কখনও আল্লাহ কে দোষারোপ করবেন না এই বলে যে, আল্লাহ কেন আপনার দোয়া সাথে সাথে কবুল করেন না, বরং শুকুরিয়া আদায় করুন এই জন্যে যে, আল্লাহ আপনার পাপের জন্য সাথে সাথেই শাস্তি দেন না । আমিন যুগ যুগ ধরে শুনে আসছি, টাকায় টাকা আনে। কিন্তু সময়ের পরিবর্তন, বিজ্ঞানের উৎকর্ষতায় এবং হাইজিন সচেতনার যুগে সে স্লোগান পরিবর্তিত হয়েছে অনেকাংশে। অর্থনীতিক সংকটের এ অবস্থায়, টাকায় আর টাকা আনছে না, বরং টাকায় ব্যাপকভাবে রোগজীবাণু ছড়াচ্ছে এবং ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বয়ে বেড়াচ্ছে!
ডেনমার্কে সাধারণত পুরাতন নোট খুঁজে পাওয়া বেশ দুষ্কর। ময়লা, ছেঁড়া, টেপওয়ালা কোন ডেনিশ ক্রোনার অন্তত এখনো আমার হাতে আসেনি।
কিন্তু এত সুন্দর সুন্দর নোটের মধ্যেও হাজার হাজার ব্যাকটেরিয়া বাস করছে তা জেনে আমি আতঙ্কিত! বিশ্বের সবচেয়ে বেশি হাইজিন সচেতন জাতি ড্যানিশরা এসব ব্যাপারে বেশ খুঁতখুঁতে। ড্যানিশ নোটের ওপর এক পরীক্ষায় দেখা গেছে, একেবারে নতুন চকচকে এ ড্যানিশ নোটগুলোর মধ্যে রয়েছে গড়ে প্রায় ৪০ হাজার ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া!
বিখ্যাত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়ান টমসন বলেন, “ব্যাংক নোটের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বিস্তৃতি নিয়ে আমরা সবাই বেশ আতঙ্কের মধ্যে আছি। ” তিনি উল্লেখ করেন, “যেহেতু বিশ্বব্যাপী ব্যাংক নোটগুলোর ব্যবহার বাড়ছে, টাকার মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ একটি বৈশ্বিক আতঙ্ক!”
প্রায় ১১ রকম বিভিন্ন ব্যাংক নোটের উপর পরিচালিত এক পরীক্ষায়, অধ্যাপক ইয়ান টমসনের টিম আবিষ্কার করে যে, গড়ে ইউরোপের একটি ব্যাংক নোটে প্রায় ২৬ হাজার ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। এমন কি ইউরোপে সবচেয়ে নতুন, কড়কড়ে নোটগুলোতেও গড়ে প্রায় দুই হাজার ৪০০ ব্যাকটেরিয়া বাস করছে।
যেহেতু বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানুষের দেশ চীন, স্বভাবতই চাইনিজ মুদ্রা ইয়েন সর্বাধিক মানুষের হাত বদল হচ্ছে এবং স্বাভাবিকভাবেই সর্বাধিক ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাবে এ ইয়েনেই।
আসলে ঘটেছেও তাই। দেখা গেছে বিশ্বের সবচেয়ে ময়লা এবং ব্যাকটেরিয়া সংবলিত ব্যাংক নোট কিন্তু চাইনিজ ইয়েনে! এক্ষেত্রে দ্বিতীয় সর্বাধিক ক্ষতিকর ব্যাংক নোট পাওয়া গেছে ভারতীয় রূপিতে। তবে পরীক্ষায় সবচেয়ে পরিষ্কার ব্যাংক নোট পাওয়া গেছে সুইজারল্যান্ডের মুদ্রায়।
উল্লেখ্য, হাইজিন বা পরিচ্ছন্নতার সহজ কিছু নিয়ম মানলেই নোটে থাকা জীবাণুর আক্রমণ হ্রাস করা সম্ভব। তবে ডেনমার্কসহ অন্যান্য উন্নত এবং স্বাস্থ্য সচেতন দেশের নাগরিকদের মাঝে কাগজ এবং ধাতব মুদ্রার পরিবর্তে বিভিন্ন স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেনের সাহায্যে মুদ্রার ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে বাঁচার প্রবণতাও বেশ লক্ষণীয়।
আমার প্রশ্ন হলো, নতুন কচকচে প্রতিটি ড্যানিশ ক্রোনারে যদি গড়ে ৪০ হাজার বিভিন্ন ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়, তাহলে বাংলাদেশের টাকার যে বেহাল অবস্থা- না জানি একটি নোট কত কোটি ব্যাকটেরিয়া নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে আর নানান ক্ষতিকর রোগজীবাণু ছড়াচ্ছে! আসুন আমরা একটু সচেতনতার সাথে মুদ্রার লেনদেন করি এবং সম্ভব হলে বাজার শেষে ঘরে এসে সাবান দিয়ে ভাল করে হাত পরিষ্কার করে প্রথমে নিজে অতঃপর নিজের পরিবার এবং সব শেষে দেশের আপামর জনসাধারণকে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার সংক্রামণ থেকে রক্ষা করি।
সূত্র:বাংলানিউজ২৪ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।