আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কাঁদল ছাত্র,কাঁদল শিক্ষক। কুয়েট(পর্ব-১)

এবার তোরা মানুষ হবি facebook.com/tabassumDorshon কুয়েটে ঘটে যাওয়া তান্ডবের কিছু বর্ননা শুনলাম। শুনে নিজের চোখের পানি আটকিয়ে রাখতে পারলাম না। আমার মনে হয় কেউ যদি মানুষ হয় সে না কেদে পারবেনা ছাত্রলীগের এই হামলার বর্ননা শুনে। আমি আমার আগের পোষ্টে কিছু বর্ননা দিয়েছি। সাধারণ ছাত্রদের যেভাবে মারা হল তা মন কুয়েট ,কুয়েটের ছাত্রদের, শিক্ষক, কর্মচারী, আশেপাশের এলাকার লোকজনের কাছে কল্পনাতিত ছিল।

ছাত্রদের বাচাতে না পেরে ছাত্রদের সামনে কাদলো শিক্ষকরা। স্বাধীনতার ৪০ বছর পর আবারো পুলিশের হাতে মার খেতে হল নিরিহ ছাত্রদের,শিক্ষকদের। যাদের নামে মামলা করা হয়েছে সেই সব স্যারদের আগে বর্ননা দেইঃ আরিফ স্যার(গনিত বিভাগ)ঃ তিনি কুয়েট প্রতিষ্ট হওয়ার পর ছাত্রকল্যানের প্রধান ছিলেন একসময়। সে সময় কোন দলের কেউ কোন আপরাধ করে পার পাবে এমন সম্ভব ছিলনা। তিন সত্য বলতে সব সময় আপোষহীন।

এখন তিনি কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী তাকে আহত করেছেন। এখনো তিনি হাস্পাতালের বেডে শুয়ে আছেন। তার পরেও ক্ষান্ত হয়নি সন্ত্রাসীরা। অন্যায় ভাবে , তাকে আপদস্ত করার জন্য মামলা দিয়েছে জানোয়ার গুলা।

ডঃ মুহাম্মদ মাসুদ স্যারঃ ক্যাম্পাসের সকল ছাত্রদের পছন্দের ব্যাক্তি। তিনি এখন যন্ত্রকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান। স্যারের সম্পর্কে কি বলব ভেবে পাছিনা। তিনি যে কুয়েট ক্যাম্পাসের ছাত্র-ছাত্রীর কাছে কতটা শ্রোধার পাত্র তা ক্যাম্পাসের যে কোন ছাত্র,শিক্ষক,কর্মচারী কে জিজ্ঞাসা করলে বুঝতে পারবেন। অনেক ছাত্র আছে যারা তাকে কখন দেখেওনি তারাও শুধু নাম শুনে, গল্প শুনে শ্রোদ্ধায় মাথা নিচু করে।

এমনই একজন ব্যাক্তি তিনি। যন্ত্রকৌশল বিভাগের এমন কোন প্রোগ্রাম হয়নি যেটাতে তার পকেট থেকে কিছু যায়না। যেকোন বিভাগের ছাত্ররা যে কোন সমস্যায় তাকে পাশে পেয়েছে। এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবেনা, না বর্তমানের না পুরাতন ছাত্র। এই স্যারকেও ছাত্রলীগ , যুবলীগের সন্ত্রাসীরা অপমান করেছেন।

ছাত্রদের বাচাতে যাওয়া তুষার স্যারকে মারছে দেখি তিনি দৌড়ে গিয়ে বলেছিলেন “সে ছাত্র নয়, সে আমাদের ডিপাটমেন্টের শিক্ষক” । তখন সন্ত্রাসীরা “কিসের শিক্ষক মার”বলে তাকেও মারে। তিনি মোবাইল হাতে ধরে ছিলেন। সন্ত্রাসীরা হাত থেকে মোবাইল নিয়ে ভেজ্ঞে ফেলেছে। ডঃ এ এন এম মিজানুর রহমানঃ তিনি এনার্জি টেকনোলজির প্রধান।

কুয়েট থেকে পাশ করেছে “মিজান স্যার”কে চেনে না, নাম শুনেনি এমন হতেই পারেনা। সেশন জোট মুক্ত ক্যাম্পাস রাখার জন্য শুক্রবার কি আর শনি বার কি সব সময়ই ক্লাস নেয়ার জন্য তৈরি। এটা যদি খারাপ হয় , তিনি খারাপ মানুষ। এটায় তার আপরাধ। এই জন্যই তিনি ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের চোখর বিষ হয়ে দাড়ালেন।

