আকাশ ভরা গাঙচিল
ভেবেছিলাম ব্লগে আসার আগে এবং এক বছর ব্লগ ব্যাবহার করার পরে আমার মানসিক পরিবর্তনের একটা চিত্র ফুটিয়ে তুলবো। বিষয়টা খুব সহজ না হলেও খুব কিন্তু কঠিনও না, কেননা আমি কোন কিছু এতো দ্রুত ভুলে যাই না। কিন্তু সমস্যা এখানে না, লিখতে বসলে কেন যেন লিখতে পাড়ি না। না লিখতে পারার এই অসহায়ত্ব আমার খুব পরিচিত একটা অনুভব। খুব বেশি পরিচিত আমি এই অসহায়ত্বের সাথে।
পরিবর্তনের কথা বলছিলাম, এটা খুব স্বাভাবিক একটা বিষয়। মানুষ পরিবর্তিত হয়; সমাজ, দেশ পরিবর্তিত হয়। পরিবর্তনের এই ধারাবাহিক চক্রে আমিও পরিবর্তিত হয়েছি। আগে যেমন আমার পাঁচ তলার রুমের জানালার পাশে দাঁড়িয়ে ছোট রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া মানুষ দেখতাম সকাল থেকে রাত অবধি, এখন আর দেখি না। দেখি না কারণ আমি আবাস পরিবর্তন করেছি।
নতুন জায়গায় আমার রুমেও একটা সুন্দর জানালা ছিল। ঐ জানালা দিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত দেখা যেত কিন্তু কোন পথ ছিল না। আর সেই পথে ক্লান্ত, নিমগ্ন, উচ্ছ্বসিত মানুষ হেঁটে যেত না। তবুও খারাপ কি? আমি এই জানালার পাশেই দাঁড়িয়ে থাকতাম। কিন্তু এখানেও পরিবর্তন ঘটে গেছে।
আমাদের বিল্ডিং এর সাথেই নতুন একটা ৭ তলা বিল্ডিং উঠেছে আমার জানালার গা ঘেঁষে। দুই বিল্ডিং এর পারস্পরিক নিবিড় সাহচর্যে আমি আমার জানালার ভালবাসা ভুলতে বাধ্য হলাম। এখন আমি জানালার পাশে দাঁড়িয়ে আকাশ দেখি না। মানুষ দেখি না। খুব পরিচিত মানুষটাকে হেঁটে আসতে দেখি না।
আমি না চাইলেও পরিবর্তন আমাকে পরিবর্তিত করেছে। আমি যদি আগে গভীর রাতে রাস্তায় হাঁটতাম তবে এখন গভীর রাতে রুমে বসে বিচিত্র সম্পর্কের জালে জড়িয়ে ভীষণ ভাললাগায় হাবুডুবু খাই। এই সম্পর্ক গুলো আমাকে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে। আমাকে পরিবর্তিত করেছে। আমি খুব বেশি শ্রদ্ধাশীল এই সম্পর্কগুলোর প্রতি।
এতো ভালবাসা যে আমার জন্যেও অপেক্ষায় ছিল, তা বুঝিনি আগে। অযথাই অন্য কোন কিছুর জন্য অপেক্ষা করে গেছি। যা ভাবনাতে ছিল গভীর ভাবনায় মগ্ন তার গন্ডি পেরিয়ে ভিন্ন ভাবনারা হেসে খেলে নেচে বেড়ায় আমার বিষণ্ণ বারান্দায়। আমি সেখানে চেয়ে থাকি। ইচ্ছে হলে গ্রহণ করি এবং পুনরায় চিরন্তন সেই অপেক্ষার জন্য অপেক্ষা করি।
আমার বর্ষপূর্তি হয়েছে ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসের মহান একটা দিনে। ১৬ ডিসেম্বর। বিজয় দিবস। একবছর আগে ঠিক এই দিনের এই সময়ে বসেই প্রথম কবিতা পোস্ট করেছিলাম। কতো দ্রুত সময় চলে যায়, তার হিসাব কয় জন রাখে? রাখে, somewhereinblog রেখেছে।
এ জন্য সামুকে অনেক অনেক ধন্ন্যবাদ জানাই।
ধন্যবাদ জানাই আমার সহ ব্লগার এবং আমার খুব প্রিয় কিছু মানুষদের। প্রত্যাশা রইলো, নতুন বছর নতুন নতুন ঘটনা এবং অসম্ভব ভাল কিছু ভালালাগায় কেটে যাক। চোখের পলক ফেলার আগেই যেন ধোঁয়াশা গুলো মিলিয়ে যাক। সবার প্রতি আমার আন্তরিক অভিনন্দন রইলো।
আমার সহ ব্লগারদের নিয়ে কিছু সুখ স্মৃতির কথা লিখেছি এখানে। স্থান সংকুলান না হওয়ায় ২য় পর্ব দেখুন এখানে। দেখুন আপনিও আমার লিস্টে আছেন কি না! না থাকলেও সমস্যা নেই, জেনে রাখুন আপনি আমার মনে আছেন। এক পোষ্টে সবাইকে ধরতে না পারায় আমার তিনটা পোস্টের অবতরণ। আশা করি কেউ বিরক্ত হবেন না।
বর্ষপূর্তি পোষ্টে সবাইকে উৎসর্গ করে আমার একটা কবিতা রইলো।
সবুজ শব্দের ধর্ষিত হবার সংবাদ
পুর্বেও ছিল আজকের মতো কুয়াশায় নিমগ্ন স্বপ্নকথন; তবে চিরসবুজ বলে চিরঞ্জীব যে শব্দমালার যত্রতত্র প্রয়োগ ছিল, সে শব্দের মলিনতা দেখে আজ মনে পড়ে শব্দটির ধর্ষিত হবার যৌথ সংবাদের খবর। কোন কালেই সবুজতা সবুজ থাকেনি। ম্রিয়মান, কম্পমান, দোদুল্যমান শব্দের সাথে নিবিড় সাহচর্যে সবুজ শব্দের ধর্ষিত হবার সংবাদ রচিত হয়ে গিয়েছিলো প্রথম প্রহরে, সংবাদপত্রের পাতায় রিষ্ট পুষ্ট ভাবে জায়গা দখল করে নেয়ার অনেক আগেই। মানুষ এখন সংবাদপত্র পড়ে না।
প্রহরে প্রহরে ধূসর সবুজতার বিচিত্র সংবাদ রচিত হয় হৃদয়ের চার প্রকোষ্ঠের ঐ ছাপাখানায়, প্রতিনিয়ত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।