আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হিরোশিমার নারকীয় ধ্বংসের স্মৃতিচিহ্নগুলো !! ( ভ্রমণ ও ছবি ব্লগ)

পেশায় নাবিক নেশায় যাযাবর সিন ক্রু সীমা ড্রাই ডক । নতুন একটা জাহাজ সাগরে নামানো হবে। শেষ মুহূর্তের সব চেক চলছে। আমরা পাচ জন আগেই চলে এসেছি সব বুঝে নেবার জন্য। জাপানীদের সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে সব কাজ ।

শুক্র বার বিকালে জাপাণী বস জাপানের বেড়ানোর জন্য কিছু গাইড বই দিয়ে বলল আগামী দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি। চাইলে বেড়িয়ে এসো। ঘুম থেকে উঠে অলস বসে আছি। একটি মাত্র ল্যাপটপে ইন্টারনেট । লোকজন যেভাবে দখল করে আছে সারা দিনে পাওয়া যাবে বলে মণে হচ্ছে না।

বসে বসে কী করা যায় ভাবছি। হটাত চোখ পড়ল হিরোশিমা মেমোরিয়াল এর ভ্রমণ বইটার উপর। দলবল নিয়ে বের হয়ে গেলাম। রেল ষ্টেশনে টিকিট কাটতে বেশ ঝামেলা হল। কোণ মতেই বোঝানো যাচ্ছিল না আমারা কোথায় যাব।

তবে জাপানিরা ইংরেজির চাইতে বাংলা ভালো বোঝে তা প্রথম বারের মত প্রমান হল। কারন বিরক্ত হয়ে যখন বললাম ভাই “হিরোশিমা মেমোরিয়াল যাব টিকিট দেন”। কিছু না বলে টিকিট দিয়ে দিল । অথচ এতক্ষন ইংরেজিতে একথাটাই বোঝানোর চেষ্টা চলছিল। ট্রেনে বসে হিরোশিমার গাইডটা পড়লাম।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে, ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট সকাল আটটা ১৫ মিনিটে পৃথিবীর প্রথম আণবিক বোমা নিক্ষিপ্ত হয় হিরোশিমাতে । মুহূর্তে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল শহরের অধিকাংশ দালানকোঠা, নিহত হয় এক লাখ ২০ হাজার লোক, পরে প্রাণ হারায় তার দ্বিগুণ। ঘুম থেকে জেগে ওঠা মানুষ কিছু বুঝে ওঠার আগেই পোড়া লাশে পরিণত হয়। হিরোশিমার মানুষ এখানে ধরে রেখেছেন ১৯৪৫ সালের ৬ আগষ্টের তান্ডব লীলার সেই মর্মান্তিক বেদনাদায়ক স্মৃতি। এই সব স্মৃতির স্মারকগুলোর মধ্যে রয়েছে হিরোশিমার শান্তি রক্ষার প্রতীক ‘পিস মেমোরিয়াল পার্ক।

সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে এই পার্কটি যেন সবাইকে শাশ্বত শান্তি রক্ষার আহ্বানই জানাচ্ছে। পিস মেমোরিয়াল পার্কের চারপাশ জুড়েই আছে পারমাণবিক ধ্বংসযজ্ঞে নিহতদের স্মরণে মিউজিয়াম সহ অসাধারণ সব স্মৃতি স্তম্ভ। এখানে যেয়ে মনে হয়েছে মানুষ কত বর্বর । সবাই আমরা অনেক ছবি তুলে ছিলাম । কিছু শেয়ার করলাম এখানেই বোমাটি বিস্ফোরিত হয়।

অন্যান্য বাংলাদেশী পর্যটকদের সাথে আমরা। (গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি সেই সব নিরীহ মানুষদের। যারা যুদ্ধবাজদের হাতে নির্মম বলীর শিকার হয়েছিল। তাদের আত্মার শান্তি কামনা করছি। আর সেই সাথে ঐ সব যুদ্ধবাজদের জন্য আমাদের ঘৃণা রইলো) ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।