তিনি যখন অমর একুশে হলের প্রোভোষ্ট ছিলেন তখন ছাত্ররা পড়ছে, নাকি আড্ডা দিচ্ছে। এটা দেখার জন্য রাতের বেলাতে ছুটে আসতেন। রুমে রুমে গিয়ে ছাত্রদের খোজ নিতেন। ডঃখন্দকার আততাব আহম্মেদঃ তিনি যন্ত্রকৌশলের বর্তমান ডীন। তিনি যখন ছাত্রকল্যানের প্রধান ছিলেন তখন কুয়েট রাজনীতি মুক্ত করার জন্য বলিষ্ঠ ভুমিকা রেখছেন।

নিজে বিএনপি পন্থি থাকলেও ছাত্রদলের ছেলেদের কখনো ছাড়দেননি। রাজনীতি মুক্ত কুয়েট তারই ফসল ছিল। আজ যেটা কল্পনা হয়ে গেছে। এবার বলি ভিসি সাহেবের কথাঃ ডঃমুহাম্মদ আলগীরঃ তার সম্পর্কে কিছু বলার নাই। সবই সবাই জানে।

কারো মনে হয় বুঝতে বাকি নেই তিনি কেমন মানসিকতার লোক। তিনি ভিসি হয়েছেন রাজনৈতিক সাহাজ্য নিয়ে। তার সামনে ৮-১০ জন সিনিয়র শিক্ষক ছিলেন যারা ভিসি হবার যোগ্য ছিলেন। তিনি নেতাদের সাথে লিয়াজো করে,তাদের টপকিয়ে ভিসি হয়েছেন। তিনি ভিসি হওয়ার ৩০ মিনিটের মাথায় ২টি নোটিশ পড়েছিলেন সবাই।

এক “মুক্ত চিন্তার বিকাশের জন্য রাজনীতি উম্মুক্ত করা হল”। দুই “ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদি ও সাধারন সম্পাদক অভ্র এর ৬মাসের বহিস্কার আদেশ বাতিল করা হল(নোটিশের ছবি পেলে উপলোড দিব)”। যদিও কুয়েটের মুখ উজ্জল করে তার কিছুদিনের মাথায় মেহেদি মদ্যপান করে মারা যায়(কুয়েটে মদ্যপানে মারা গেল ছাত্রলীগ সভাপতি লিখে সার্চ দিলেই পাবেন)। তারা বহিস্কার হয়েছিল স্যারদের সাথে খারাপ ব্যাবহার করা ও হলে হলে ঢুকে ছাত্রদের মারার অভিযোগে। যাই হক ভিসি সাহেবের উদ্দেশ্যে বলি “ আপনি ছাত্রলীগের ছেলে গুলো ছাড়া একজন ছাত্র-ছাত্রী ও বের করতে পারবেন না।

যে আপনাকে শ্রোদ্ধা করে”। কিছু দিন আগে আপনি ষড়যন্ত্র বলে “ছাত্রী হয়রানির” বিচার করেননি। লোক দেখানো বিচার করে ছেড়ে দিয়েছেন ছাত্রলীগের ছেলেদের। আপনার মেয়ে যদি সেদিন এই হয়রানির শিকার হত , তখন কি করতেন?? আপনি পুলিশ লেলিয়ে মার খাইয়েছেন সাধারন ছাত্রদের। যেখানে অন্যান্য স্যাররা পাগল হয়ে গিয়েছিল ছাত্রদের বাচানোর জন্য।

শেষে না বাচাতে পেরে কান্না ভেঙ্গে পরেছিল স্যাররা। আপনি আপানার দলের সন্ত্রাসী লেলিয়ে মার খাইয়েছেন আমাদের ছাত্রদের স্যারদের। আপনাকে পুলিশ আনার জন্য স্যাররা বললেও আপনি পুলিশ এনেছিল ছাত্ররা মার খাওয়ার পরে। আর সে পুলিশ ও আবার আপনারই আদেশে সাধারন ছাত্রদের মেরেছে, ছাত্রলীগের সসস্ত্র সন্ত্রসীদের রেখে। সবই আপনি করেছেন শুধু আপনার ক্ষমতার লোভে।

