আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

থাইল্যান্ডের উত্সব আর আমরা...

জোনাকি জ্বলা রাতে মন যেতে চাই তারা ছুতে ঘুরাঘুরি করতে কে না পছন্দ করে ? যারা করে না তাদের এক কথায় নিরামিষ ছাড়া আর কিছু বলা চলে না। আর ঘুরাঘুরির দিক দিয়ে থাইল্যান্ড সবার কাছেই বেশ পরিচিত। বাড়ির কাছে হওয়াতে সবারই একবার ব্যাংকক ঘুরে যাওয়ার প্ল্যান থাকে। আর সেই প্ল্যানটা যদি হয় ঐতিহ্যবাহী উত্সব এর দিনগুলির মধ্যে তাহলে তো এক জোড়া চোখে দুই জোড়া সানগ্লাসের মত অবস্হা । তেমনই একটি উৎসবের নাম হচ্ছে সংক্রান যা আমাদে দেশের আদিবাশীরাও করে থাকে।

এই থাই নতুন বছরের উৎসব এপ্রিলের ১৩ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত হয়ে থাকে। সারা দিন রাত জুড়েই থাকে উৎসবের থৈ থৈ আমেজ। এখন মনে হতে পারে যে থৈ থৈ বললাম কেন? ব্যাংকক সহ পুরা থাইল্যান্ড জুড়ে চলে পানি আর পাউডার/আটা নিয়ে খেলা। গাড়ি নিয়ে বের হলে বাসায় ফেরার পর চিনার উপায় থাকে না যে এই টা নিজের গাড়ি নাকি অন্যের গাড়ি। গাড়িকে সাদা চাইনিজ ভুত বানিয়ে ছেড়ে দেয়।

আর গাড়ি ছাড়া বাইরে গেলে রাস্তার মড়ে মড়ে পানি আর পাউডার হাতে দাড়িয়ে থাকা সাংগো পাংগোদের হাত থেকে রক্ষা নাই। এই কইদিন সহ আরো কিছু দিন প্রায় এক সপ্তাহ মত ছুটি থাকার কারনে সবাই পানি দিয়ে ভিজিয়ে দেয়া আর ভিজে যাওয়া খেলা উপভোগ করে। সংক্রানের প্রথমদিন সকালে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা মন্দিরে গিয়ে পুজা এবং বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পোষাক ও খাবার দান করার মাধ্যমে শুরু করে । এরপর বাড়ির মুরুব্বিদের মুখে পাউডার এবং হাতে পানি ঢেলে শ্রদ্ধা জানিয়ে শুরু হয় চং বং মজা। পিকআপ গাড়িতে ড্রাম ভর্তি পানি নিয়ে বের হয়ে যায় এক একটি গ্যাং।

রাস্তার মড়ে দাড়িয়ে থাকা গ্যাংদের সাথে চলে গাড়িতে করে আসা গ্যাংদের পানি ছুড়া ছুড়ি । আর গাড়িতে গাড়িতে গ্রুপের দেখা হলে চলে রাস্তার মধ্যেই পানি মারা মারি। রাস্তার মানুষও মাফ যায় না। তবে বিদেশীদের এ দিক দিয়ে বিশেষ নজরে দেখা হয়। বিদেশীদের পানি দিয়ে ভেজানর আগে সুন্দর করে এসে বলে " একটু পানি দি ?" ।

এমনই এক সংক্রানে আমার এক বান্ধবিকে আমার বাসায় আসতে বললাম। বেচারি আমার বাসায় আসতে আসতে পুরা ভিজে একাকার। দেখে মনে হচ্ছে এই মাত্র পুকুর থেকে ডুব দিয়া আসছে । পরে দেখি সে আরেক সেট জামা নিয়ে আসছে সাথে করে আর আমার জন্য নিয়ে আসছে কিছু থাই খাবার । পাতায়া সি বিচ এ চলে বিভিন্ন রকমের মেলা আর কনসার্ট।

অন্যান্য বিচেও হয় তবে পাতায়া ব্যাংককের কছে থাকায় আর সবার কাছে পরিচিত হওয়াতে এখানে হয় বড় আয়োজন । আর মার্কেট গুলাতে দেয় বিভিন্ন রকম ডিসকাউন্ট অফার। খাবারের দিক দিয়ে এই সময় থাই অনেক মজার মজার খাবার চোখে পড়ে যেটা অন্য সময় খুব একটা দেখা যায় না। পুরা ব্যংকক মনে হয় ঝাকানাকা মুডে থাকে সংক্রানের মধ্যে। তবে পুলিশদের কাজ বেড়ে যায়।

ছুটি কাটান বাদ দিয়ে রাস্তাতে এসে বসে থাকা লাগে মাতাল গাড়ি চালক ধরার জন্য। তবে তাদের এতে বাড়তি ইনকামও হয় আমরা যারা বাংলাদেশী আছি ব্যাংককে তাদের তো আরো বেশি মজা হয় এ সময় কারন বাংলাদেশ এম্বাসিতে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান আর সংক্রানের ছুটি দুইটাই এক সাথে পায়। আমি তো পহেলা বৈশাখের এক সপ্তাহ আগে থেকেই রেডি হতে থাকি যে কি পরবো না পরবো। আর এই ছুটির মধ্যে থাইল্যান্ডের কোন এক অন্চল থেকে ঘুরে আসি আমরা কয়েক বাংলাদেশী পরিবার । এবার কিছু নেট থেকে চুরি করা ছবি দেখেন সংক্রানের।

( শর্ত একটাই ছবির মাইয়াগো ফুন নাম্বার চাওন যাইবে না ) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.