আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্যালুট ভিকারুন্নেসা স্কুলের ছাত্রী বোনদের প্রতি

গ্রাম-প্রকৃতি-সবুজ-সারল্য যেখানে মিলেমিশে একাকার, সেখানে ফিরে যেতে মন চায় বার বার। তোমরা আমাদের বোন-কন্যা। তোমাদের উদ্দেশ্যে আমাদের মনের অভিব্যক্তি কিভাবে প্রকাশ করবে বুঝতে না পেরে শেষ পর্যন্ত একটা স্যালুট জানানোকেই উপযুক্ত বলে মনে করলাম। এটা যদি কম বলে তোমাদের কাছে মনে হয়ে থাকে তাহলে অন্তত এটা ধরে নিও যে, যে সাহসিকতা ও আপোসহীনতার নজির তোমরা দেখিয়েছো তার প্রতি আমাদের মনের শ্রদ্ধাবোধ কোন অংশে কম নয়। যে কাজটা আমরা করতে পারতাম না, করতে পারিনি কখনও সেই কাজটা তোমরা অবলীলায় করে দেখিয়েছো।

তোমারা দেখিয়েছো যে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জন্য শুধু দরকার সৎ সাহস ও সকলের সম্মিলিত অবস্থান। যার কারণে পরিমল এর মতো ঘৃণ্য অপরাধী আজ জেলে। আর তাকে আশ্রয় ও প্রশ্রয় দেয়ার চেষ্টা যারা করেছিল তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ভিকারুন্নেসা স্কুলের আমাদের ছোট ছোট বোন ও মেয়েদের এ এক অভূতপূর্ব জয়। যদি ভিকারুন্নেসার ছাত্রীরা ঐ সময় আপোসহীন মনোভাব নিয়ে আন্দোলনে না নামত তাহলে পার পেয়ে যেত পরিমল, লুৎফুর রহমান ও হোসনে আরার মতো অপরাধীরা।

এদের দ্বারা দিনের পর দিন সংঘটিত হতো আরও নানা অপরাধ। আরও অনেক কোমলমতি ছাত্রীর সম্ভ্রমহানি হতো এদের দ্বারা। ভিকারুন্নেসার ছাত্রীদেরা প্রতিবাদী কন্ঠ শুধু তাদের সহপাঠীর উপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে কাজ করেছে তাই নয়। ভবিষ্যতে এই ধরনের অপরাধ সংঘটনের পথকেও অনেকটা রুদ্ধ করে দিয়েছে। আর সবচেয়ে বড় কাজটা করেছে আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে, অন্যায়কে মুখ বুজে মেনে নিতে হয়না।

সাহসিকতার সাথে অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে অপরাধীদের শাস্তি হতে বাধ্য। আর ঠিক এখানটাতে দাঁড়িয়ে আমি ভিকারুন্নেসা স্কুলের আমাদের ছোট ছোট বোন ও মেয়েদের প্রতি সশ্রদ্ধ স্যালুট জানাচ্ছি। অপরাধীদের শাস্তি কি হবে তা আমরা জানি না। মহামান্য আদালত তা নির্ধারণ করবে। কিন্তু আজ এই ভেবে শান্তি পাচ্ছি যে দোষীদের আইনের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।

আমরা চাই যে কোন ধরনের শক্তির তৎপরতাকে অগ্রাহ্য করে হোসনে আরা ও লুৎফুর রহমানকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হোক। হোসনে আরা একজন শিক্ষক, একজন মা, সর্বোপরি একজন নারী। কি করে তার কন্যাসম একজন ছাত্রীর উপর সংঘটিত নির্যাতনকে আড়াল করে অপরাধীকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেন তিনি ভাবতেও অবাক লাগে। পরিমলদের নখর থাবার শিকার হয়ে ছাত্রীরা তাহলে আশ্রয় চাইবে কার কাছে ? ছাত্রীদের নিরাপত্তা কোথায় যদি অভিভাকরূপী একজন শিক্ষয়ত্রী হয়ে উঠে সেই নখর থাবার আশ্রয়স্থল ? ভিকারুন্নেসার কোমলমতি ছাত্রীরা তাই দেখিয়ে দিয়েছে পরিমলদের মতো পশুদের নখর থাবা আর তাদের আশ্রয়দানকারীদেরও রক্ষা নেই। আমরা আশা করব আইন ভিকারুন্নেসার ছাত্রীদের সেই সৎ ও দৃঢ় মনোবলের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে দোষীদের জন্য উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করবে।

যাতে ভবিষ্যতেও এই ধরনের প্রতিবাদের জন্য নিজেদের সাহসিকতাটুকু ধরে রাখতে পারে এরা। আমরা আর কিছু না পারি এদের এই সাহসিকতা ও আপোসহীনতার প্রতি মানসিক সমর্থন ও শ্রদ্ধাবোধ তো দেখাতে পারি । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।