আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফোটোগ্রাফি -৩

সবার আগে ক্যামেরা ধরার নিয়মটা শিখুন । অনেকেই হয়ত মনে মনে ভাবছেন 'ক্যামেরা ধরা'য় আবার শেখার কী আছে ? আমিও প্রথমে এমনই ভেবেছি কিন্তু পরে বুঝলাম এটাই বেজ, ক্যামেরা কাপা-কাপি রোধ করা গেলে অনেক সহজেই ভাল লাগা মূহূর্তগুলকে সুন্দর ভাবে ফ্রেম বন্ধি করা যায় । ফোটোগ্রাফী'র ওয়েব সাইট গুলো খুব মন দিয়ে দেখুন, পড়ুন । আমি বাঙালী, আমি বাংলাদেশী, আমি দক্ষিণ এশীয়.... কিন্তু সবার উপরে আমি একজন মানুষ... এটিই আমার পরিচয় । ক্যামেরা কিনে ছবি তুলতে শুরু করেন ।

শিখে যাবেন । বই পড়ে কেউ সাইকেল চালাতে শিখে না । বড় জোর ট্রাফিক নিয়ম শিখে । ফটোগ্রাফিই যদি করতে চান তাহলে: ৩.১. ম্যানুয়াল সেটিং আছে এরকম ক্যামেরা কিনেন । ৩.২. ১০+ অপটিক্যাল জুম সহ কিনবেন ।

৩.৩. অবশ্যই ডিজিটাল ক্যামেরা কিনবেন । ফ্রেমিং এবং টাইমিং এর ব্যাপারে যত্নশীল হবেন । ফ্রেমিং হচ্ছে অবজেক্টটা আপনি কিভাবে ফ্রেমের মধ্যে আনছেন । সবসময় যে অবজেক্ট মাঝখানে হতে হবে এমন কোন কথা নেই । বরং ছবিটা কিভাবে তুললে দেখতে সুন্দর হবে সে ব্যাপারে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন ।

টাইমিং হচ্ছে আপনি ছবিটা ঠিক সময়ে ফ্রেমবন্দি করতে পারলেন কিনা । মাত্র এক মিলিসেকেন্ড এদিক-ওদিক হলেই আপনি খুব সুন্দর একটা শট হারাতে পারেন । কাজেই চলন্ত কিছুর ছবি তোলার সময় বা চলন্ত অবস্থায়( বাস, ট্রেন ইত্যাদি ) ছবি তোলার সময় আপনার মস্তিষ্ককে ছোটখাট একটা ডুয়াল কোরের সমগতিতে কাজ করাতে হবে... যাতে সঠিক সময়ে ফ্রেমিং ঠিক রেখে সঠিক শটটি নিতে পারেন । ছবি তোলার ক্ষেত্রে আরো দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে লাইটিং কন্ডিশন এবং শাটার স্পিড । সঠিক সময়ে সটিক অপশনগুলো বাছাই করলে ভাল শট নেয়া সম্ভব ।

যেমন আপনি সকালে একরকম আলো পাবেন, বিকালে পাবেন অন্যরকম আলো । আবার রাতে খুবই কম আলো পাবেন । বেশি আলোতে ছবি তোলার সময় ফ্ল্যাশ বন্ধ করে অটো শাটার স্পিড সিলেক্ট করুন আর কম আলোতে ছবি তোলার সময় কাছের বস্তুর ক্ষেত্রে ফ্ল্যাশ চালু রেখে অটো শাটার স্পিড রাখুন এবং দূরের বস্তুর ক্ষেত্রে ফ্ল্যাশ বন্ধ রেখে ম্যানুয়াল শাটার স্পিড নির্বাচন করুন ১-১৫ সেকেন্ড পর্যন্ত । এত কম শাটার স্পিডে খালি হাতে ক্যামেরা স্থির রাখা সম্ভব নয় । কাজেই এক্ষেত্রে ট্রাইপড বা অবজেক্টের সাথে সমান্তরাল কিছুর ওপর ক্যামেরা রেখে ছবি তুলুন ।

