বাংলাদেশেও অক্সফোর্ড রয়েছে!!!!(যদিও একসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এশিয়ার অক্সফোর্ড বলা হতো) কিন্তু এটি কোন বিশ্ববিদ্যালয় নয়। এটি বরিশাল এর বগুড়া রোড এর সুরম্য স্থাপনা অক্সফোর্ড মিশন গির্জা। গ্রিক স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত গির্জাটির ভিতরে রয়েছে সুবিশাল প্রার্থনা কক্ষ। বাংলার ভেনিস বলে পরিচিত বরিশালে বিশেষ দ্রষ্টব্য আছে অনেককিছুই, তবে এসবের মধ্যে অন্যতম একটি গির্জা এটি। অন্যতম এর স্থাপনাশৈলী ও নকশার কারণে।
এই নকশার স্থাপনা ভারতবর্ষে একটাই আছে বলে শোনা যায়।
স্থাপনার গায়ের রং লাল। অর্থাৎ লাল ইটের তৈরি স্থাপনা। লালের ভেতরে এখানে-সেখানে ছড়িয়ে আছে পরিচ্ছন্ন-পরিপাটি সবুজ আঙিনা, মাঠ, বাগান। সুইমিং পুলের ব্যবস্থাসম্পন্ন বেশ বড়সড় পুকুরও আছে এখানে।
পুকুরের পানিও টলটলে পরিষ্কার। ওই গির্জার প্রতিবিম্ব দেখা যায় পরিষ্কারভাবে এই পানিতে। অবশ্য পুকুর কেবল একটিই নয়, মোট ১৩টি পুকুর আছে স্থাপনাটি ঘিরে।
তবে সবকিছু ছাপিয়ে যায় অসাধারণ স্থাপত্যশৈলী। সামনের সড়ক থেকেই সহজে চোখ পড়ে।
বাইরের গেটে লেখা বরিশাল অক্সফোর্ড মিশন হাই স্কুল। কিন্তু দেখতেও যেমন স্কুল ভবনের মতো নয়, তেমনি স্থাপনাটি স্কুলও নয়। দ্বিতীয় ফটকে যেতেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়। পরিচ্ছন্ন হরফে লেখা 'ইপিফানি গির্জা'।
১৮৮৯ সালে ইংল্যান্ডের আর্চবিশপের নির্দেশে অ্যাংলিক্যান মিশনারিজের একটি গ্রুপ আসে ভারতবর্ষে।
তাদের মিশন শুরু হয় ভারতের মাদ্রাজ থেকে। এর পরই তাদের একটি গ্রুপ আসে বাংলাদেশে। বাংলাদেশের বরিশাল শহর ও আগৈলঝাড়ায় জোবার পাড়ে তাঁরা দুটি জায়গা বেছে নেন। এর মধ্যে বরিশাল শহরের বর্তমান স্থানে ২৩ একর জমি ঘিরে তাঁরা শুরু করেন মিশনের কার্যক্রম। সেবামূলক ও ধর্মীয় কাজ।
গির্জা ভবনটির নির্মাণ কাজে সময় লাগে চার বছর। ১৯০৩ থেকে ১৯০৭ সাল। বাইরে থেকে দেখতে তিনতলা ভবনের মতো মনে হলেও ভেতরটা কেবলই একতলা, মেঝে থেকে ছাদের উচ্চতা টানা ১০০ ফুট। ভেতরে মেঝেতে আছে পাথরের তৈরি চৌবাচ্চা, ব্যাপ্টিজম বাথ বেসিন, যার স্বচ্ছ পানির ভেতরে সহজেই চোখে পড়ে ওপরের প্রতিবিম্ব। গির্জার মূল ফটক দক্ষিণমুখী।
মূল ভবনের তিন দিক ঘিরে অনেকগুলো দরজা। ভবনের ওপরে পূর্ব দিকে আছে কালো গম্বুজ, আছে বহুরকম জ্যামিতিক বিন্যাস। ব্রিটিশ গথিক স্থাপত্যশৈলীর অনুকরণে যার নকশা করেছেন সিস্টার এডিথ। তাঁকে সহায়তা করেছেন ফাদার স্ট্রং।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।