ইন্টারনেট আসক্তি মানুষের মস্তিষ্কে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সাধন করে। এই পরিবর্তন মাদক বা অ্যালকোহল সেবনে যেমনটি ঠিক সেরকম। সম্প্রতি একদল বিজ্ঞানী এক গবেষণায় এই বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেছেন।
চীনের এক দল বিশেষজ্ঞ ইন্টারনেট আসক্ত ১৭ জন তরুণের মস্তিষ্কে এধরনের বিকৃতি দেখতে পেয়েছেন। বিজ্ঞান সাময়িকী প্লোস ওয়ানে তাদের এই গবেষণা প্রতিবেদেন প্রকাশ করা হয়েছে।
এই পর্যবেক্ষণের ফলে আসক্ত ব্যক্তিদের আচরণ বুঝতে নতুন দিগন্ত খুলে দেবে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট গবেষকরা।
ইন্টারনেট আসক্তি এক প্রকার স্বাস্থ্যগত বিকার। অনিয়ন্ত্রিত ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে এই বৈকল্য দেখা দিতে পারে।
চীনের উয়ানে চাইনিজ অ্যাকাদেমি অব সায়েন্সের অধ্যাপক হাও লেই’র তত্ত্ববাধানে এই গবেষণাটি করা হয়। গবেষণা দলটি মোট ৩৫ জন তরুণ-তরুণীর যাদের বয়স ১৪ থেকে ২১ বছরের মধ্যে তাদের মস্তিষ্ক স্ক্যান করেছেন।
এদের মধ্যে ১৭ জনের মধ্যে ইন্টারনেট অ্যাডিকশন ডিসঅর্ডার (আইএডি) ধরা পড়েছে। আর এটা বুঝতে তাদের বেশ কিছু সরল প্রশ্ন করা হয় যার উত্তর হ্যাঁ অথবা না এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। যেমন তাদের জিজ্ঞেস করা হয়, ‘আপনি কি ইন্টারনেট ব্যবহারে নিয়ন্ত্রিত হতে, মাঝপথে উঠে আসতে বা নিজেকে একেবারে বিরত রাখার চেষ্টায় প্রায়শই ব্যর্থ হন?’
বিশেষায়িত এমআরআই ব্রেইন স্ক্যানে দেখা গেছে, তাদের মস্তিষ্কের সাদা অংশে পরিবর্তন হয়েছে। ওই অংশটিতে যে স্নায়ু তন্তু রয়েছে সেগুলোই ইন্টারনেট আসক্তির বৈশিষ্ট্য নির্দেশ করছে। স্বাভাবিক মস্তিষ্কে এমনটি থাকে না।
মস্তিষ্কের যে অংশটি আবেগ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং আত্মনিয়ন্ত্রণের সঙ্গে সম্পর্কিত সেই অংশের সঙ্গে স্নায়ুতন্তুর যোগাযোগে একটা বিঘ্ন ঘটার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
ড. হাও লেই এবং তার সহকর্মীরা প্লোস ওয়ানে লেখেন, ‘সর্বোপরি আমাদের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, আইএডি আক্রান্ত মস্তিষ্কে কিছু অংশে অস্বাভাবিক সাদা অংশ রয়েছে। মস্তিষ্কের ওই অংশটিই মানুষের আবেগ উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণ, কোনও কিছুতে মনোসংযোগ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং জীবনবোধ সম্পর্কিত নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে জড়িত। ’
গবেষণার ফলাফলে আরও দেখা যায়, অন্যসব আসক্তির কারণে সৃষ্ট মানসিক স্বাস্থ্য এবং স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতির সঙ্গে আইএডি যুক্ত হয়ে সমস্যা আরও জটিল করে ফেলতে পারে।
এদিকে লন্ডন কিংস কলেজের অধ্যাপক গুন্টার শুমান ভিডিও গেমসে আসক্তির কারণে মস্তিষ্কে একই ধরনের বিকৃতি দেখেছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।