আবার ধরুন আপনি দ্রুতগতির কোন বাস বা ট্রেনে করে চারপাশের ছবি তুলতে তুলতে যাচ্ছেন । এক্ষেত্রে পর্যাপ্ত আলো এবং দ্রুত শাটার স্পিড অত্যন্ত জরুরী । শাটার স্পিড বেশি না থাকলে এবং আলো কম থাকলে ছবি স্পষ্ট আসবে না। সাদা কালো ছবিতে রং নিয়ন্ত্রন করা রঙ্গিন ছবির তুলনায় অনেক সহজ । একজন দক্ষ ফোটোগ্রাফার ক্যামেরার মাধ্যমে হোক আর ফোটোশপের কারিগরি ব্যবহার করেই হোক, রং নিয়ন্ত্রন করে একটি অসাধারণ ছবি বের করে নিয়ে আসতে পারেন ।

রং এর আধিক্য না থাকার কারণে বিষয়-বস্তুকে মনোযোগের কেন্দ্রে আনা তুলনামুলক সহজ। এ বিগিনার্স গাইড টু ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট ফোটোগ্রাফি বইটিতে সাদাকালো ফোটোগ্রাফি বিষয়ে অনেক কিছু আলোচনা করা হয়েছে । আশা করছি আগ্রহী কেউ এটা থেকে কিছু ট্রিকস জেনে কিছু এক্সপেরিমেন্ট করবেন। ফ্রেমিং সম্পর্কে বর্তমানে আপনার নুন্যতম আইডিয়া না থাকলেও কোন সমস্যা নেই( আমার ছিল না) । কারন এইটা পুরোপুরিই প্রাক্টিসের বিষয় ।

আপনি কিভাবে অর্থাৎ কোন এঙ্গেলে ছবিটা তুলবেন সেটা নির্ভর করছে ফ্রেমিং এর উপর। আসলে, আপনি চোখে যতটুকু দেখছেন তার পুরোটুকু তো আর তুলতে পারবেন না । যতটুকুর ছবি তুলতে চান ততটুকুকে ফ্রেমে নিয়ে আসাই হচ্ছে ফ্রেমিং । এই তো হল সংজ্ঞা, আসলে ফ্রেমিং কি সেটা আমরা সবাই ই জানি । যেটা জানা দরকার সেটা হল কিভাবে এই ফ্রেমিং আইডিয়াটা কে ডেভলাপ করা যায়।

কবিতা লিখলেই কবি না আর ছবি তুললেই ফটোগ্রাফার না । তাহলে স্টুডিওর ক্যামেরাম্যানরাই হতো সবচেয়ে বড় ফটোগ্রাফার । আজকাল দু্‌ই হাজার টাকার মোবাইলে ক্যামেরা থাকে। তারাও ছবি তুলে । কিন্তু ফটোগ্রাফী সর্ম্পুন আলাদা একটি একাডেমিক বিদ্যা ।

আমাদের দেশে ফটোগ্রাফারের সংখ্যা খুবই কম। হাতে গোনা কয়েকজন । বিশ্বের অনেক দেশ আছে যেখানে ফটোগ্রাফিকে পেশা হিসেবে নিয়েছে অনেকেই । ডাক্তারী পড়াশোনায় যত জন র্ভতি হয় সবাই ডাক্তার হয়না । হিসেব করলে দেখা যাবে তার দশ ভাগের এক ভাগ ফটোগ্রাফীতে র্ভতি হয়না ।

আর পেশা হিসেবে ফটোগ্রাফী নাই বললেই চলে। মানুষের প্রতিভা ভিন্ন মুখী । সবাই একরম হয়না । একেক জন একেক পেশায় নিজের পতিভা তুলে ধরতে পারে । আমাদের উচিত মানুষের সৃজন শীল প্রতিভাকে মুল্যায়ন করা।

উৎসাহ দেয়া । ( চলবে ) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।