আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নীতরি কারণে পিছিয়ে

আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবার দিকে নজর না দিলে সরকার ঘোষিত ২০১৫ সালের মধ্যে ইন্টারনেটের গ্রাহক সংখ্যা ৩০ শতাংশে উন্নয়ন সম্ভব নয় বলেই মনে করেন সংশ্লিষ্ঠরা। তারা বলেছেন, ‘এ জন্য সরকারকে মোবাইল ব্রডব্যান্ডের ওপর নজর দিতে হবে। নইলে এটি সম্ভব করা যাবে না।

’ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গত জুনে বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, ইন্টারনেটের গ্রাহক বৃদ্ধির জন্য সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে। ২০১৫ সালের মধ্যে তারা ব্রডব্যান্ড সংযোগ তিরিশ শতাংশে উন্নীত করতে চান। বর্তমানে এটি ৭ শতাংশ রয়েছে বলে তার দাবি। এ জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে ডেটা ট্রান্সফার ক্যাপাসিটি প্রতি সেকেন্ডে ৪৪.৬০০গিগাবাইট।

সেটি তারা আগামী এক বছরের মধ্যে ১৪০ গিগাবাইটে উন্নীত করতে চান। এ জন্যই আরো একটি সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন করা হচ্ছে। এ জন্য বাংলাদেশ সামমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেডকে দায়িত্ব দেয়া হযেছে। তবে এক বছর নয় দু’বছর বাদেই এটি বসানো হবে। তবে টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ মেহবুব চৌধুরী বলেছেন, বর্তমানে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়।

সে জন্য সরকারকে মোবাইল ব্রডব্যান্ডের ওপর নজর দিতে হবে। তাহলেই কেবল এটি সম্ভব হতে পারে। তবে দ্রুত গতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দেয়ার জন্য ২০০৮ সালে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন-বিটিআরসি চারটি কোম্পানিকে ওয়াইমেক্স সেবার লাইসেন্স দিয়েছিল। তাদের মধ্য থেকে দুটো প্রতিষ্ঠান সেবা দিচ্ছে, ২০০৯ সালের শেষ দিক থেকে। এখন তাদের গ্রাহক দেশের মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর দশমিক জিরো জিরো জিরো জিরো সেভেন পার্সেন্ট।

অন্যদিকে মোবাইলফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন মোট ব্যবহারকারীর ৯৪ শতাংশ। বাকি প্রায় ৬ শতাংশ ফিক্সড লাইনে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। এ সব তথ্য বিটিআরসি থেকে পাওয়া। অন্যদুটো কোম্পানির একটি ব্র্যাক বিডি তাদের লাইসেন্স সারেন্ডার করেছে। সরকারি মালিকানাধীন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেড-বিটিসিএল কী করবে সে সিদ্ধান্তে এখানো আসতে পারেনি।

লাইসেন্স সারেন্ডার করা ব্র্যাক বিডি বলেছে, তারা লাইসেন্সের জন্য বিটিআরসির নিলামে নির্ধারিত ২১৫ কোটি টাকা দিতে অপারগ। এ টাকা তারা কিস্তিতে শোধ করারও প্রস্তাব করেছিলেন বলে বিটিআরসি চেয়ারম্যান সে সময় গণমাধ্যমকে বলেছিলেন। যেহেতু অন্য দুটো অপারেটর অজের ও বাংলালায়ন পুরো টাকা দিয়ে লাইসেন্স নিয়েছে তাই তারা এ সুযোগটি ব্র্যাক বিডিকে দিতে পারেননি। বিটিসিএল কিছুই বলেনি। বিটিআরসি লাইসেন্স দেয়ার জন্য অপারেটর নির্বাচনের সময় বলেছিল ৬ মাসের মধ্যে সেবা দিতে শুরু না করলে লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

তবে বিটিসিএল লাইসেন্স যেহেতু তারা এখানো নেয়ইনি তাই তাদের বিষয়ে বিটিআরসির কোনো সিদ্ধান্ত নেই। বিশ্ব ব্যাংকের ২০০৯ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেদেশে ১০ শতাংশ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গ্রাহক বাড়ে সেখানে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটে ১ দশমিক ৩ শতাংশ। এ রকম এক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারের হার খুবই কম। বিটিআরসি চেয়ারম্যান জিয়া আহমেদ বলেছেন, এটি বাড়ানোর সব ধরণের চেষ্টা তারা করে যাচ্ছেন। তার ধারণা থ্রি জি চালু হলে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গ্রাহক বৃদ্ধি ঘটবে দ্রুত।

