মিথ্যাকে বর্জন করি সত্যকে আঁকড়ে ধরি হিডেন বিয়ে অনৈতিক । এর পরিচিতি তুলে ধরছি । এর আবিষ্কার হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা । বিভিন্ন কারণে এ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচিতি পেয়েছে । হিডেন বিয়ে হচ্ছে এমনই এক বিয়ে যা বাবা মা ভাই বোন পাড়া প্রতিবেশীর অজানা থাকে ।
এব্যাপারে জানে শুধু মিয়া বিবি আর ৫০ টাকায় ভাড়া বা দুকাপ চা খাওয়া স্বাক্ষী । সর্ব সাকুল্লে বড়জোর পাঁচ ছয় জন জানে মিয়া বিবি দুইটার বিয়ে হয়েছে ।
পক্রিয়াটা এমন । উদাহরণ দিচ্ছি । এই যেমন ধরুন ।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের মাটি বিবির সাথে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের আকাশ মিয়ার মন দেওয়া নেওয়া চলছে । তারা ঠিক করলো আমরা হিডেন বিয়ে করি । তো দেখা যাক কীভাবে হিডেন বিয়ের পক্রিয়া তারা কীভাবে শুরু করলেন । তারা চলে গেলেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৫০ কিলোমিটার দুরের কোন কাজী অফিসে । কাজী অফিসের লোক তাদের দেখে মহাখুশি ।
আজ কিছু টুপাইস কামাই হবে । আর মিয়া বিবি ও খুশি মাত্র কম টাকার বিনিময়ে তাদের কথিত অবৈধ সম্পর্ক হালাল হচ্ছে । ৫০ টাকার স্বাক্ষী জোগার হলো । বিয়ে রেজিস্ট্রেশন হলো । তারপর .....
এ হিডেন বিয়ে কেন করা হয় -
১. দীর্গ দিন ধরে দেখে আসছে ডিপার্টমেন্টের বড় ভাইয়া আর আপুদের অনেকে এধরনের বিয়ে করছে ।
২. প্রায় ছয় সাত বছর ক্যাম্পাসে থেকে নিজেদের জৈবিক চাহিদা পুরণ করা যাচ্ছে না । এতে তো আপতত একাজ করার বৈধতা পাওয়া যাচ্ছে । আর বাবা মা ভাই বোনসহ সমাজের লোকরা তো জানছে না ।
৩. এ বিয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অস্হায়ী । মেয়ে যখন দেখলো আমেরিকার নাসায় জব করা লোক তার বর হতে পারে তখন মিয়া সাহেবের সাথে বিয়ে ভেঙ্গে দিলো ।
এতে কোন আনুষ্ঠানিকতার প্রয়োজন হয় না । ব্যাপারটা অনেকটা কথিত তিন তালাকের মতো । মিয়া সাহেব যখন দেখলেন তার জন্য বাবা মা পরমা সুন্দরী ও টাকা ওয়ালার মেয়ে জোগাড় করেছেন । তখন তিনিও ঐ কাজই করলেন ।
ব্যাপারটা অনেকটা লিভ টুগেদার - এর মতো ।
লিভ টুগেদারের সাথে এর পার্থক্য হলো হিডেন বিয়ের কাগজপত্র থাকে । যাতে করে মিয়া বিবি নিজেদের আইনগতভাবে স্বামী স্ত্রী বলে দাবি করতে পারেন । এবং বিভিন্ন আইনগত ঝামেলা এড়াতে পারেন ।
৪. হিডেন বিয়ের লোকরা ছাত্র জীবন শেষে যে যার রাস্তা দেখে । অর্থাৎ ছাত্র জীবন শেষ বিয়েও শেষ ।
ব্যাপারটাকে অনেকটা ইরানের শিয়াদের মুতা বিয়ের সাথে তুলনা করা যায় ।
আমি শুধু এতটুকু বলবো, এবিয়ে ইসলামের সঠিক আইন অনুযায়ী হারাম এবং একাজে যারাই যুক্ত থাকবে তারা সারা জীবন যতই ইবাদাত করুক না তা কবুল হবে না । আমার দেখায় বাস্তব জীবনে এমন লোকরা কখনো সুখী হয় না ।
অধ্যয়নই ছাত্রজীবনের ধ্যান জ্ঞান সাধনা । ছাত্র জীবনে অন্য কিছু অগ্রহণযোগ্য ।
এক জন দুই নৌকায় পাড়া দিতে পারে না । বৈধভাবে বাবা মার মতো বিয়ে হলেও ছাত্র জীবনে বিয়ে করলে জ্ঞান অর্জন পক্রিয়া বাধাগ্রস্হ হয় ।
হিডেন বিয়ের ক্ষতিকর দিকগুলো :
