জীবন বুনে স্বপ্ন বানাই মানবজমিনে অনেক চাষ চাই একজন সংসদ সদস্যের মূল কাজ হল, সংসদে আইন প্রণয়নে সহায়তা করা। দেশের প্রচলিত কোন নতুন ধরনের সমস্যার ক্ষেত্রে নতুন আইনের খসড়া বা প্রস্তাব তৈরি করা। বিভিন্ন দেশের আইন ঘাটাঘাটি করে নিজের দেশের প্রচলিত আইন সংশোধনের ব্যবস্থা করা। আইন প্রণয়নে তার মতামত দিয়ে কোন প্রস্তাবিত আইনের ভুল চুক বের করা এবং বিস্তারিত আলাপ আলোচনা করা। পুরোনো আইনকে ঘষে মেজে যুগোপযোগী করা, আপগ্রেড করা।
নতুন ধরনের আইন করার মাধ্যমে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়া। মোট কথা, তিনি দেশের আইন সভার সদস্য হিসেবে সারা ক্ষণ আইন প্রণয়ন বিষয়ক কাজ নিয়ে পড়ে থাকবেন। তার দায়িত্ব ওটা।
কিন্তু আমাদের দেশের সংসদ সদস্যরা মূলত সংসদের চেয়ে সংসদের বাইরে বিশেষত তার নির্বাচনী এলাকায় খবরদারি করতে বেশি আগ্রহী। উনারা এলাকায় টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করেন, রাস্তাঘাট, ড্রেন, কালভার্ট, ব্রিজ ইত্যাদি নির্মাণের সঙ্গে জড়িত হন, এলাকার মসজিদ মাদ্রাসা বা স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির পদ অলংকৃত করেন।
এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ ইত্যাদি স্থানীয় সরকারের উপর খবরদারি করার জন্য উনাদের আগ্রহের শেষ নাই।
কারণ কী ?
কারণ একটাই। কেবল আইন নিয়ে পড়ে থাকলে তাদের দায়িত্ব পালন হয় বটে, দেশ এগিয়ে যায়, মানুষের উপকার হয়, কিন্তু উনার পকেট ভারি হয় না। স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিটি সেক্টর থেকে পকেট ভারি করার জন্য উনাদের স্থানীয় পর্যায়ে বেশি বেশি দৌড়ঝাঁপ করতে দেখা যায়। আমাদের স্বয়ং রাষ্ট্রব্যবস্থা সংসদ সদস্যদের এই অন্যায্য আচরণগুলোকে জায়েজ করে রেখেছে।
আমাদের জনগণকে বোঝানো হচ্ছে, তোমার এলাকার সব উন্নয়ন করবেন সাংসদ সদস্য। অথচ এসব ব্রিজ, কালভার্ট, রাস্তাঘাট নির্মাণ করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকারের বা মন্ত্রণালয়ের, কোন সংসদ সদস্যের নয়। স্থানীয় সরকার তথা ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ বা জেলা পরিষদের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করা সংসদ সদস্যের কাজ নয়। মসজিদ, মাদ্রাসা বা স্কুলের সভাপতির পদ দখল করে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ফান্ড নিয়ে যা খুশি তা করার দায়িত্ব সংসদ সদস্যের নয়।
এই সব দায়িত্ব দিলে যে দুর্নীতি হয়, তার সর্বশেষ প্রমাণ সাংসদ কামাল আহমেদ মজুমদারের সাংবাদিক পেটানো।
উনি একটা স্কুলের সভাপতির পদ অলংকৃত করে বসে আছেন। সে স্কুলে উন্নয়ন ফির নামে বিনা রশিদে অতিরিক্ত টাকা আদায় হচ্ছে। সেই টাকা একটা বিশেষ একাউন্টে জমা দিতে হচ্ছে। সে বিষয়ে টিভি রিপোটিং করতে গিয়ে মার খেলেন নারী সাংবাদিক। দুর্নীতি না করে থাকলে মিডিয়ার সামনা সামনি হতে এত ভয় কিসের ?
মোট কথা হল, যার যেটা দায়িত্ব সেটা না করে যখন কেবল মাল কামানোর জন্য দায়িত্ব নেয়ার বা দায়িত্ব দখল করার প্রবণতা তৈরি হয়, তখন দুর্নীতি বানের জলের মতো সব প্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়ে।
এটা আমাদের মতো আম জনতা বুঝি, কেবল বোঝেন না রাষ্ট্রের শীর্ষে বসা জ্ঞানী গুণীরা। নাকি বুঝেও চোখ নাক বন্ধ করে থাকেন, কোন লাভের ভাগের আশায় ?
সংবাদের উৎস : সাংবাদিকদের ওপর হামলার নিন্দা টিআইবির, কামাল মজুমদার সংসদের অবমাননা করেছেন ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।