আপনি যদি আমাদের ভিসি হন, আপনি যদি শিক্ষক শব্দটার অর্থ বোঝেন, তাহলে বুয়েটের মত সন্ত্রাসীদের বিচার করে দেখান। আমি জানি আপনি দেখানে পারবেন না। কারন আপনি একটা লীগের পা চাটা কুত্তা। আপনি বলেছিলেন “২৪ ঘন্টার মধ্যে বিচার করবেন, পরে দিন যখন ছাত্রলীগ হামলা করল। ছাত্ররা আপনার কাছে গেল।

আপনি বললেন “আগের কথা ভূলে যাও, আমি এসব বলিনি”। তাহলে আপনার উপর ছাত্ররা ক্ষেপবে না কেন? আপনি ষড়যন্ত্র ষড়যন্ত্র বলে নিজেকে বাচাতে চাইছেন। কিন্তু সত্যত তা না। সত্য হল সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা আপনার , আপনার পোষা কুত্তাদের অত্যাচারে অতিষ্ট। আপনি বলেছেন ছাত্রদল-শিবিরের ছেলেরা এটা করেছে।

আপনি , আপনার ছাত্রলীগের , আপনার আওয়ামীলীগের ছেলেদের নিজের মন কে প্রশ্ন করেন “ছাত্রদল-শিবির”এর কোন ছেলে গোলমালের নেতৃত্ব দিয়েছে কিনা? উত্তর একটাই আসবে “না”। এটা আপনি ভাল ভাবেই জানেন। শুধু ক্ষমতার লোভে আপনি এটা অস্বীকার করবেন, এটাও সাধারন ছাত্ররা খুব ভাল্ভাবে জানে। আপনি যে একটা নির্লজ্জ লোক এটা কে জানেনে? আমি যদি আপনার মেয়ে হতাম আপনার মুখে থু থু ও দিতাম না। জানিনা আপনার মেয়ে আপনার মুখে থু থু দেয় কিনা।

আপনাকে বলার আর আমার কিছু নাই। স্বাগতম আপনাকে যে আপনি এত কিছুর পরেও ভিসি আছেন। আপনি ভিসি হিসাবে সার্থক!!!!!!! ডঃ শীবেন্দ্র শীখর সিকদারঃ পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান। আপনাকে স্যার বলতে পারছিনা বলে দুঃখিত। আপনাকে স্যার বললে, দেশের সব স্যারদের মনে হয় আপমান করা হবে।

আপনি নিজেই বলেন , আপনাকে আপানার সামনে ছেলেরা কি বলে গালিদেয়। আপনি কি তার পরেও বোঝেন না আপনার অবস্থান কোথায়? আপনাকে কেন শিক্ষক হিসাবে কুয়েটে রেখেছে বুঝিনা। আপনার কাছে শেখার কি আছে? আপনি ত স্বাধীনতার আগের চোথা এখন ও পড়ান। কোন পরিবর্তন ছাড়াই ৪০ বছরের ছাত্র রা একই লেকচার শুনে যাচ্ছে। আর আপনার মত অপদার্থ কি করে পদার্থ বিজ্ঞানর প্রধান হয়? আপনি কি করে ছাত্র কল্যানের প্রধান হন? ছাত্রদের সাথে আপনার কোন সম্পর্ক আছে? আছেত শুধু ছাত্রলীগের ১০টা ছেলের সাথে ।

আপনাকেত ছাত্রলীগের ছেলেরায় অপদার্থ বলে। আপনাকে ছাত্ররা এটকিয়ে রাখল, ছাত্রীদের হলে ছাত্রীরা আটকায়ে রাখল। এতবার ছাত্রদের হাতে লাঞ্চিত হয়েও আপনার সামন্য লজ্জা হল না। আসলেই আপনি একটা নির্লজ্জ, বেহায়া। আপনাকে নিয়ে আমি আর কিছু বলবনা।

তুষার স্যারঃ ‘০৪ ব্যাচ যন্ত্রকৌশল থেকে পাশ করে একই বিভাগে যোগদান করেছেন। অনেকের পছন্দদের বড় ভাই, অনেকের পছন্দের স্যার তুষার স্যার। জুনিয়র টিচার হলেও তিনি ডিপাটমেন্টের ছাত্র-ছাত্রীর ভালবাসার পাত্র। ট্রেনে এক ভাই বলল, “০৮ ব্যাচে তার নাকি একটা বিষয়ে ২০ টা ক্লাস নেয়ার কথা থাকলেও নিয়েছিলেন ৩৬টা, তার পরেও নাকি ছাত্র-ছাত্রী তার ক্লাসে কখন বিরক্ত বোধ করত না”। হলে মারামারি হচ্ছে শুনে যেসব স্যার ছাত্রদের বাচাতে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি তার একজন।