গত বছর বিটিআরসি দেশের চারটি মোবাইলফোন অপারেটরের লাইসেন্স নবায়নের জন্য যে নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে, তাতে বলা হয়েছিল, চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে দেশে মোবাইল ব্রডব্যান্ডের আধুনিক প্রযুক্তি থ্রি জি বা তৃতীয় প্রজন্মের সেবা দেয়ার জন্য তারা একটি নিলাম ডাকবেন। দেশের মোবাইলফোন অপারেটররা বলছেন, তারা বিদ্যমান নেটওয়ার্কই কিছুটা আপডেট করেই তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইল ফোন সেবা দিতে পারবেন। সে জন্য তাদের খরচও কম হবে। কারণ তাদের দেশব্যাপী নেটওয়ার্ক রয়েছে। তাদের মতে, সরকার মোবাইলফোন অপারেটরদের মাধ্যমে মোবাইল ব্রডব্যান্ড সুবিধা সাধারণের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য বড় সুযোগটি নিতে পারেন।

বর্তমানে দেশের একমাত্র সিডিএমএ অপারেটর সিটিসেল ইভিডিও সেবাটি দিচ্ছে। যেটি তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইল ব্রডব্যান্ড সেবার সমমানের। এটি বিটিআরসির অনুমতি নিয়েই তারা করছেন। অন্য অপারেটররা বলছেন, বিটিআরসি যেখানে এ রকম একটি ভালো উদাহরণ তৈরী করেছে সেখানে অন্য অপারেটরদের থ্রি জি দিতে তারা ঔদার্য দেখালে দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের দ্রুত প্রসার ঘটবে। দেশের শীর্ষস্থানীয় মোবাইলফোন অপারেটর গ্রামীনের হেড অব কর্পোটেরট অ্যাফেয়ার্স মাহমুদ হোসেন বলেছেন, ব্রডব্যান্ড সেবা দ্রুত পৌঁছে দেয়ার জন্য এর লাইসেন্সটা দেয়া উচিৎ সহসা।

কারণ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা সাধারণের দোর গোড়ায় পৌঁছে দেয়ার জন্য এটা এখন বটলনেক । এটা তুলে নিলে গ্রাহকরা উপকৃত হবেন। তার মতে, মোবাইলফোন অপারেটরদের বিদ্যমান যে নেটওয়ার্ক রয়েছে তার কিছুটা আপডেট করার মধ্য দিয়ে ৬ থেকে ৯ মাসের মধ্যে ঢাকায় এবং দু বছরের মধ্যে ঢাকার বাইরের সব জায়গায় তারা ওয়্যারলেস কানেকশন পৌঁছে দিতে পারবেন। সে জন্য তিনি টেকনলজি নিরপেক্ষতাও চাইছেন। তার বক্তব্য থ্রি জি-এর জন্য স্পেকট্রাম ৯০০ ব্যান্ড, ১৮০০ ব্যান্ড নাকি সরকার নির্ধারিত ২১০০ ব্যান্ডে হবে বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়ায় ভালো।

গ্রাহকরা কী ভাবে অল্প খরচে এ সেবা পেতে পারেন? এমন প্রশ্নে মাহমুদ বলছেন, এ জন্য কস্ট ইফেকটিভ প্রযুক্তি ব্যবহার করার সুযোগটা দিতে হবে। একই সাথে এটি অপারেট করার জন্য যে লাইসেন্স দেয়া হবে সে জন্য সরকার কী পরিমাণ অর্থ নিবে এটিও সেবার মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে একটা প্রভাবক হবে। তবে বাজারে প্রতিযোগিতা তৈরী করা গেলে গ্রাহকরা তুলনামূলক কমমূল্যেই এ সেবা পেতে পারেন। সে জন্য রেগুলেটরকে বড় ভূমিকা রাখতে হবে। বর্তমানে দেশের কলরেট বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কম বলে জানিয়ে মোবাইলফোন অপারেটর রবির চিফ ফাইনান্সিয়াল অফিসার মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্রডব্যান্ড সুবিধার ক্ষেত্রেও এখানে একই রকম প্রতিযোগিতা হবে।

এতে গ্রাহকরা উপকৃত হবেন। সবচেয়ে বড় কথা সরকারের নীতি যত সহজ হবে গ্রাহকরা ততবেশি উপকৃত হবেন। ইন্টারনেটে পাওয়া তথ্য মতে, লন্ডনে রেগুলেরটর অপারেটরদের ৯০০ ব্যান্ডের স্পেকট্রাম বরাদ্দ করে এর মধ্য দিয়ে সব ধরণের সেবার (ভয়েস,ডেটা, ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস ইত্যাদি) সুযোগ দিয়েছেন। তবে বিটিআরসির একটি সূত্র বলছে, গ্রাহকদের সুাবিধার কথা বিবেচনা করেই তারা ২১০০ ব্যান্ডের স্পেকট্রাম রিজার্ভ রেখেছেন। এটি কেবল তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইল ব্রডব্যান্ড সেবাদাতাদের জন্যই নিলামের মাধ্যমে বরাদ্দ করা হবে।

বর্তমানে দেশে ২ কোটি লোক ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন বলে বিটিআরসি ছেযারশ্যান জিয়া আহমেদ জানিয়েছেন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.