জীবন চলা মানে প্রতিক্ষন জীবনান্তের দিকে এগিয়ে চলা
মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় আপনি সদ্য সৈয়দপুর এসে এখানকার রেলওয়ে ওয়ার্কসপ পরিদর্শন করে গিয়েছেন সেজন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ । এতদিন 'রেল' যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের অধীনে থাকার কারনে তেমন একটা মনোযোগ পায়নি । এখন পৃথক হওয়াতে আশা করা যায় তদারকি এবং জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পাবে ।
এই কারখানাটি বৃটিশ আমলে স্থাপিত তখন তো বটেই পাকিস্তান আমলেও এটা খুব চালু কারখানা ছিলো । বাংলাদেশ আমলের প্রথমদিকেও চালু ছিলো পরে আস্তে আস্তে বসে যায়।
এরজন্য ব্যবস্থাপনা যেমন দায়ী তেমনি গোল্ডেন হ্যান্ডশেক পদ্ধতিও দায়ী । দিনের পরিক্রমায় প্রযুক্তির যেমন অসামান্য উদ্ভাবন ঘটেছে তার সাথে তাল মিলিয়ে যদি এই কারখানার উন্নতি ঘটানো হতো তাহলে এই কারখানাতে ইঞ্জিন বানানো
বা
কোচ বানানো কোন ব্যাপারই ছিলো না । কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা সে পথে হাটিনি ফলে কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়করে বিদেশ থেকে ইঞ্জিন ও কোচ আমদানীর উপর রেল চলাচল নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে এবং খুচরা যন্ত্রপাতির জন্য বিদেশ মুখাপেক্ষিতা বৃদ্ধি পেয়েছে । এতে ক্রয় খাতের কমিশন ব্যবসায় ব্যক্তি বিশেষ লাভবান হলেও দেশ লুজার হয়েছে এবং এই কারখানায় নূতন নূতন কর্মসংস্থানের সুযোগ নষ্ট হয়েছে ।
আপনার হাতে সময় কম তারপরও আপনাকে অনুরোধ করবো সৈয়দপুর কারখানা, পার্বতীপুরের ৩টি কারখানা, চট্টগ্রামের পাহাড়তলীর কারখানা এবং বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যক্টরীর সমন্বয়ে এমন একটা চেইন কারখানা সিষ্টেম গড়ে তোলার উদ্যোগ নিন যাতে নূতন ইঞ্জিন ও কোচ উৎপাদন করা যায়,মেরামত করা যায় এবং নির্দিষ্ট সময়ান্তরে প্রয়োজনীয় রক্ষনাবেক্ষনের কাজ সম্পন্ন করা যায় ।
এজন্য দরকার হলে বুয়েটের শিক্ষক ও দেশের প্রকৌশলীদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে তাদের সুপারিশ গ্রহন করা যায় এবং দেশী বিদেশী বিনিয়োগকারীর যৌথ উদ্যোগ বা আর কোন উপায়ে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা যায় । প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে দেশের প্রকৌশলীদের বিদেশে প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা যায় । ( এ প্রসঙ্গে একটি শোনা কথার উল্লেখ না করলেই নয় বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরী স্থাপন করা হয়েছিলো টুলস ম্যানুফেকচারের জন্য মেশিন গুলি ছিলো সুইজারল্যান্ডের তখনকার সময়ের অত্যাধুনিক । সেগুলো পরিচালনার প্রয়োজনে প্রকৌশলীদের বিদেশে ট্রেনিং এর জন্য পাঠানো হয়েছিলো তারা ট্রেনিং নিয়ে আর ফিরে আসেনি ফলে BMTF আর সেভাবে উৎপাদনে যেতে পারেনি । সুতরাং একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কঠিন নিয়মে বেধে তারপর তাদেরকে পাঠাতে হবে ।
যেমন ফিরে না এলে স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা পাসপোর্ট বাতিল করা দেশের আত্নীয় স্বজনদের উপর চাপ সৃষ্টিকরা ইত্যাদী ইত্যাদী । কারন গরীব দেশের জনগনের ট্যাক্সের পয়সায় ট্রেনিং নিয়ে ফিরে না আসাটা দেশের সাথে বিশ্বাসঘাতকতার সামিল )
রেল পরিবহন সস্তা ও পরিবেশ বান্ধব কারন একটা ইঞ্জিন অনেক কোচ বহন করতে পারে আমাদের দেশে রেলের চাহিদা ব্যপক।
অথচ আমরা উল্টো রাস্তায় হেটে অনেক শাখা রেল পথ বন্ধ করে দিয়েছি । এগুলো পুনরায় চালু করার ব্যবস্থা নিন । এসব লাইন যখন স্থাপন করা হয় তখন জনসংখ্যা সম্ভবত ৩/৪ কোটি ছিলো এখন ১৬ কোটির দেশে তো আরও রেল বসানোর কথাছিলো ।
বিদেশে রেলের কোচের ভিতরের দৃশ্য, এগুলো আমাদের জন্য স্বপ্ন ।
আমরা স্বপ্নের জাল বুনে যেতে চাই । আপনাদের দায়িত্ব আমাদের স্বপ্নগুলি বাস্তবায়ন করা । ধন্যবাদ ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।