবা, তোমাকে না ডাক্তার বেশি কথা বলতে নিষেধ করেছে।
তারপরেও তুমি…
মা, আমার সারা জীবনই কেটে গেছে কথা বলে। বুইছ…
থাক তোমার আর কথা বলতে হবে না। আমি ওনাকে গেট পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসছি।
অর্পাকে দেখে মনে হয়, আনার্স 2nd year এ পড়ে। কিন্তু এখনকার মেয়েদের দেখে বয়স অনুমান করার উপায় নাই।
ছুড়িদের দেখায় বুড়ি আর বুড়িদের দেখায় ছুড়ি। খুবই confusing. আমি এই confusion উপভোগ করছি।
ঘরের বাইরে বের হয়ে অর্পা আমাকে বলল, রূপা আপু আপনার কি হয়?
একটু ভড়কে দেই। মহাপুরুষ পদে যখন যোগদান করেছি তখন দায়িত্ব বলেও তো কিছু আছে।
ও আমার G.F.
অসম্ভব! আপু আপনার Girl Friend হতেই পারে না।
অর্পার চোখে বিশ্বয় আর রাগ একসাথে ফুটে উঠল। রাগের ভাবটাই বেশী। রাগলে মানুষকে ভাল দেখায় না। কিন্তু অর্পাকে আপূর্ব লাগছে। তাই আর একটু রাগাতে ইচ্ছা হল।
আমি বলেছি ও আমার G.F. এর অর্থ তো Good Friend ও হতে পারে। আসলে তুমি মনে মনে আমাকে ওর B.F. type এরই কিছু ভাবছিলে।
অর্পা, কটমট করে একটু তাকিয়া থেকে বলল, আপনি এখন আসতে পারেন।
হঠাত আবহাওয়া খুব শান্ত হয়ে যাওয়া ভাল লক্ষণ না। মানে মানে কেটে পরাই উত্তম।
অর্পা, B.F.এর পুর্ণরুপ কিন্তু Best Friend ও হয়। এই বলেই আমি পাগার পার।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।