এবার তোরা মানুষ হবি facebook.com/tabassumDorshon কুয়েটে ছাত্রলীগের হামলা আজ প্রথম না। একদিনে এতটা খারাপ কখন হতে পারে না , এটা আমরা সবাই বুঝি। সব ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের দোষ দিয়ে পার পাওয়া যাবেনা। কুয়েটের এ অবস্থার পিছনে আমরা সবাই কম বেশি দায়ী। একটু অতীত ঘুরে আসি।
কুয়েটের সাবেক ভিসি, হাশেম স্যারের একটা কথা মনে হল। স্যার আমি জানি আপনি এটা পরছেন। স্যার আপনি লিখেছেন"KUET is not built in a day, but...."। স্যার আপনার কিন্তুটার অর্থ আমি বুঝিনি। আপনি যদি বলেন কুয়েট একদিনে ধ্বংস হয়েছে।
আমি বলব না, কুয়েট একদিনে ধ্বংস হয়নি। সর্বশেষ এ হামলা ছিল দীর্ঘদিনের প্রতিবাদ হীনতার, অন্যায়ের বিচার না করার ফল। স্যার আমরা জানি কুয়েট প্রতিষ্ঠার পিছনে আপনাদের পরিশ্রম ছিল। আজ আপনাদের স্বপ্নের কুয়েট এ আবস্থা আপনার কষ্ট পাচ্ছেন। স্যার আপনার কি মনে হয় , আমরা এই কুয়েটের নাম শুনে ভর্তি হয়েছিলাম? না স্যার হইনি।
কুয়েটে এমন কিছু হবে আমরা কল্পনাও করিনি।
স্যার কুয়েটত ধ্বংস হতে শুরু করেছিল অনেক আগেই। স্যার আপনি আমার চেয়ে ভাল বলতে পারবেন। আপনি বলেন স্যার এই কুয়েটে কি হয়নি? এই কুয়েটে একজন শিক্ষক চায়নি, সে ছাত্র পাশ করে যেতে পারেনি। স্যার আপনারা লঘু পাপে ছাত্রদের গুরু দন্ড দিয়েছেন।
শাস্তি শুধু ছাত্রটিকে না , শাস্তি দিয়েছেন তার পরিবার কে, আত্নীয় স্বজন কে । স্যার শুধু আপনাকে না, সব স্যার কে বলছি। এই কুয়েটে আপনারা যা চেয়েছেন, তাই করেছেন। পরপর দুই দিন ক্লাস না করার অপরাধে ফাইনাল পরিক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি। স্যার আপনাদের "স্যরি " শব্দটা অপছন্দ ।
তাই আবেদন পত্রে একটা ভূল বাক্য লিখে "স্যরি " বলার অপরাধে থিসিস শেষ করতে দেয়া হয়নি। ৬ মাস পরে পাশ করে বের হতে হয়েছে ছাত্রটিকে। পরিক্ষা হলে ঢুকে খাতা ছিড়ে বের করে দিয়েছেন ছাত্রদের। স্যার এসব আমি খারপ বলছিনা। আপনার যদি এত কিছু পারেন, তাহলে আজ আপনার কোথায়? কোথায় আপনাদের সেই আগের স্পিরিট ? নেই স্যার নেই! সব শেষ হয়ে হয়ে গেছে।
আজ ৩ থেকে ৪ জন শিক্ষকের কাছে আপনারা হেরে গেছেন। স্যার আপনার আগের বিচার করতে পেরেছেন কারন তারা সবাই সাধারন ছাত্র ছিল। তারা স্যার ক্ষমা পাবে কেন বলেন স্যার? তাদের তো বড় বড় নেতা নেই। সাধারন ছাত্র মানেই "দূর্বল"। স্যার আপনারা এখনো খোজ নিয়ে দেখবেন।
মাসের পর মাস হল ডিউজ না দিয়ে অনেকে ঠিকই কোর্স রেজিষ্টেশন করছে। কিন্তু আপনাদের এই নিয়মে জরিমানা গুনছে সাধারন ছাত্ররা। তারা কখন মাফ পায় না।
স্যার ছোট বেলা থকে পড়ে এসেছি, শিখে এসেছি"বড় হয়ে মানুষ হব"। স্যার আপনারা প্রথম শিখিয়েছেন "মানুষ না ইঞ্জিনিয়ার হতে"।
না স্যার আমরা শুধু ইঞ্জিনিয়ার হতে কুয়েটে আশিনি,আমার মা-বাবা পাঠায়নি। আমরা মানুষ হতে চাই। আমরা ন্যায় অন্যায় চিনতে চাই, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে চাই, আমরা অন্যাইয়ের বিচার চাই। যেদিন রুমে রুমে ঢুকে মেহেদি,অভ্র সাধারন ছাত্রদের মারছিল । সেদিন যদি তাদের আজীবন বহিঃস্কার করতেন তাহলে আর আজ এমন আবস্থা হত না।
সে দিন যে স্যাররা প্রতিবাদ করেছিল, আজও তারাই প্রতিবাদ করছে। বিনিময়ে তারা কি পেয়েছে? হ্যা পেয়েছে, ছাত্রদের কাছ থকে আপমান, সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে মার, আর ভিসি সাহেবের প্রেসার, মামলা। কেন স্যার আপনার সবাই প্রতিবাদ করতে পারেন না? এই "কেন" এর উত্তর করতে না পারলে। স্যার শিক্ষকতা না করে অন্য চাকরি করেন । আর আমাদের ও ছুটি দিয়েদিন।
এভাবে ইঞ্জিনিয়ার হয়ে কি করব? শুধু শুধু দেশের কোটি কোটি টাকা খরচ!!!!
