যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই
আমরা মানুষ, মেশিন নই; ইচ্ছা হলেই মুখ বন্ধ করে দিবেন। বিভিন্ন রুল জারী করবেন আর ভাববেন চুড়ান্ত হুমকি দিয়েছি। ইতিহাস বলে ভয় দেখিয়ে সাময়িকভাবে হয়তো কিছু মানুষ চুপ হয়ে যাবে। তাবলে কিছু মানুষ কিন্তু ১০০ % জনগণ নয়। উচ্চ শ্রেনীর কিছু মানুষ যদি ১৬ কোটি মানুষের মতবাদ পাল্টে দিতে পারতো তাহলে বাংলাদেশে এতগুলো রাজনৈতিক দল থাকতো না।
উচ্চ শ্রেনীর কিছু মানুষকে গান শুনিয়ে আর ফুচকা খাইয়ে হয়তো সাময়িকভাবে জ্বি ম্যাডাম ! জ্বি ম্যাডাম ডাকটি শোনা যায়। কিন্তু গল্পের শেষে সেই বা্চ্চা ছেলেটির মতো বলে দিবে রাজা মশায়, আপনার গায়ে তো কোনো পোশাক নেই। ঠিক মেঘের মতো করে।
সাগর-রুনি হত্যার পর, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন সমবেদনা প্রকাশ করতে এবং মেঘের দ্বায়িত্ব নিতে মেঘকে ডেকেছিলেন। মেঘ বলেছিল, আপনার পিছনে যে ছবিটা (বঙ্গবন্ধুর) টানানো, সেটি দেখতে ভুতের মতো লাগে।
ওর ভয় করে। সেদিন তো, মেঘের মুখ চেপে ধরতে পারেননি। বরং বলেছেন ছবিটা আপনি সরিয়ে ফেলবেন। যে কোনো চাটুকারকে যখন জিজ্ঞাসা করবেন, সে কিন্তু বলবে চমৎকার ছবি, এর উপরে কোন ছবিই হয়না।
কথায় আছে ''ঝি''কে মেরে বউকে শিখাতে হয়।
কিন্তু আমাদের দেশের নিয়ম যেন উল্টো পথে চলে। যতদূর মনে পরে, সরকারী দলীয় কোন এক মন্ত্রী / এমপি মন্তব্য করেছিলেন সাগর-রুনি হত্যার পিছনে জামাতে ইসলামের হাত আছে। তখনতো বিচার বিভাগ কোনো রুল জারি করেন নি। রুল জারি করলেন কখন? যখন বিরোধী দলীয় নেত্রী বললেন, সরকারী দলের কোন মন্ত্রী এর সঙ্গে জড়িত।
বিচার বিভাগের এই রুলের পর, সাপও মরলো লাঠিও ভাঙ্গলো না।
এখন আর কেউ গলা খুলে কথা বলতে পারবেনা। গুজব ছড়াবে না জনগণ বা কোন মিডিয়া অথবা সংবাদ মাধ্যম। এখন প্রশ্ন হলো, সরকারের কোন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এবং জনৈক মিডিয়া ব্যবসায়ীর নামে, এমন গুজব উঠলো কোন ভিত্তিতে তা কি খতিয়ে দেখা হয়েছে?
১৪-২-২০১২-র প্রথম আলোর তথ্য মতে, ৭৬ শতাংশ মামলার ক্ষেত্রে আসামির বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। অর্থাৎ ৭৬ শতাংশ মামলার আসামি খালাস পায়। তাহলে দেশের ভবিষ্যত কোনদিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
বিচার বিভাগ কেন এই ব্যাপারে কোন রুল জারি করে না। আমরা কি রাত যত গভীর হবে সব ভুলে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়বো।
দিন যাচ্ছে আর খবরের পাতা থেকে মুছে যাচ্ছে সাগর-রুনি। ৪৮ ঘন্টার সময় পেরিয়ে কত সময় যে গড়িয়ে গেল এবং যাবে হিসাব করে বলা যাচ্ছে না। মৃত্যুর কারণ এখনো খুঁজে পাচ্ছেনা পুলিশ।
এভাবে একের পর এক হত্যা হবে। কিন্তু বিচার হবেনা। তদন্ত চলতে থাকবে অনন্তকাল যাবৎ। এক সময় ধুলা পড়ে যাবে স্মৃতির পাতায়।
আমাদের মনে রাখতে হবে, ছোট মেঘ একদিন বড় হবে।
প্রশ্ন করবে, আমার বাবা-মায়ের খুনীকে ধরা হলো না কেন? বিচার হলো না কেন? মেঘ কিন্তু একা নয়। শতদল মেঘ এখন এক হয়েছে। জবাব দেয় তারা বি.এস.এফের অত্যাচারের। ৩৫% ভোট এখন তরুণদের হাতে।
আশার কথা হলো জনগণ, সাংবাদিক আর মিডিয়ার মুখ বন্ধ করা মাননীয় বিচারপতি এত সহজ নয়।
সহজ কথা সহজ করে যায় না বলা। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিবাদ করছে মানুষ। এই প্রতিবাদ হেলায় উড়িয়ে দেবার মতো নয়।
দাবানল জ্বলে উঠলে পুড়িয়ে ছারখার করে সবকিছু। পুড়ে নিঃশেষ হবার আগে জনগণের মনকে বোঝার চেষ্টা করুন।
ভাববেন না, ভোট দেয়ার দ্বায়িত্ব পালন শেষ করে, মানুষ তার বাঁচার অধিকারের কথা ভুলে যাবে আর ভাববে, ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজ বসন্ত।
ফারজানা কবীর খান (স্নিগ্ধা)
বন জার্মানি
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।