১. সরাসরি ব্যাবিচার ও লিভটুগেদারের মতো হিডেন বিয়েও পাপ ও শুদ্ধতম ইসলামী আইন মতো অবৈধ । হাদিস অনুযায়ী বিয়ের সময় ছেলে মেয়ে উভয় পক্ষ হতে নুন্যতম একজন করে স্বাক্ষী থাকতে হবে । কিণ্তু বাস্তবে তা হয় না ।
এখানে পেশাদার ( বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে মদখোর নেশাখোর অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্তান ভাইরা ) স্বাক্ষীরা স্বাক্ষ্য হন । ইসলামী আইন মতে এধরনের স্বাক্ষী অগ্রহণযোগ্য । আমি আহলে হাদিসদের বইয়ে দেখেছি, তারা হাদিস দ্বারা প্রমাণ করেছেন মেয়ের পক্ষ হতে নুন্যতম এক জন স্বাক্ষী থাকতে হবে । বর্তমানের বিবাহ সম্পর্কিত আইন ইসলামী আইনের সম্পূর্ণ বরখেলাপ ।
২. নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিয়ে ইসলামী আইনে অগ্রহণযোগ্য ।
শিয়াদের একটি অংশে এবিয়ে গ্রহণযোগ্য । এদের আলেমরা ইসলাম বহির্ভুত সম্প্রদায় মনে করেন ।
৩. বাবা মা - কে পাশ কাটিয়ে রেখে কোন বিয়েই গ্রহণযোগ্য নয় । কারণ তাদের কারণেই আমরা পৃথিবীতে এসেছি । বলতে গেলে তাদের ইচ্ছাতেই ।
এখন তো মাত্র বারশ টাকা খরচ করে অনেক মহিলা গর্ভপাত ঘটাচ্ছেন ।
৪. হিডেন বিয়ে যারা করে, তাদের মধ্য ভালবাসা বা আদর্শ পরিবার গঠণ প্রধান কাজ নয় । তাদের প্রধান কাজ সময় অসময় জৈবিক কাজ সম্পন্ন করা । এজৈবিক কাজ সম্পন্ন করতে যেয়ে অনেক মেয়ে অপরিকল্পিতভাবে সন্তান সম্ভবা হয় । এর ফলে তারা গর্ভপাত ঘটায় ।
গর্ভপাত ঘটাতে যেয়ে তারা অনিরাপদ পদ্ধতি ব্যবহার করে । যার ফলে প্রচন্ড রক্তপাতের শিকার হয় মেয়েরা এবং চিরদিনের জন্য মা হওয়া হতে বঞ্চিত হন । কারণ গর্ভপাত করার জন্য এম আর করলে প্রায়ই মেয়েদের জরায়ুর ভেতরের একটি স্তর ইনগোমট্রেয়িাম ক্ষতিগ্রস্হ হয় । এর ফলে জরায়ুর দেওয়ালে ভবিষ্যতে মানব ভ্রুণ সৃষ্টি হতে পারে না । দেখুন : সময় প্রকাশন হতে প্রকাশিত মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা, মোহিত কামালের বই কাছের তুমি দুরের তুমি বইয়ের ৮০ পৃষ্ঠা ।
৫. হিডেন বিয়ে যারা করে তারা বরাবরই বেপরোয়া হয় । এরা প্রকাশ্যেই জৈবিক ক্রিয়া সম্পন্ন করার কার্যক্রম শুরু করে । আপনি বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে বন জঙ্গল ঝোপ ঝাড়ে কামকরা রত –রতাদের খবর নিয়ে দেখুন । এদের উল্লেখযোগ্য হিডেন বিয়ে লোক । এধরনের প্রকাশ্য কামকর্ম নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য ।
মানুষ তো আর কুকুর আর কুকুরী নয় । মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। হিডেন বিয়ে যারা করে বা হিডেন বিয়েপ্রবন এলাকায় থাকে বা হিডেন বিয়ে কারার মতো লোকদের অবস্হা কেমন বিশেষত মেয়েরা কেমন তা জানতে দেখুন বিদ্যা প্রকাশ হতে প্রকাশিত ডা. মোহিত কামালের আগুন কায়লায় পোড়া জীবন বইয়ের ৭২ পৃষ্ঠা । হিডেন বিয়েপ্রবন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ও শিক্ষকের মধ্যকার সম্পর্ক কেমন হয় তা জানতে পড়ুন বিদ্যা প্রকাশ হতে প্রকাশিত ডা. মোহিত কামালের সুখ পাখি আগুন ডানা বইটা ।
৬. হিডেন বিয়েতে হিন্দু মুসলিম নাম নিয়েও বিয়ে করে ।
