আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জাগো বাঙ্গালি জাগো, হাতিবান্ধায় বাংলাদেশী ছাত্রকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ(পায়ে রশি বেঁধে অমানবিক নির্যাতন)

এতোদিন পত্রিকায় লিখলাম এবার ব্লগে লিখব লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার গেন্দুকুড়ি সীমান্ত থেকে গতকাল সকালে সাদেকুল ইসলাম নামের এক বাংলাদেশী যুবককে ধরে নিয়ে গেছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিএসএফ। অপহৃত যুবককে ফেরত চেয়ে বিজিবির পক্ষ থেকে একাধিকবার চিঠি দিলেও বিএসএফের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। বিজিবি ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার সিঙ্গিমারী গ্রামের সৈয়দ আলীর ছেলে হাতিবান্ধা সিনিয়র মাদরাসার ছাত্র আলিম পরীক্ষার্থী সাদেকুল ইসলাম (১৯) গতকাল সকালে গেন্দুকুড়ি সীমান্তে ৮৯৮নং মেইন পিলার সংলগ্ল জমিতে সেচ দিতে যায়। এ সময় ভারতীয় মিরাপাড়া ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে তাকে ধরে নিয়ে যায়। সিঙ্গিমারী বিজিবি ক্যাম্পের হাবিলদার আ. রউফ জানান, খবর পেয়ে অপহৃত যুবককে ফেরত চেয়ে তাত্ক্ষণিক চিঠি দেয়া হয়।

এতে বিএসএফের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া না যাওয়ায় পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানিয়ে আবারও বিএসএফকে চিঠি দেয়া হলেও তারও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। অপহৃত যুবক সাদেকুল ইসলামের বাবা বৃদ্ধ সৈয়দ আলী ও মা মাজেদা খাতুন জানান, তার ছেলে এবার আলিম পরীক্ষার্থী। পাশাপাশি স্থানীয় সর্দ্দারটারি জামে মসজিদের মোয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করে আসছে। ঘটনার দিন ফজরের নামাজ শেষে সীমান্তসংলগ্ল ইরি-বোরো জমিতে সেচ দিতে গেলে বিনা উস্কানিতে বিএসএফ তাকে পায়ে রশি বেঁধে ধরে নিয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাদেকুলকে বিএসএফ আটকের পর পরই পায়ে রশি বেঁধে সীমান্তেই অমানবিক নির্যাতন শুরু করে।

এ সময় সাদেকুল বাঁচাও বাঁচাও বলে আত্মচিত্কার করতে থাকে। ভারতে অবস্থানরত আত্মীয়ের বরাত দিয়ে সিঙ্গিমারী গ্রামের জাফর আলী জানান, অপহৃত সাদেকুলকে বিএসএফ নির্যাতন করায় সে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সম্ভবত তার একটি পা ভেঙে গেছে। এর আগে বিএসএফ ৩য় শ্রেণীর ছাত্র শিশু বিষাদসহ ৩ বাংলাদেশীকে ধরে নিয়ে যায়। ফলে এ ঘটনায় গোটা সীমান্তজুড়ে লোকজনের মধ্যে চরম উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এ ব্যাপারে সিঙ্গিমারী বিজিবি ক্যাম্পের হাবিলদার আ. রউফ জানান, এ নিয়ে ভারতীয় বিএসএফের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাদের তরফ থেকে কোনো জবাব পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে বিকাল সাড়ে ৫টায় সিঙ্গিমারী ৮৯৭নং মেইন পিলারে ২নং সাব-পিলারের কাছে বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বড়খাতা বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার নুরল হক। বৈঠকে সাদেকুলের কাছে ফেনসিডিল ও গাঁজা পাওয়া গেছে—এমন অভিযোগ করেন বিএসএফ। তবে বিজিবি এটা মিথ্যাচার বলে প্রতিবাদ করে।

বৈঠক শেষে লালমনিরহাট বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আসলাম জানান, আটক সাদেকুলকে ভারতীয় বিএসএফ এরই মধ্যে তাদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করায় তাকে ফেরত দেয়া সম্ভব নয় বলে বিএসএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সাদেকুলকে বিএসএফ আটকের পরপরই পায়ে রশি বেঁধে সীমান্তেই অমানষিক নির্যাতন শুরু করে। এ সময় সাদেকুল বাঁচাও বাঁচাও বলে আত্মচিত্কার করতে থাকে। ভারতে অবস্থানরত আত্মীয়ের বরাত দিয়ে সিঙ্গিমারী গ্রামের জাফর আলী জানান, অপহৃত সাদেকুলকে বিএসএফ নির্যাতন করায় সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সম্ভবত তার একটি পা ভেঙে দিয়েছে বিএসএফ।

এর আগে বিএসএফ তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র শিশু বিষাদসহ ৩ বাংলাদেশীকে ধরে নিয়ে যায়। ফলে এ ঘটনায় সীমান্তজুড়ে লোকজনের মাঝে চরম উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। আর কত চলতে থাকবে বিএসএফএর নির্যাতন? এক্ষুনি কি তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে সমঝোতা করার সঠিক সময় নয়? নাকি ফেলানির মত আরো লাশ ঝুললে আমাদের টনক নড়বে। ফেলানির লাশ আমাদের অন্তরে যে ক্ষত সৃষ্টি করেছে সে ক্ষত তো এখনো শুকোয়নি। আর ফেলানির ক্ষত মন থেকে না শুকাতেই কিছুদিন আগে নতুন করে আবার ক্ষত সৃষ্টি করলো বিএসএফের আরেক বর্বরতা।

এটা একজন বাংলাদেশীকেই নয় আমাদের পুরো জাতিকে অপমান করলো বিএসএফ। কতটা নিষ্ঠুর হলে মানুষ এভাবে উলঙ্গ করে নির্যাতন চালাতে পারে। ভারতের এই টিভি চ্যানেলটিকে ধন্যবাদ কারন তারা প্রচার না করলে আমারা জানতেও পারতাম না হয়তো। এই নির্যাতনের কথা ও ছবি না হয় আমরা জানতে পারলাম তাদের টিভি চ্যানেলের বদৌলতে। কিন্তু এখন সাদিকুল ইসলামকে কেমন নির্যাতন করছে তা কিন্তু আমরা জানতেও পারছি না।

১৯৭১ সালে আমাদের বাঙ্গালীরা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের অনেক নির্যাতনের শিকার হয়েছিল, অনেক রক্ত দিতে হয়েছিল। যা আমরা কোনদিন ভুলব না, কিন্তু এখন আমরা স্বাধীন আর স্বাধীন হয়েও যদি এখন আমাদের বাংলাদেশীদের নির্যাতনের শিকার হতে হয় তাহলে প্রশ্ন আসে আমরা কি আসলেই স্বাধীন জাতি? জাগো বাংগালি জাগো, বিএসএফেল নির্যাতনের বিরূদ্ধে শক্ত অবস্থান নাও। নয়তো এভাবে বাংগালিরা নির্যাতনের শিকার হতেই থাকবে, কখনো মিডিয়া আসবে আবার হয়তো নির্যাতনের কথা আমরা টেরও পাবো না । আমরা ঘুমিয়েই থাকবো আর চলতে থাকবে সন্তান হারানো মা-বাবাদের আর্তনাদ। বিএসএফের নির্যাতনের শিকার আরেক তরুণী  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.