আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমি কি ভুলিতে পারি.......

অপেক্ষা করুন........ মানিকগঞ্জের সিংগাইরের বয়রা স্কুলে নাটকের রিহর্সেল হচ্ছে। নাটকের নাম ক্ষুদিরাম। এ নাটকে ক্ষুদিরাম চরিত্রে যে অভিনয় করছে তার নাম রফিক। ক্ষুদিরাম বেশে রফিককে ফাসির মঞ্চের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। রফিক গান ধরল- একবার বিদায় দে মা ফিরে আসি।

পুরো ক্লাস জুড়ে নিস্তব্ধতা। হঠাৎ নারী কন্ঠে কান্নার আওয়াজ ভেসে আসল। মেয়েটির নাম পানু। পানু রফিকের কল্পিত ফাসির দৃশ্য সহ্য করতে পারছে না। কেননা রফিককে সে ভালবাসে।

এই রফিকের সাথে পানুর বিয়ের দিন-তারিখও ঠিক হয়ে গেছে। ২৪ শে ফেব্রুয়ারী ১৯৫২ সাল। ২১ শে ফেব্রুয়ারী ১৯৫২- আর মাত্র তিন দিন। তিন দিন পরই রফিকের ঘরে আসবে পানু। আনেক কাজ পরে আসে রফিকের।

তাই আর দেরী না করে রফিক বিয়ের সদাই করার জন্য বেরিয়ে পড়ে। সদরঘাট, নবাবপুর মার্কেট ঘুরে রফিক আলতা, সাবান, চুড়ি ইত্যাদি কিনে ফিরছিল। ফেরার পথে রিকশাঅলার মুখে শুনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের করেছে। একথা শুনে রফিক আর দেরী করে না।

মিছিলে যাবার জন্য দ্রুত হাটা শুরু করে। দূর থেকে শোনা যাচ্ছে স্লোগান- রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই..... কিছুক্ষনের মধ্যেই সে মিছিলের সঙ্গে মিশে যায়। সামনে পুলিশের ব্যারিকেড। হঠাৎ গুলির শব্দ। গুলি এসে রফিকের মাথায় লাগে।

হাত থেকে বাজারের থলে পরে যায়। ভেঙে যায় আলতার শিশি। রফিকের শরীর ঢলে পড়ে। তার মাথা থেকে রক্ত আর মগজের ধারা আলতার সাথে মিশে পথের ধুলোয় প্রবাহিত হয়। ২৬ বছরের যুবক আমানুল হক।

পেশা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের আর্টিস্ট কাম ফটোগ্রাফার। একটা ভাঙা বক্স ক্যামেরা নিয়ে ঘুরে বেড়ায় আর ছবি তুলেন। কিন্তু ২১ শে ফেব্রুয়ারী তার সবকিছু উলট-পালট করে দেয়। গুলি হয় মিছিলে। আমানুল জানতে পারেন হাসপাতালের পেছনে রক্ষিত আছে গুলিতে নিহত একজনের লাশ।

তিনি গোপনে চলে যান সেই লাশের কাছে। তুলে ফেলেন সেই রক্তস্নাত লাশের ছবিটি। সেই লাশটি ছিল ভাষা আন্দোলনের প্রথম শহীদ রফিক উদ্দিন আহমেদের। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.