স্যার এই শিবেন বাবুর বিপক্ষে ছাত্ররা আজ না , আজ থেকে ৮-১০ বছর আগেও অভিযোগ করেছিল। শিবেন বাবু সে সময়ও ছাত্রলীগকে সংঘঠিত করার জন্য ক্যাম্পাসের বাইরে মিটিং করত । পরে ছাত্রলীগের এলাকার ছেলেদের সাথে বিএইটি,খুলনার ছেলেদের গোলমাল হলে, শিবেনকে ছাত্ররা আটকে রেখেছিল। তাহলে স্যার কুয়েটে এটা নতুন কি?
২০০৯ এ মেহেদি - অভ্র এর নেতৃত্বে হলে হলে হামলা হল। সব হলের প্রোভোষ্ট চাকরি থেকে অব্যাহতি দিল।
সে সময়ের ভিসি মাত্র ৬ মাসের জন্য বহিঃস্কার করলো আবর্জনা দুটিকে।
ছাত্ররা প্রশাসনিক ভবন ঘিরে রেখেছিল রাজনীতি নিষিদ্ধ করার জন্য। করা হল না। বরং যারা সামনে ছিল তাদের ডেকে ডেকে দমক দিয়ে বিদায় করে দেয়া হল আর বলা হল এটাত UGC এর ব্যাপার । আমরা চেষ্টা করব।
চেষ্টার কচুটা করা হয়েছিল তা খুব ভাল করেই বোঝতে পারছি।
হলের সিটের জন্য আন্দোলন হল । লাভ কি হল?
এর পর মার খেলে সোহাগ নামের এক ভাই, আন্দোলন করল শুধু ম্যাকানিকাল ০৮ এর ছেলেরা। পরে ইলেক্ট্রিকাল ও সিএসই যোগ দিয়েছিল। তখনও বহিরা গত দের অনুপ্রবেশ বন্ধের কথা বলা হয়েছিল ।
কিন্তু এটাও করা হল না।
কিছুদিন পরে ছাত্ররা পরিক্ষা পিছানোর আবেদন করল। বলা হল বিশ্বকাপ খেলা তাই পরিক্ষা ৭ দিন পিছানো হউক। কিন্তু স্যার আপনার পরিক্ষা পিছালেন না। ঠিক পরিক্ষার ২-৩ দিন আগে ছাত্ররা প্রশাসনিক ভবন, ইঞ্জিনিয়ারিং অফিস ভাংচুর করলো।
ক্যাম্পাস বন্ধ করে দেয়া হল। আমার পিছায়ে গেলা দেড় মাস। যা এখনো কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি।
কিছুদিন পরে বদলে গেলন ভিসি, বদলে গেল ক্যাম্পাস। ফিরে আসল আবর্জনা।
কয়েক দিনের ভিতরেই গন্ধ ছরিয়ে পরল হলে হলে।
তার পরে শুরু হল একটা পর একটা হলে ছোট খাট মারামারি। প্রথমে বন্ধ হল অন্যান্য দল গুলি। পরে বন্ধ হয়ে গেল সাধারন ছাত্রদের কথা বলা। প্রতিদিনই শুনা যেত এই হলে একজন কে মারা হয়েছে , পরের দিন আরেক হলে।
কয়েক মাসের মাঝে মদ খেয়ে মারা গেল মেহেদি,। তখন হলে হলে নতুন প্রস্ততি কে হবে পরবর্তী সভাপতি। ও এখনি বলে নেই, কিছু দিন আগে খুলনার মেয়র এসে কুয়েটে মেহেদির একটা মনুমেন্ট উদ্ভোধন করেছেন। ভাবতে ভালই লাগে আমরা মদ খোড়কে মডেল ধরেছি।
এরপরে ক্যম্পাসে নতুন নতুন নেতারা আলাদা আলাদা গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কুয়েট ধবংসে মেতে ওঠে ।
যার শেষ পরিনতি .........৩ জানুযারী।
রশিদ '০৭ ব্যাচ, ম্যাকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের ছাত্র। ছাত্রলীগের এ হামলায় তার মাথা ফেটে যায়। প্রথম আলো প্রথম পাতায় মাথা ফাটা যে ছেলেকে দেখা যায় সেটায় রশিদ।
