আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফোটোগ্রাফি -৪

আসসালামুয়ালাইকুম, আগে বলে রাখি- আমি কোন ফটোগ্রাফার নই । তবে একজন ভালো আলোকচিত্রী হওয়ার তীব্র ইচ্ছা পোষন করি । ১৮৬১ সালে রয়্যাল ইনস্টিটিউশনের একটি লেকচারের সময় স্কটিশ পদার্থবিদ জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল তিনটি প্রধান রঙ্গের সন্নিবেশ আর বিভাজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রঙ্গীন ছবি তোলার জন্য তার তত্ত্বটি আবিষ্কারের ঘোষনা দেন । সেই সময় থেকেই যে মুলনীতি পরবর্তীকালে প্রায় সব ধরনের ফটোকেমিক্যাল আর ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে রঙ্গীন ছবি তোলার মুল ভিত্তিতে পরিনত হয় । এই আবিষ্কারের ১৫০ বছর পুর্তিতে গত ২৭ শে মে নিউ সায়েন্টিষ্ট পত্রিকা তাদের ওয়েবসাইটে যে সব অসাধারন বিজ্ঞানী আর গবেষকদের প্রচেষ্টার কারনে রঙ্গিন ফটোগ্রাফী সম্ভব হয়েছে, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি স্লাইড শো প্রকাশ করে ।

তরুণেরা ছবি তুলতে আগ্রহী হচ্ছেন এখন । ফটোগ্রাফি শেখার জন্য আলাদা কোনো যোগ্যতার দরকার নেই। তবে দরকার হলো আগ্রহ । ফটোগ্রাফি একটি বড় আকারের শিল্প যা শুধু ক্যামেরা ক্লিক করে করে ফটো তুলে বেড়াইলে হবে না । এটা চর্চা ও সাধনার বিষয় ।

সহজ ভাষায় খুব কাছে থেকে ছবি তোলাকে বলে ম্যাক্রো ফটোগ্রাফী । ছবিগুলো সাধারনত : ছবির বিষয়ের সমান হয় । দ্রুতগতি ফটোগ্রাফী বা হাই স্পীড ফটোগ্রাফী দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে । মনে হয়তো প্রশ্ন জাগতে পারে যে, এটি আবার কোন ধরনের ফটোগ্রাফী ? হাই স্পীড ফটোগ্রাফী হচ্ছে খুব দ্রুত ঘটে যাওয়া কোন কিছুকে ফ্রেমে বন্দি করা । বর্তমান সময়ে প্রায় সকলের হাতে হাতেই আছে ক্যামেরা মোবাইল ।

হোক তা চাইনিজ বা হোক কোয়ালিটির, ক্যামেরা মোবাইল বলে কথা । অনেকেরই ধারণা যে মোবাইলের ক্যামেরা দিয়ে ভালো ছবি তোলা সম্ভব না, কিন্তু আসলে ধারণাটি ভুল । ছবি তুলতে হলে যে শুধু ৮-১০ মেগাপিক্সেল ক্যমেরা লাগবে এই ধারণাটিও ভুল । মোটামুটি ৩ মেগাপিক্সেল ক্যামেরাই যথেষ্ট আমাদের প্রাত্যহিক ব্যবহারের জন্য, কারণ আমরাতো আর সাংবাদিক না ! তবে যারা সাংবাদিক তাদের কথা আলাদা । ছবি তোলার সময় অবশ্যই ক্যামেরাটিকে (বা ক্যামেরা মোবাইলটিকে) ভালো করে ধরতে হবে যাতে ছবি ব্লারি বা ঘোলা না অঠে, আর এজন্য মোবাইলকে নাড়াচাড়া করানো যাবেনা।

ভালো করে ধরে ছবি তুলতে হবে । আর নিজের নড়াচড়ার দিকেও খেয়াল রাখতে হবে । বিষয় নির্বাচন ছবি তোলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আপনার ছবি তোলার বিষয় বস্তু ভালো হতে হবে । নিজেই নিজের ছবি তোলা ভালো বিষয় বস্তু না ।

