আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

থাইল্যান্ডের অর্থ মন্ত্রণালয় বিরোধীদের দখলে

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভকারীরা ব্যাংককে অবস্থিত দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় দখল করে নিয়েছে। রয়টার্স বলছে, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত হাজার হাজার মানুষ মন্ত্রণালয়ের কক্ষ ও বারান্দাগুলোতে মাদুর পেতে অবস্থান নিয়েছে।
এক প্রত্যক্ষদর্শী রয়টার্সকে জানান, বিক্ষোভকারীরা মন্ত্রণালয় চত্বরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে পরে।
দেশটির বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টির কর্মীরা বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিন বছর আগে দেশটিতে ব্যাপক জনবিক্ষোভ হয়।

সে সময় অভিজিত্ ভেজ্জাজিভা নেতৃত্বাধীন ডেমোক্রেটিক পার্টির সরকারকে হটাতে ন্যাশনাল ইউনাইটেড ফ্রন্ট অব ডেমোক্রেসি অ্যাগেইনস্ট ডিকটেটরশিপ (ইউডিডি) বা লালশার্ট বাহিনীর কর্মীরা আন্দোলন করছিলেন। আন্দোলন দমনে সেনাবাহিনী ব্যাপক ও নৃশংস অভিযান চালাতে অন্তত ১০০ মানুষ প্রাণ হারায়।
আজকের বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের দাবি, ইংলাক সিনাওয়াত্রা তাঁর ভাই ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার ছায়া ভিন্ন আর কিছু নয়। ২০০৬ সালের সেনা অভ্যুত্থানে থাকসিন ক্ষমতা হারান এবং দুর্নীতির দায়ে তাঁকে দুই বছরের জন্য কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি সরাসরি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে থাকছেন না, তবে বোনের সরকারের ওপরে তাঁর প্রভাব অসীম।


রয়টার্স জানায়, প্রায় এক হাজার প্রতিবাদী আজ অর্থ মন্ত্রণালয়ের মূল ভবনসহ সাতটি ভবন দখল করে নেয়। সেখানে ঢুকে তারা বাঁশি বাজাতে থাকে। সে সময় মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ছুটে বেরিয়ে যান এবং গাড়ি রাখার কক্ষে আশ্রয় নেন।
বিক্ষোভকারীদের নেতা সুদেব থাকসুবান সমাবেশে বলেন, ‘আমি আজ সবাইকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে রাত যাপনের আহ্বান জানাচ্ছি। ... আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হলো দেশকে থাকসিন শাসন থেকে মুক্ত করা।

’ সাবেক সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রী সুদেব আরও বলেন, ‘আমরা অর্থ মন্ত্রণালয় দখল করেছি যাতে সরকার এর মধ্য দিয়ে অর্থ পাচার করতে না পারে, যেমনটি এর আগে থাকসিন শাসনের সময় দেখা গিয়েছিল। ’
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আশপাশে পুলিশ নেই বললেই চলে। ভবনটির বিদ্যুত্ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ব্যাংককের রামকামহেং বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিশ্লেষক বুনাকিয়াত কারাভেকফান বলেন, ‘এ পরিস্থিতিতে সরকার বল প্রয়োগ করতে পারবে না। যদি করে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে সব নিয়ন্ত্রণ হারাবে।

এখন সরকারের একমাত্র করণীয় হলো, বিক্ষোভকারীরা যা করতে চাইছে তা করতে দেওয়া। ’
ইংলাকের মূল সমর্থক হলো দেশটির উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের দরিদ্র জনগণ। কার্যত এদের ভোটেই তিনি ২০১১ সালে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। ওই নির্বাচনকে ধনীদের ওপরে গরিবদের জয় হিসেবে দেখা হয়। থাইল্যান্ডের সব অভিজাত, সেনা কর্মকর্তা, রাজপরিবারের লোকজন, মধ্যশ্রেণীর আমলা ও কোটিপতি ব্যবসায়ীদের সবাই ডেমোক্রেটিক পার্টির সমর্থক।

এরা ইংলাক ও তাঁর সরকারকে অবিশ্বাস করে।
গত সপ্তাহে ইংলাকের নেতৃত্বাধীন সরকার দেশটির নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কারের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। দেশটির সংসদের সবগুলো আসনে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি ঠিক করার বিধান ছিল সে পদক্ষেপে। কিন্তু দেশটির সাংবিধানিক আদালত সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়।
সংসদের সব পদে সরাসরি নির্বাচন হলে, দেশটির রাজতন্ত্র ও ধনীদের দলগুলো মুশকিলে পড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিপরীতে সুবিধা হবে ইংলাকের দলের। তাই ইংলাককে উত্খাতের চেষ্টা করছে বিরোধীরা।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.