আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হিমুর ঢং



হলো কি,মাথার মধ্যে হঠাৎ হিমুর ভুত চেপে বসেছে। হিমুর ভুত মাথায় বসলে সাধারন যা করি, হলুদ একটা পান্জাবী গায়ে দিয়ে উলংগ পায়ে পথে বেরিয়ে পড়ি। আজকে তার ব্যাতিক্রম হয়নি। বেরিয়ে পড়লাম হিমুর সাজে।

'এই নিশি,এই! কোথায় যাচ্ছিস তুই? একি তোর পায়ে জুতো কই?'
মাজেদা খালা দেখি আমাকে দেখে ফেলেছেন! এই মহিলাটাকে যথা সম্ভব আমি এড়িয়ে চলি।

কোন কাজে হাত দিলেই এই মাজেদা খালা কাকতালীয় ভাবে বাধা হয়ে দাড়ান। উনি যখন বাধা হয়ে দাড়ান,সেটা উনি তখন নিজেই বুঝতেই পারেননা। উনি মনে করেন উনি ঠিক কাজটি করতেছেন। আজকেও বাধা হয়ে দাড়ালেন উনি।

'কিরে কথা কানে ঢুকেনা তোর! কোথায় যাচ্ছিস তুই? একি তোর পায়ের জুতো কই?'
'ইয়ে মানে খালা, নামাজ পড়তে গিয়েছিলামতো! জুতাটা মসজিদে চুরি হয়ে গেছে!'
'একটা থাপ্পড় খাবি তুই! খালি মিছা কথা কছ! জীবনে কি কোনদিন নামাজ পড়ছিলি তুই? আবার কছ, মসজিদে গেছিলি! আয় রিক্সাতে ওঠ।

আয়!'
আমি আর রিক্সাতে উঠলামনা। উল্টে পথে হাটা দিলাম। এদিকে মাজেদা খালা পিছন থেকে আমাকে ডেকেই চলেছেন। 'এই নিশি,এই!' আমি সাড়া দিলামনা। দ্রুত পায়ে সামনের দিকে চলতে থাকলাম।

আজকে দিনের জন্য আমার নাম নিশি না। আমার নাম হিমু। হিমু বাদে কেউ আমাকে অন্য নামে ডাকলে সাড়া পাবেনা।

খুব গরম পড়েছে আজকে। প্রচন্ড রৌদ্র বাহিরে।

রৌদ্রের কারনে খালি পায়ে হাটতেই পারছিনা। পাটা পুড়ে যাচ্ছে। হিমু এই প্রখর রৌদ্রে বাহিরে যে কিভাবেই খালি পায়ে হাটতো সেটা মাথায় ধরতেছেনা। মিসির আলী হয়্তো বলতে পারবেন। নাকি হিমুর জীবনে রৌদ্র বলতে কিছু ছিলোনা কোনটা? তাকে নিয়ে যত গল্প পড়েছি, বেশীর ভাগ হয় চমৎকার দুপুরকে ঘিরে নয় জোসনা রাতকে নিয়ে।

কি করবো বুঝতেছিনা। রৌদ্রের তাপটা সহ্য করতে পারতেছিনা।

গুরুজী বেচে থাকলে এতক্ষন মনে হয় এই কবিতাটি লিখে ফেলতেন,

"প্রচন্ড গরম শহর জুড়ে
ন্যাংটো পাখানি যাচ্ছে পুড়ে
কি করিগো পারছিনা যেতে উড়ে"

আসলে মাজেদা খালার সাথে রিক্সায় করে চলে যাওয়া উচিৎ চিলো। এই মহিলাটাকে যতটা খারাপ ভাবি,উনি আসলে ততটা খারাপ না।

নামাজ শেষে লোকটা যখন গেটের সামনে তার জুতো খুজে পাবেনা, তখন কি প্রতিক্রিয়া হবে।

আপাতত সেটা না ভাবলেই চলবে। আগে নিরাপদে বাসায় পৌছি। তারপরেরটা দেখা যাবে। সেই সকাল থেকে কিছুই খাই নাই। তার ওপর এই গরমের বাহিরে থাকতে থাকতে কয়্লা হয়ে যাবার উপক্রম।


এখন যদি দ্রুত বাসায় না পৌছি ই..…।

স্যারী হিমুর কারিগর,
আর পারছিনা নাটক করতে। তুমি হিমুকে যেভাবে গড়ে গিয়েছিলে। আমরা তার ছিটেফোটাও করতে পারিনি। মাঝে মধ্যে হিমুর মত ঢং করি।

তার মত হতে চেষ্টা করি। কিন্তু পারিনা। নিজেকে ভাড় মনে হয়। হিমু আছে বইয়ের পাতায়। গল্পের খাতায়।

অগোছালো কল্পনায়। বাস্তব জীবনে তার রুপ মেলানোটাই ভার। দুস্কর। সেতো চলে গেছে তোমার সাথে। না ফেরার দেশে।

তার তুলনায় তো তুমি নিজেই! রয়ে আছ অন্তরে।

পৃথিবীর ওপারেই বসে
থেকো তুমি সুখের সাথে

হেসো প্রতিদিন প্রতিক্ষন

সুন্দর হোক তোমার নির্জন জীবন…

শুভ কামনা রইলো তোমার জন্য হে নুহাশ পল্লীর কারিগর!



কেউ হয়তো বলতে পারে,কি ব্যাপার এই শীতের দিনে গরমের রৌদ্র এল কোথায়। সেটা না হয় অপ্রকাশিতই থাক।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।