চেষ্টা করবেন প্রকৃ্তির ছবি তুলতে বা বৈচিত্রময় কিছুর ছবি তুলতে, এতে ছবি তোলার প্রতি আপনার আগ্রহ বাড়বে এবং একই সাথে ছবি তুলে মজাও পাবেন আপনি । নিজের ছবি যদি তুলতে চান তবে নিজে না তুলে অন্য কাউকে দিয়ে তোলান, যদি সম্ভব না হয় তবে সতর্কতার সাথে নিজেই তুলুন । কোন বিষয়ের শুধু একটি ছবি না তুলে একাধিক ছবি তুলুন, এতে ভালো শট পাবার সম্ভাবনা থাকে । আমরা বেশিরভাগ লোকজনই ঠিক বুঝে উঠতে পারিনা আসলে ফটোগ্রাফির মূল উদ্দেশ্যটা কী ? কিন্তু একটু খেয়াল করলেই দেখতে পারবেন এটা নির্ভর করে ঐ ছবির বাস্তব ব্যাবহার ও উপস্থাপনার উপর । কেউ যদি একটা ট্রু ফ্যাক্টকে সবার সামনে অবিকৃত অবস্থায় নিয়ে আসতে চায় সেটার আবেদন ও উপস্থাপন এক জিনিশ এবং কেউ যদি কোনো ল্যান্ডস্ক্যাপ, পোর্টেট বা লাইফস্টাইলের মাধ্যমে বা স্যুরিয়েল লং এক্সপোজারের মাধ্যমে তার নিজস্ব ধারনা তুলে ধরতে চায় সেটার আবেদন ও উপস্থাপন আবার ভিন্ন জিনিশ ।

এছাড়াও এদের ব্যাবহারিক দিকটিও কিন্তু ভিন্ ন। কিন্তু আমরা কী করি ? একটা ছবিকে জাজম্যান্ট করার সময়, সেটা যে ছবিই হোক না কেনো, তার জার্নালিস্টিক এটিচ্যুডকে প্রাধান্য দেই । অর্থাৎ ছবিটা কতখানি 'রিয়েল' বা 'আন-এডিটেড' সেই দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দেই । কিন্তু একবার, শুধু একবার, নিতান্ত খালি চোখে দেখলেই বোঝা যায় ছবিটা আসলেই কী উদ্দেশ্যে করা - এটা কী শুধুই কোনো সত্যকে উপস্থাপন করছে না কী কোনো ডিফরেন্ট থট নিয়ে আসছে সামনে । সত্যি বলতে আমরা 'এডিটিং কুসংস্কারে' আক্রান্ত এবং এখান থেকে বেরিয়ে এসে যে কোনো ছবিকে দেখতে হবে ।

তাহলে হয়তো ভিন্ন ভিউ পয়েন্ট থেকে একটা ছবিকে জাজম্যান্ট করার একটা প্রচেষ্টা আমরা নিতে পারবো । ( একদিকে অগনিত মানুষ দুমুঠো ডাল-ভাতের জন্য, গায়ে সামান্য দুটুকরো কাপড় জড়ানোর জন্য, ছোট একটা কুড়ে ঘরে মাথা গোজার ঠাইয়ের জন্য জীবিকার আশায় হন্যে হয়ে জলে-স্থলে ছুটে বেড়ায়, কঠোর পরিশ্রম করে মাথার ঘাম মাটিতে ফেলে; আবার অন্য দিকে কিছু মানুষ লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে নিতান্তই শখ পুরনের জন্য যন্ত্রপাতি কিনে জলে-স্থলে ঘুরে বেড়ায় পানির নিচের ছবি তোলার জন্য, মানুষকে তাক লাগিয়ে দেওয়ার জন্য । তাদের টাকাগুলো মনে হয় অতিরিক্ত হয়ে গিয়েছে । কি বিচিত্র এই দুনিয়া !!! এই দুনিয়ার মানুষগুলো !!!) ( চলবে ) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।