আমি এক ভবঘুরে; ঘুরি এ জগত জুড়ে [দারুন একটি ছ্যাকাময় কবিতা; কষ্ট করে পড়ে দেখুন ভাল লাগতে বাধ্য]
------------------------------------------------------------------------
শরিফুল ভালবাসত ঘুড়ি উড়াতে...
রং বেরংএর কাগজ কেটে আর এটা ওটা দিয়ে
কি সব অদ্ভুত ঘুড়ি বানিয়ে আকাশে ওড়াত।
নাটাইয়ের সুতা ছাড়তে ছাড়তে হয়ত
আকাশে বাড়ি বানাবার স্বপ্ন দেখত।
একটা সময় ওর নাটাইয়ের সুতা কেটে যেত...
কিন্তু তার স্বপ্নের বুনন থামতনা ।
হারানোর ব্যাথাও ওর ছিলনা
বলত “এ তো আমার হারানো নয় অন্যের পাওয়া”।
আবার বসে যেত নুতন সৃষ্টির নেশায়...
বানাত আরো অদ্ভুত ঘুড়ি চোখের নিমিষে;
উড়াত আকাশে।
উড়াত... হারাত... বানাত...।
এখন শরিফুল মেরিন ইঞ্জিনিয়ার।
কত্ত বড় বড় জাহাজ বানায়।
আকাশে হয়ত ওর বাড়ি হয়নি;
কিন্তু জলের মাঝে খুঁজে পেয়েছে আপন ঠিকানা।
রকিবুল ভালবাসত ছুড়ে ফেলা বল পেন কুড়াতে।
লাল, নীল, সাদা, সবুজ, হলুদ গোলাপি আরও কত কি রঙের।
এর পর একটার সাথে আরেকটা লাগিয়ে বানাত
বিশাল রাজপ্রাসাদ কখনো বা নতুন তাজমহল।
এরপর ভাঙতো, আবার গড়ত।
গড়ত... ভাঙতো...গড়ত...।
এখন সে অনেক ব্যস্ত স্থপতি।
এর স্বপ্নের বাড়ি, ওর বিলাসী এপার্টমেন্ট,
তার বহুতল টাওয়ার ...
নিয়েই সে মেতে থাকে সৃষ্টি সুখের উল্লাসে।
রফিক ছবি তুলতো।
ফুলের ছবি, পাখির ছবি, মেঘ মুক্ত খোলা আকাশের ছবি,
ঘাসের ডগায় জমে থাকা বিন্দু বিন্দু শিশিরের ছবি।
সবার ছবি
ভাঙ্গা থালা হাতে বিবসন ভিখারির,
স্টিয়ারিং হুইলের ওপর ঘুমিয়ে পড়া ক্লান্ত চালকের
আরও কত কি...
মাঝে মাঝে ও বাতাসেরও ছবি তুলতে চাইত,
অদ্ভুত সব কথা বলত- ছবির নাকি প্রাণ আছে, কথা বলে,
কখনও কখনও নাকি দাবানল ছড়ায়।
ওর ভালবাসা বৃথা যায়নি,
এখন সে বিশাল চিত্রগ্রাহক।
ওর হাতে নাকি যাদু আছে...
আমি তোমায় ভেবে ঘুড়ির মতো উড়তাম
কলমের নয়, স্বপ্নের ইটের গাঁথুনিতে
তোমার জন্য রাজমহল বানাতাম।
দু’চোখের ক্যমেরাতে তোমার হাজার হাজার
স্থির আর চলমান ছবি তুলে মনের মেমরি কার্ড পুরাতাম।
এখন আমি কষ্ট নিয়েই অষ্ট প্রহর থাকি-
মাঝে মাঝে গানের খাতায় কাবিতা আঁকি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।