নতুনদিনের মিছিলে,একজন বেয়নেটধারী সৈনিক নানান ঝামেলায় বিপর্যস্ত নাগরিক জীবন। ব্যাস্ততা থেকে ফুরসত মেলেনা, একটু নিঃশ্বাস ফেলার। বিনোদনের কথা সেতো অনেক দূরের ব্যাপার। তবুও, নগরবাসী দমেনা। ছুটি পেলেই দম ফেলতে ছুটে যায়, কাছাকাছি কোন পার্কে।
কিন্তু সেখানে কি ধরনের পরিবেশ অপেক্ষা করছে তাদের জন্য? এই নিয়ে ধারাবাহিক কিছু লেখা লেখার ইচ্ছে ছিলো অনেকদিনের। আজ শুরু করলাম। আজকের পর্বে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নিয়ে বলবো।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি সুপরিসর নগর উদ্যান। এটি পূর্বে রমনা রেস কোর্স ময়দান নামে পরিচিত ছিল।
এক সময় ঢাকায় অবস্থিত ব্রিটিশ সৈন্যদের সামরিক ক্লাব এখানে প্রতিষ্ঠিত ছিল। পরবর্তীতে এটি রমনা রেস কোর্স এবং তারপর রমনা জিমখানা হিসাবে ডাকা হত। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের পর মাঠটিকে কখনও কখনও ঢাকা রেস কোর্স নামে ডাকা হত এবং প্রতি রবিবার বৈধ ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হত। একটি জাতীয় স্মৃতিচিহ্নও বটে কেননা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চের ভাষণ এখানেই প্রদান করেন। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বার পাকিস্তান সেনাবাহিনী এই উদ্যানেই আত্মসমর্পণ করে মিত্রবাহিনীর কাছে।
রেস কোর্স ময়দানের অদূরে অবস্থিত তৎকালীন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পনের স্থান হিসেবে প্রথমে নির্ধারণ করা হলেও পরবর্তীতে আত্মসমর্পনের জন্য এই মাঠটি নির্বাচন করা হয়। বাঙালীর মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস-ঐতিহ্যের অন্যতম স্থাপনা 'স্বাধীনতা স্তম্ভ' । এটি ঢাকা প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের আড্ডার প্রিয় জায়গা। পাশেই বাংলা একাডেমী থাকায় এখানে অনেক গুনীজনের আড্ডা বসে। গাছগাছালিতে ঘেরা সবুজ এই উদ্যানে আড্ডা দিয়ে,একটু বেড়িয়ে প্রান জুড়াতে কে না চাইবে? কিন্তু আসলেই এখানে কি চলছে?
সারাদিন এখানে চলে মাদকসেবীদের উন্মুক্ত মাদকসেবন।
গাঁজা, হেরোইনের আড্ডায় ভীড়ে গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, ঢাকা মেডিকেলের অনেক ছাত্রও। সন্ধ্যার অন্ধকার নেমে আসলেই এরা অনেকটা বেপরোয়া হয়ে উঠে। ফলে ছিনতাইয়ের মতো ঘটনাও ঘটে। কিছু ভাসমান নারী ও পুরুষের দ্বারা চলে মাদক ব্যাবসা। হাত বাড়ালেই মাদকের ছড়াছড়ি।
ভাসমান কিছু পরিবার এখানে বসবাস করে। তাদের পলিথিনে ঘেরা ঝুপড়িতে চলে যৌনব্যাবসা। বিকেলের দিকেই ভাসমান পতিতারা খদ্দেরের খোঁজে নেমে পড়ে। এদের কারনে, অনেক মেয়েকে নোংরা পরিস্থিতির সামনে পড়তে হয়েছে। পুরো উদ্যানজুড়ে চলে প্রেমিক যুগলের অবাধ আলাপন।
তাদের অবাধ ও দৃষ্টিকটু আচরন উদ্যানে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীদের বিব্রত করে। শ্রমিক শ্রেনীর কিছু যুবক বিকেল থেকেই মাদকের আড্ডা বসায়। তারা মাদকের বিক্রেতাও। প্রশাসন নীরব থেকেছে। মাঝে মাঝে কিছু ঝটিকা অভিযান ছাড়া আর কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি এই উদ্যানের ব্যাপারে।
বাঙ্গালী জাতির স্বাধীনতার স্মৃতিবিজরিত এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কি একটি সুন্দর পরিবেশ কখনোই আসবেনা? যথাযথ কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।