সুজিত পুরকৌশল ৪র্থ বর্ষের ছাত্র।
তার ইঞ্জিনিয়ার হওয়া প্রায় অনিশ্চিত হয়ে গেছিল। মারা গেছে ভেবেছিল সবাই। তাকে সামনে পেয়ে প্রথমেই মাথাই বাডি মারে। পরে গলায় চাপাতি দিয়ে কুপ দিলে মাটিতে পরে যায়। ছিটক রক্ত পরতে থকে ।
সঙ্গে সঙ্গে অজ্ঞেন হয়ে যায় সুজিত। এটা দেখে ছুটে আসে শুভজিত।
শুভজিত বটবল ম্যাকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপাটমেন্ট এর ৪র্থ বর্ষের ছাত্র। তার আর বাকি আছে মাত্র ৪ মাস। চার মাস পরে সে ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বের হয়ে জেত, এখন এ অনির্দিষ্ট কালের ছুটি তার ইঞ্জিনিয়ার হওয়াকে অনিশ্চিত করে দিয়েছে।
কেন মার খাবে না বটবল ? তার দোষ ছিল অনেক । কেন সে ছাত্রলিগের বিপক্ষে কথা বলতে গেছে? তাকে কেন প্রায় সব মিছিলে সামনে দেখা যায়। কেন সে সবসময় প্রতিবাদ করে? কেন সে অন্যায় দেখে রুমে চুপ থাকতে পারেনা? কিছু দিন আগেও সে ছাত্রীদের সাথে ইভটীজিং এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে। এতে সোনার ছেলে গোলজার এর ইমেজ নষ্ট হয়েছে(ইমেজ ছিল কিনা আমি জানি না, আমি নিশ্চিত সেও জানে না)। কষ্ট পেয়েছে, এখন মারবে এটাই স্বাভাবিক।
মারতে চাওয়া, মারাটা ঠিকই আছে। তাকে মেরেছে কুয়েট ছাত্রলীগের ছেলেরা । প্রথমে তাকে সবাই মিলে রড দিয়ে মারে, তার কাধে চাপাতি দিয়ে কুপ দেয়া হয়। পরে সাধারন ছাত্ররা সবাই ছুটে আসলে সে বেচে যায়।
আলাউদ্দিন আল আজাদ ম্যাকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপাটমেন্ট এর তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
মারামারি চলছে , দ্বিতীয় দফায় বহিরাগত সন্ত্রাসীরা যখন হলে ঢুকতে যাবে তখন গেটের পাশে ছিল আলাউদ্দিন । সামনে পেয়ে তাকে আঘাত করে খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের প্রথম সারির এক নেতা (নাম প্রকাশ করলাম না, কারন জানি তার কিছুই হবে না)। তাকে মারা হয় রড দিয়ে। বারিটা হাতে লাগাতে বাম হাত ভেঙ্গে যায়।
০বাকি দেরটা আসছে০
মার যেই খাক, পরিবেশ যত খারাপই হউক না কেন।
আমারা চাই এদের বিচার হক। আমারা আমাদের সেই কুয়েটে আবার ফিরে যেতে চাই।
যেখানে থাকবেনা রাজনীতির নামে নোংরামী।
স্যামু মডারেটররা আমাকে অবিশ্বাস করতে পারে । তাই আগের পোষ্ট গুলার প্রমান স্বরুপ কিছু ফটো দিলাম।
কাঁদল ছাত্র,কাঁদল শিক্ষক। কুয়েট(পর্ব-১)
এদের থেকে সাবধান। এরা কুয়েটের অভিশাপ,দেশের অভিশাপ। এই গুণ্ডাদের শাস্তি চাই। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।