তাশফী মাহমুদ
এই সময়ের পপ মিউজিকের দুই জনপ্রিয় গায়িকা মিলা ও তিশমা। এই দুই গায়িকার দ্বন্দ্ব সম্পর্কে জানেন মিডিয়ার অনেকেই। আড়ালে-আবডালে তারা দুজনই একে-অন্যের বিরুদ্ধে মুখ দ্বিধা করেন না। এবার তিশমা সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুললেন মিলার বিরুদ্ধে।
মিলার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ জানিয়ে সম্প্রতি তিশমা বাংলানিউজে লিখিত বিবৃতি পাঠিয়েছেন।
লিখিত বিবৃতিতে তিশমা বলেন,আমি ২০০২ সালে আমার প্রথম একক অ্যালবাম প্রকাশনার মাধ্যমে সংগীতাঙ্গনে জনসম্মুখে আসি। এরপর ধারাাবাহিকভাবে আমার বিভিন্ন একক ও যৌথ এ্যালবাম প্রকাশিত হতে থাকে। আমি সংগীতজগতকে কখনই আমার পেশার জায়গা হিসেবে ভাবিনি বরং সংগীতকে আমার অন্যান্য শখের মতই একটি শখ হিসেবে নিয়েই গান করে আসছি। যে কারণে অডিও অ্যালবাম প্রকাশ ও ষ্টেজ শো এইসব ব্যাপারে আমার খুব বেশি আগ্রহ ছিল না। যদিও পরিবারের সদস্যদের আগ্রহে এবং শ্রোতা-দর্শকদের বিশেষ আগ্রহে আমাকে অনেকগুলো কাজ করতে হয়েছে।
বিবৃতিতে তিশমা বলেন, ‘আমার সব সময়ই আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু ছিল আমার পড়াশুনা। এছাড়াও লেখালেখি ছবি আঁকাসহ নানা কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে পছন্দ করি আমি। আমি আমার পারিবারিক মূল্যবোধকে প্রাধান্য দিয়েই সব সময় বিভিন্ন ধরনের মিডিয়া রিলেটেড কাজে অংশগ্রহণ করতে চেষ্টা করেছি। যে কোন মূল্যেই অ্যালবাম প্রকাশ করতে হবে বা শো করতে হবে, কিংবা টিভি অনুষ্ঠানে নিজেকে উপস্থিত রাখতে হবে, এসব বিষয়ে আমার কখনই আগ্রহ ছিল না। এসব সত্ত্বেও আমি দীর্ঘদিন থেকে লক্ষ্য করছি, আমার চেয়ে তুলনামুলক নবীন একজন গায়িকা (মিলা) যিনি তার ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই আমাকে নানাভাবে অনুকরণ-অনুসরন করে আসছে এবং নানাবিধ উস্কানিমূলক কার্যক্রম সহ আমার বিরুদ্ধে নানাবিধ অপ-প্রচার চালিয়ে আসছে।
এতদিন আমি এসব বিষয়ে খুব একটা গা লাগাইনি। বর্তমানে তার এইসব কার্যকলাপ এতই বৃদ্ধি পেয়েছে, যা একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষকে অতিষ্ঠ করে তোলার জন্য যথেষ্ঠ’।
গায়িকা মিলার বিরুদ্ধে তিশমা বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তুলে ধরেন। তিশমা মিলার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরে বলেন, এবারের ঈদের অনুষ্ঠানমালায় বাংলাভিশনে আমার গান রেকর্ডিং করা হয়। এমনকি প্রমো চালানো হয় কিন্তু গানটি অনুষ্ঠান থেকে বাদ দেয়া হয়।
প্রযোজক সূত্রে জানতে পারি, এই কাজটি ওই গায়িকার কারণেই হয়েছে। আমার গান থাকলে প্রযোজকের কোনো অনুষ্ঠানে তিনি অংশ নেবেন না বলে হুমকি দিয়েছিলেন।
মিলার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ২০০৭ সালে ইন্ডিয়াল আইডলের কনসার্টে ফ্যান্টাসী কিংডমে আমার গান চলার সময়ে সাউন্ড এর লোকজন কে ম্যানেজ করে আমাকে দর্শকদের সামনে বিব্রত করার চেষ্টা করেছিল । যার স্বাক্ষী ওই সময় উপস্থিত থাকা আর টিভির স্যুটিং টিম।
২০০৮ সালে নাখালপাড়ার একটি স্কুলের ৫০ বছর পূর্তিতে আমি যখন গান গাইতে উঠি তখন তিনি নিজেই বিভিন্ন যন্ত্রপাতির তার খুলে দেয়, যার ফলে আমি শো করতে পারিনি।
এর স্বাক্ষী উপস্থিত কয়েকজন শিল্পী ও সাংবাদিক।
তিশমা আরো বলেন, নানা সময়ে আমি যে সুরকারের সাথেই কাজ করতে গেছি সেখানেই তিনি
হাজির হয়েছেন এবং অনেককে আমার গান না করে তার গান করার জন্য প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেছেন।
ইন্টারনেটে এই গায়িকা এবং তার দল অনবরত আমার নামে নানা বাজে কথা লেখার মাধ্যমে আমার সম্মানহানীর চেষ্টা করছেন। তারা আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়ার চেষ্টা করেছেন এবং দিয়ে যাচ্ছেন।
মিলার বিরুদ্ধে তিশমা তার দীর্ঘ অভিযোগপত্রে আরো উল্লেখ করেন, অডিও কোম্পানীর কারখানা লেভেলের কর্মচারীদের ম্যানেজ করে তিনি আমার অ্যালবাম প্রকাশনাকে বাধাগ্রস্থ করার চেষ্টা করেছেন।
যে কোনো ষ্টেজ শো বা টিভি শোতে আমাকে যাতে না নেয়া হয় সে বিষয়ে তিনি আয়োজকদের ও প্রযোজকদের নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করে। সর্বশেষ বি পি এল এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজক কর্তৃপক্ষ আমার সাথে চুক্তি করার পরও এই গায়িকা নানাবিধ চাপ প্রয়োগ করলে আমাকে অনুষ্ঠান থেকে শেষ মুহূর্তে বাদ দেয়া হয়।
সবশেষে তিশমা তার বিবৃতিতে মিলার বিরুদ্ধে বলেন, তার অল্প কিছু কার্যক্রমের নমুনা তুলে ধরেছি মাত্র। যা আমি এতদিন কোন প্রকার আমলেই নেই নি। কিন্তু তার এ ধরনের আক্রমনাত্মক শত্র“সুলভ, অশিল্পী সুলভ আচরন আমাকে ব্যক্তিগতভাবে যেমন মর্মাহত করেছে, তেমনি সামাজিকভাবেও আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করছে।
তাই আপনাদের মাধ্যমে আমি তাকে সতর্ক করতে চাই, ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যক্রম গ্রহন করলে আমি তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করতে বাধ্য হবো।
সুত্র- View this link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।