কিন্তু সে (পু/স্ত্রী) মুসলিম হননি । কারণ তাদের উদ্দেশ্য একটা কাবিননাম জোগাড় করা । কাম করা অবস্হায় ধরা পড়লে এটা দেখিয়ে আইনগত জটিলতা এড়ানো । এধরণের বিয়ের আইনগত ভিত্তি নেই ।
৭. জন্ম , মৃত্যু আর বিয়ে ইসলামে গুরুত্বপূর্ণ ।
জন্মের সময় শিশুর ডান কানে আযান দিতে হয় , মৃত্যুর সময় বাম কানে ইকামত দিতে হয় আর বিয়ের সময় মুসলিম জাতির সদস্য-সদস্যাদের প্রকাশ্যে জানান দিতে হয় যে মুসলিম জাতির সদস্য-সদস্যা বাড়ানোর জন্য অমুক নারী পুরুষ দুজন বিয়ে করছে । যে কারো বিয়েই প্রত্যেক মুসলিমের আনন্দের বিষয় । এজন্য এটা প্রকাশ্য । শুদ্ধতম ইসলামী আইনে বিয়ে হয় মসজিদে । কারণ মসজিদ মুসলিমদের সকল কাজের কেন্দ্রবিন্দু ।
মুসলিম ধর্মজাযকরাই বিয়ের পরিচালক হবেন । কোন অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত ও প্রতারক শ্রেণীর কোন লোক এমহৎ কাজ পরিচালনা করার যোগ্য নন । কিন্তু বাস্তবে কাজী অফিস সাইনবোর্ড লাগানো চিপাগলির খুপড়ি ঘরগুলোতে এসব তথাকথিত বিয়ে হচ্ছে ।
৮. হিডেন বিয়ে যারা করেন তারা প্রায়ই আইনগতভাবে বিয়ে ভেঙ্গে দেন না । কারণ প্রচলিত আইনে বিয়ে করা সহজ হলেও বিয়ে ভেঙ্গে দেওয়া কঠিন ।
কারণ এর জন্য বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাফেরা করতে হয় । এবং যথেষ্ট টাকা পয়সা খরচ করতে হয় । এজটিলতার কারণে বাবা মার মতে পরবর্তীতে বিয়ে করলেও প্রায়ই পুরানো হিডেন বিয়ের লোক স্বামী/স্ত্রীর দাবি নিয়ে হাজির হয় । এর ক্ষতিকর দিক একটা বাচ্চাও বুঝে ।
৯. হিডেন বিয়ের লোকরা পরে আবার বিয়ে করার পর দাবি করে আমি ১০০% হালাল স্বামী অথবা আমি ১০০% ফুলকুমারী ।
তাদের এদাবি বড় ধরনের প্রতারণা । ইসলামে প্রতারক সম্প্রদায়কে ইসলাম বহির্ভুত সম্প্রদায় বলা হয়েছে । কারণ হাদিসে স্পষ্টত বলা হয়েছে যে প্রতারণা করে সে আমাদের অর্ন্তভুক্ত নয় ।
১০. ছাত্র জীবন জ্ঞান অর্জনের সময় । এসময়ে অন্য কিছু করা গ্রহণযোগ্য নয় ।
বিয়ে বা হিডেন বিয়ে তো নয়ই । আর যারা ব্যবিচার বেছে নিবে তাদের শাস্তি পাথর ছুড়ে হত্যা করা (আমি এখানে যা লিখেছি তা সত্য লিখেছি । এটা কোন জঙ্গীবাদী কথা না । আমি বড়জোড় শুদ্ধতম ইসলামী জ্ঞান উপস্হাপন করেছি । জ্ঞানের ক্ষেত্রে ভেজাল দেওয়া যায় না ।
এবং তা গর্হিত কাজ । )। তবে পড়াশোনা ও বাবা মার সাহায্য করার জন্য অর্থ উপার্জনের কাজ করা যেতে পারে ।
১১.হিডেন বিয়েতে সবচেয়ে বেশী লুজার হয় মেয়েরা । এবিয়েতে দেন মোহর ধরা হয় মাত্র দশ হাজার হতে পঞ্চাশ হাজার টাকা ।
একটা কাজের ভুয়া বা গার্মেন্টের মেয়ের বিয়েতেও দেন মোহর হয় পাঁচ লক্ষ টাকা । আর অনার্স পড়ুয়া মেয়ের দেন মোহর দশ হাজার টাকা । আজ কাল কুরবানীর গরুও পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে পাওয়া যায় না । দেন মোহর একটা মেয়েকে আর্থিক নিরাপত্তা দেন এবং বিয়ের বন্ধনকে সুদৃঢ় করে । যে মেয়ের বিয়ের দেন মোহর দশ লাখ টাকা তার স্বামী তাকে তালাক দিতে দশ বার চিন্তা করবে ।
কারণ আদালতে গেলে মেয়েটাকে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিতে হবে । হিডেন বিয়ে একটা মেয়েকে একটা গরুর চেয়ে কম মূল্যহীন করে ফেলে ।
(কপি পোস্ট) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।