একজন ছাত্রকে চাপাতির কোপ দিচ্ছে দেখে তিনি দৌড়ে তার কাছে গেলেন। বিনিময়ে তাকেও মার খেতে হল। সাথে মার খেল মাসুদ স্যার, কোয়েল স্যার। কিন্তু তার পরেও মারের হাত থেকে বাচাতে পারলেন না ছাত্রটিকে। ছাত্রদের সামনে চোখগড়িয়ে পানি ঝরালেন স্যার।

কাদল পাশে থাকা ছাত্ররাও। ছাত্ররা কাদল স্যারদের এ অবস্থা দেখে। তিনি ডিপার্টমেন্টে ফিরেই চাকরি থেকে অব্যহতি দিলেন। আর কান্না জড়ানো কন্ঠে নাকি বলে ছিলেন “ যে চাকরি করে আমি আমার ছাত্রকেই বাচাতে পারলাম না ,আমার সামনে আমার ছাত্ররা মার খেলে, করব না সে চাকরি। আপনাদের যদি করার ইচ্ছা থাকে করেন , আর প্রতিবাদ করার সহস থাকলে ছেড়েদেন”।

স্যার দুঃখিত আমারা আপনার পাশে থাকে পারিনি। আমাদের বন্ধু,বড় ভাইদের সামনে আপনি অপমানিত হলেন। আমরা কিছুই করতে পারলাম। কিন্তু এটুকু বলছি, স্যার আমরা আপনাকে অনেক ভালবাসি, অনেক শ্রোদ্ধা করি। জানোয়ার দের কথা ভুলে যান।

আপনি আবার যোগদান করেন। এই স্যারে গায়ে হাত তুলে ছিল ’১০ ব্যাচের ইসিই ডিপাঃ এর ছাত্রলীগের জানোয়ার “শুভ”। শুভ তোর বাবা কি তোকে বাড়িতে রেখেছে? তোর মা কি তোকে এখন ও রান্না করে খাওয়াই। হয়ত তারা জানেই না তার ছেলে কত বড় জানোয়ার। স্যারের গায়ে হাত তুলে বাড়ি ফিরেছে।

ডঃআজিজ স্যারঃ কেমিষ্টি ডিপাটমেন্টের প্রধান। আগেই বলে নেই, স্যার তাবলীগ করেন। পায়জামা পাঞ্জাবি পরে থাকেন। তিনিও গিয়েছিলেন অমর একুশে হলে। ছাত্রলীগ যুবলীগের ছেলেরা ধাওয়া দিলে তিনি মাটিতে পরে যান।

কুত্তা গুলো মাটিতে পরা স্যার কে পিটালেন। তিনি আবেগ জড়ানো কন্ঠে ভিসি কে কল দিয়ে বলেছিলেন “স্যার আপনাকে যে পুলিশ পাঠাতে বললাম পুলিশ কোথায়? আপনি আমাদের ছেলেদের আমাদের যে ভাবে লাঞ্চিত করলেন। আপনার উপর আল্লাহর গজব পরবে”। স্যার আপনার দোয়া কবুল হক। এছাড়াও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা অপমান করেছে বায়োমেডিকেলে হেড ডঃ মহিউদ্দিন স্যার, তড়িত কৌশল বিভাগের ডঃ রফিক স্যার কে।

[/sb ছাত্রদের বাচাতে গিয়ে শহীদ হওয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডঃ শামসুজ্জোহা কে নিয়ে আমরা মাতামাতি করি। কিন্তু হাজারও জোহা যে এই বাংলায় এখন ও মারখাচ্ছে তার বিচার ও চাই না। সেই সময় ডঃজোহা কে দেখিনি। তবে এখন মনে হচ্ছে জীবন্ত জোহা আমার ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে ,আমরা খেয়াল ও করছিনা। [/si কুয়েটের আরেক সপ্ন দ্রষ্টা ডঃহাশেম স্যারের ও কুয়েটের কিছু ছাত্রের প্রতিক্রিয়া।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।