আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফুলকপি চাষ

ফুলকপি বাংলাদেশের একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় শীতকালীন সবজি। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের এটি প্রধান সবজিগুলোর মধ্যে অন্যতম। মোগল আমলে ভারতবর্ষে ফুলকপির চাষাবাদ প্রথম শুরু হয় বলে জানা যায়। বাংলাদেশের সর্বত্র ফুলকপির চাষ হয়। ফুলকপি উৎকৃষ্ট এবং উপাদেয়, সবার কাছে সমাদৃত।

পুষ্টিমানের বিবেচনায় প্রতি ১০০ গ্রাম ভক্ষণযোগ্য অংশে শ্বেতাসার রয়েছে ৮ গ্রাম, আমিষ রয়েছে ২.৩ গ্রাম, নায়াসিন রয়েছে ১.৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি রয়েছে ৫০ মিলিগ্রাম। তাছাড়া আরো অন্যান্য খাদ্য উপাদান রয়েছে। আগাম ফুলকপি চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া যায়। জমি নির্বাচন : সাধাণত ঠান্ডা ও আর্দ্র জলবায়ু ফুলকপি চাষের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। বেল দো-আঁশ ও এঁটেল দো-আঁশ মাটিতে ফুলকপি ভালো জন্মে।

তবে আগাম চাষের জন্য দো-আঁশ মাটি উত্তম । এ ক্ষেত্রে পানি সেচ ও নিষ্কাশনের ভালো ব্যবস্থা থাকতে হবে। জাত নির্বাচন : আমাদের দেশে চাষকৃত ফুলকপির জাত অধিকাংশই শংকর এবং বিদেশ থেকে আমদানিকৃত। বর্তমানে আমাদের দেশে আগাম জাত হিসেবে কার্তিকা, পাটনাই, পুশা, দীপালী, আগাম স্নোবল, ট্টপিক্যাল, পাঞ্জাব কানওয়ারী, ম্যাজিক বল ইত্যাদি চাষ করা যেতে পারে। বীজতলায় চারা উৎপাদন : আগাম জাতের ফুলকপি চাষের জন্য আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে বীজতলায় বীজ বপন করতে হয়।

বীজতলা ঠান্ডা রাখার জন্য অনেক সময় বীজতলা ঢেকে রাখতে হয়। বীজতলা যাতে শুষ্ক না হয় সে জন্য সময়মত সেচ দিতে হয়। চারার গোড়া পচা রোগ প্রতিরোধের জন্য বীজতলার মাটি ফরমালডিহাইড দিয়ে শোধন করে নিতে হয়। চারা তৈরির জন্য ৩১ বর্গ মি. আকারের বীজতলা তৈরি করতে হয়। বীজ ঘন করে প্রাথমিক বীজতলায় বুনতে হয়।

চারা গজানোর ৮-১০ দিন পর ছোট চারাগুলো উঠিয়ে অন্য একটি বীজতলায় পাতলা করে লাগাতে হয়। এতে চারা সুস্থ ও সবল হয়। আগাম জাতের জন্য হেক্টর প্রতি ৬০০-৭০০ গ্রাম বীজের প্রয়োজন হয়। জমি তৈরি ও চারা রোপণ : গভীর চাষ দিয়ে মাটির ঢেলা ভেঙে ও আগাছা পরিষ্কার করে জমি তৈরি করতে হয়। আগাম ফুলকপি চাষের জন্য ৩০-৩৫ বয়সি চারা সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে জমিতে রোপণ করতে হয়।

এ ক্ষেত্রে লাইন থেকে লাইনের দূরত্ব ২.৫০ ফুট, চারা থেকে চারার দূরত্ব ২ ফুট হলে ভালো হয়। সার প্রয়োগ : আগাম ফুলকপি চাষের জন্য প্রতি শতাংশে গোবর ৬০ কেজি, ইউরিয়া ১.৫০ কেজি, টিএসপি ৮০০ গ্রাম এবং এমওপি ১ কেজি প্রয়োগ করতে হয়। শেষ চাষের সময় সম্পূর্ণ গোবর ও টিএসপি সার মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। ইউরিয়াও এমওপি সার চারা লাগানোর ১৫ দিন পর এবং ৪০ দিন পর দুবারে উপরি প্রয়োগ করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন পরিচর্যা : ফুলকপির জমিতে কখনো রসের অভাব হতে দেয়া উচিত নয়।

প্রয়োজন অনুযায়ী বেডের মধ্যবর্তী নালা দিয়ে ১০-১৫ দিন পর পর সমানভাবে সেচ দিতে হয়। সেচ পরবর্তী সময়ে জমিতে জো আসার পর আগাছা দমন করলে এবং মাটির চটা ভেঙে ঝুরঝুরে করে দিলে ফুলকপির স্বাভাবিক বৃদ্ধি হয়। ফুলকপির রং ধবধবে সাদা রাখার জন্য কচি অবস্থা থেকে চারদিকে পাতা বেঁধে দিতে হয়। অন্যথায় সূর্যালোকে উন্মোচিত থাকলে এর রং হলুদাভ হয়। ফলন : হেক্টর প্রতি ফলন ২০-২৫ টন।

বারি ফুলকপি-১-এর ফলন হেক্টর প্রতি ২৫-২৮ টন এবং বীজের ফলন ৪৫০-৫০০ কেজি। কৃষিবিদ মোস্তফা ইকবাল আজাদ অতিরিক্ত কৃষি অফিসার, সরাইল, বি.বাড়িয়া।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।