আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গাজীপুর আ.লীগের জন্য ‘ডু অর ডাই’

গোপালগঞ্জের পর গাজীপুরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘাঁটি। গাজীপুরের পাঁচটি আসনের সাংসদও ক্ষমতাসীন দলের। চারটি সিটি করপোরেশনে ধরাশায়ী হওয়ার পর এখন সেই ঘাঁটি টিকিয়ে রাখতে দলটি সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে। নির্বাচনের আগ পর্যন্ত শাসকদলের বিরুদ্ধে যেসব সমালোচনা রয়েছে তা মোকাবিলা করে কীভাবে নির্বাচনের ফলাফল নিজেদের অনুকূলে আনা যায়, তা নিয়ে তৎপর সব স্তরের নেতারা।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘বিরোধীদলীয় নেতা যেমন নির্বাচনের প্রচারের বিষয়টি নজরদারি করছেন, প্রধানমন্ত্রীও একইভাবে নজরদারি করছেন।

এর আগে চারটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হেরে গেছে। অভিযোগ আছে, নেতা-কর্মীরা তেমনভাবে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেননি। নির্বাচনে জয়-পরাজয় যা-ই হোক না কেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেছেন—সেটি আমরা প্রমাণ করতে চাই। ’
জানা গেছে, গাজীপুরের সর্বাধিক ভোটারের কাছে পৌঁছানো এবং দলের কেউ যেন নিষ্ক্রিয় বসে না থাকেন বা দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রচারণা না চালান, তা নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। আওয়ামী লীগ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৭টি ওয়ার্ডের জন্য ৫৭ জন সাংসদকে সম্পৃক্ত করেছে।

প্রতিদিন কেন্দ্রীয় নেতারা গাজীপুরে আসছেন, প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। আওয়ামী লীগের বাইরে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারাও প্রতিদিন প্রচারণা চালাচ্ছেন।
সর্বশেষ আজ মঙ্গলবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী আজমত উল্লার পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেন। বিপুল ভোটে জয়ী এই মেয়রকে আগেই প্রচারে অংশ নিতে বলা হয়েছিল। গতকাল সোমবার দেশে ফিরে তিনি আজই প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন।


আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, তাঁরা জনসংযোগ করছেন। ভোটাররা তাঁদের নিরাশ করবেন না। শাসকদলের অনেক সমালোচনা থাকে, তবু তাঁরা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, তাঁরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ভোটাররা পছন্দ করলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ভোট দেবেন।

তাঁদের লক্ষ্য সবার কাছে পৌঁছানো।
তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, কিছু কিছু সংবাদমাধ্যম এমনভাবে প্রচারণা চালাচ্ছে যেন আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। বঙ্গবন্ধু যখন ছয় দফা উত্থাপন করেন, তাঁর সঙ্গে কেউ ছিল না। তিনি তার পরও এগিয়ে গেছেন। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম দিনভর প্রচারণায় অংশ নিলেও বলা হচ্ছে, জাহাঙ্গীর আর হেফাজত ইস্যুতে আওয়ামী লীগ জর্জরিত।



ইস্যু মাথায় রেখে জনসংযোগের নেতা নির্বাচন
গাজীপুর সিটি নির্বাচনে সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা গাজীপুরের একজন স্থানীয় নেতা প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, গাজীপুরের ৫০ ভাগ মানুষ বহিরাগত ও শ্রমিক। তাঁরা বৃহত্তর ময়মনসিংহ, উত্তরাঞ্চলের জেলা ও বরিশাল থেকে এসেছেন। এই ভোটারদের আকৃষ্ট করতে বৃহত্তর ময়মনসিংহ থেকে মতিউর রহমান, মুশতাক আহমেদ রুহি, মো. মুরাদ হাসান, আতিউর রহমান আতিক এসেছেন। উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন মো. নাসিম, আসাদুজ্জামান নূর। বরিশাল থেকে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, তালুকদার ইউনূস ঘুরে গেছেন।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম নিয়মিত জনসংযোগ করছেন।
স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকেরা প্রচারণা চালাচ্ছেন যে আওয়ামী লীগকে ভোট দেওয়া মানে নাস্তিকদের ভোট দেওয়া। চারটি সিটি করপোরেশনে পরাজিত হয়েছে, তার মানে জনগণ আওয়ামী লীগের সঙ্গে নেই। প্রচারে যুক্ত হয়েছে শেয়ারবাজার, পদ্মা সেতুর মতো ইস্যুও। এসব ইস্যুতে জনগণকে আশ্বস্ত করতে কেন্দ্রীয় নেতারা জনসংযোগের কৌশল ঠিক করছেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি-সুবিধা স্থগিত করার পর জনসংযোগের সময় নেতা-কর্মীরা ‘ওয়াশিংটন টাইমস’-এ খালেদা জিয়ার নিবন্ধের ব্যাপারে শ্রমিকদের বোঝাচ্ছেন।
গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেন বলেন, কোথাও কোথাও বিরোধী দলের প্রার্থীর নারী কর্মী-সমর্থকেরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলছেন, আওয়ামী লীগ নাস্তিকদের দল। প্রচারণাটা ব্যাপকভাবে হওয়ায় ভুল ভাঙাতে যুব মহিলা লীগের কর্মীদের বাড়ি বাড়ি যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। এর বাইরে গণসংযোগের জন্য অভিনেত্রী তারানা হালিম ও গায়িকা মমতাজও এসেছেন। তাঁরা মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন, চারটি সিটি করপোরেশনে পরাজিত হলেও গাজীপুরে পরাজিত হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।

কারণ আজমত উল্লা খান তাঁদেরই পরিচিত, নির্বাচিত পৌরসভার মেয়র হয়ে আছেন ১৭ বছর ধরে।
জাপার অনুকম্পা চাওয়ায় ক্ষুব্ধ
নির্বাচনে জয়ী হতে জাতীয় পার্টির অনুকম্পা চাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন কোনো কোনো নেতা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন দায়িত্বশীল নেতা প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জয়ী হতে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের সঙ্গে যে সাক্ষাৎ করেছেন, তার কোনো দরকার ছিল না। আজমত উল্লা সাক্ষাত্ করেছেন এরশাদের সঙ্গে, এতে হিতে বিপরীত হয়েছে। তাঁরা মনে করেন, আওয়ামী লীগ বড়, সুসংগঠিত দল।

জাতীয় পার্টির কাছে ধরনা না দিলেও চলত। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.