আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উপকারের বদলা কি জীবন টা কেড়ে নেয়া?

আজ বুধবার দুপুরে ঢাকার ৪ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মোতাহার হোসেন আলোচিত রমনা থানা জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা ইসহাক (৫০) হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন, এতে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। যে চার জন কে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় তাদের এক জন -আব্দুর রহিম- সেই মুল হুকুম দাতা, এই লোকটা এত দরিদ্র ছিল যে, সে নিজের দুবেলা খাবারের ব্যাবস্থা করতে পারতনা, এবং এতটাই বেহুদা ছিল যে দুই টাকা কামাই করবে সেই ক্ষমতাটুকু ও তার ছিল না, হাফেজ ইসহাক একজন বিনয়ী লোক, মসজিদের ইমাম, তাঁর কাছে এই আঃ রহিম গিয়ে মাসের পর মাস বসে থাকত, সবসময় অপেক্ষায় থাকত ইমাম সাহেব কোন কিছু ব্যাবস্থা করে দেয় কিনা, পকেট খরচ যা লাগত তাঁর ব্যাবস্থা ইমাম সাহেবই করে দিতেন। আঃরহিমের এমন অসহায় অবস্থা দেখে ইমাম ইসহাক অনেক কষ্ট করে নিজের অর্থ ব্যয় করে একটা মালয়শিয়ার ভিসা সংগ্রহ করলেন এই রহিমের জন্যই, ভিসা পেয়ে সে মালয়শিয়া গেল, অনেক অর্থ কড়ি অর্জন করল, নিজের বাড়ি ঘরকে করুন দশা থেকে পরিবর্তন করে বিল্ডিং করলো, আরো কিছু নতুন আয়ের উৎস বের করলো, সব মিলিয়ে ভালোই যাচ্ছিলো, এ সব দেখে স্বাভাবিক ভাবেই অনেক খুসি হয়েছিলেন ইমাম ইসহাক, আঃরহিম ও তার আরেক আত্মীয় ইলিয়াস একটা লবন ফ্যাক্টরি কেনা বেচা করলো, তাদের মাঝে এ নিয়ে একটা বিরোধ সৃষ্টি হল, এটার মিমাংসার জন্য উভয়ই ইমাম ইসহাকের কাছে ধরনা দিল, উনি সমাধান করতে চেষ্টা করলেন, আঃ রহিম মানতে পারলো না তাঁর সমাধান, আবার ফিরে গেলো মালয়শিয়া, যাবার আগে হুমকি দিয়েছে, " আমি দেখে নিব" বলে। গত বছর ঠিক এই সময় পত্রিকায় খবর বের হয়" রমনা থানা মসজিদের ইমাম নিখোঁজ", এর প্রায় ১০/১২ দিন পর শেওড়াপাড়ায় একটা ভাড়া বাসা থেকে ইমাম ইসহাকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ, ঘটনা দন্তে এক পর্যায় বের হয় আসল খবর, যা আসলেই বিশ্বাস করা কঠিন। ইমাম ইসহাক- আল্লাহ তাঁকে জান্নাতবাসিদের অন্তরভুক্ত করে নিক- যাকে ভরন পোষন দিয়ে দু -টাকা আয়ের ব্যাবস্থা করে দিলেন, যাকে সুন্দর করে পরিবার নিয়ে আরামে জীবন যাপন করার পথ তৈরি করে দিলেন, সেই কিনা নিজের উপকার কারির গলায় ছুরি চালাল, তাও এমন নিষ্ঠুর ভাবে, মুখে কস্টপ দিয়ে শ্বাস বন্ধ করে নিরীহ এই মানুষ টাকে হত্যা করল, উনি সে দিন রোযা রেখে ছিলেন,মাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে চিকিৎসা করিয়েছেন, এর পরে জোহরের নামাজ পড়িয়ে বের হয়েছেন তখনই তাঁকে উঠিয়ে নিয়ে গেছিল সেই "নিমক হারামির লোকেরা"। আজকে ইমাম ইসহাকের মা কান্না করছে, তাঁর ভাই-বোনেরা , সন্তানেরা কান্না করছে, এমনকি রমনা থানা এলাকার সাধারন মুসল্লিরা পর্যন্ত তাঁর জন্য কাঁদছে, মানুষের চোখের পানি কখন বিফলে যায় না, আল্লাহ ইমাম ইসহাক কে জান্নাতিদের অন্তর্ভুক্ত করুক, তাঁর পরিবার পরিজন সবাইকে ধৈর্য ধারন করার তাওফিক দিক, এবং এই খুনি পাপিষ্টদের ফাঁসির রায় দ্রুত কার্যকর করতে যত বাধা আছে সব দূর করে দিক। এমন পাপি যেন আমাদের দেশে আর জন্ম না নেয় এ জন্য সবাই দোয়া করবেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.