আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দুঃখিত হিরন আপনার পাশে এ সমাজের কেউ দাড়াবে না। আমরা সবাই মস্ত নারীবাদি।

ভুদাই সমিতির সেক্রেটারী হিসেবে কাজ করছি। পার্মানেন্ট প্রেসিডেন্টের পোষ্ট খালি আছে। কোর্টে যাদের যাতায়াত আছে তারা নিশ্চয় জানেন বর্তমানে হয়রানি করার সবচেয়ে কার্যকরি এবং বহুল ব্যবহৃত উপায় হল নারী নির্যাতনের মামলা। এদেশে এখন যতগুলো নারী নির্যাতনের মামলা দায়ের করা হচ্ছে তার প্রায় অর্ধেকই হল হয়রানি করার জন্য। ফারজানা বনাম হিরন কাহিনীটা নিয়ে সুশীল কুশীল সবার লম্পজম্ফ লক্ষ্য করার মত।

সবার এককথা দায়ি হল হিরন। ফারজানার কোনো দোষ নাই সে ধোয়া তুলসিপাতা। কিন্তু কথা হল একটা খুনীর আসামিকেও আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয় কিন্তু হিরন এমনই এক পাপী যে সে সুযোগটাও আমরা তাকে দিতে চাই নাই। হিরন হয়ে গেল একজন যৌতুকলোভী বর্বর পিশাচ পুরুষ। একটা ছেলে বিয়ের আগে একবারও যৌতুক চাই নাই কি এমন ঘটনা ঘটে গেল যে বিয়ের পর সে যৌতুক চাইতে যাবে? রহস্যটা আসলে কি? বাংলানিউজ২৪ এ ফারজানার সাক্ষাতকারটির অংশটা আসুন দেখি- বিয়ের দিনের প্রসঙ্গে আসি।

সেদিন সকাল ১১টা ১১ মিনিট ১১ সেকেন্ডেই আমাদের বিয়ের কাবিন হয়। স্থানীয় একটি মসজিদে। দক্ষিণাঞ্চলের অনেক এলাকাতেই এমনও রেওয়াজ বিয়ের আকদ বা কাবিন বর বা কনে কোনো পক্ষের বাড়িতে নয়, মাঝামাঝি স্থান কোনো মসজিদে হয়। আমাদের বেলায়ও তা-ই হলো। বাবা আত্মীয়-স্বজন নিয়ে মসজিদে যাওয়ার আগে আমার সম্মতি নিয়ে গেলেন এবং বিয়ে হয়ে গেলো।

এরপর ওইদিনই ছেলেপক্ষ এলো আমাদের বাড়িতে। বাড়ির উঠোনে প্যান্ডেল টানিয়ে বিয়ের সব আয়োজন। সেখানে বর-কনের জন্য মঞ্চ করা হয়েছে। আমার মধ্যবিত্ত বাবা তার সাধ্যের সবটুকু ঢেলে দিয়ে তার সঙ্গে আন্তরিকতা মিশিয়ে আয়োজন করেছেন খাবারের। বরপক্ষ খাওয়া দাওয়াও করেছে।

এই বরযাত্রীর দলে ছিলেন বরের ফুফু। তিনি জেনেছি একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। এখানে বলে রাখি, যার সঙ্গে আমার বিয়ে হয় তিনিও একজন শিক্ষক বটেন। এই ফুফুই বিয়ের আয়োজনের এদিক সেদিক ঘুরছিলেন আর বারবার একটি কথা বলছিলেন কই কোথাও তো কোনো কিছু দেখছি না, এরা কি মেয়ের সঙ্গে আর কিছুই দেবে না। এক পর্যায়ে তিনি কথাগুলো সরাসরি পাড়লেন আমার এক আত্মীয়ের সঙ্গে।

তাকে বললেন, আমরা না হয় বলেছি কিছু নেবো না, তাই বলে কি তারাও কিছু দেবে না! এরা কী শুধু মেয়েকেই বিদায় করতে চায়। এটা কোন ধরনের সামাজিকতা! ইত্যাদি ইত্যাদি। কথাগুলো খুব দ্রুত ছড়াতে থাকে। এক সময় শোনা যায় ওঠে ছেলেপক্ষ যৌতুকের জন্য চাপ দিচ্ছে। আমার কানেও এসে পৌঁছায় সে কথা।

বিয়ের কনে সেজে শাড়ি পরে ঘামছি এমন সময় এমন কিছু কথা কানে আসাতে সমস্ত শরীরই যেনো শীতল হয়ে আসছিলো। জানা যায় ছেলেপক্ষ ফ্রিজ, টিভি, খাট এসব পেতে চায়। এভাবে এক-দুই কথা ক্রমেই বাড়তে থাকে আর আমি মঞ্চে বসে ঘামতে থাকি। একপর্যায়ে দেখি বর আমার পাশ থেকে উঠে গেলেন। কিছুক্ষণ পর তিনি এসে আমাকে চুপে চুপে কিন্তু রাগতস্বরে বললেন, ‘এদের থামতে বলো এবং আমার ফুফুর কাছে মাফ চাইতে বলো নইলে অঘটন ঘটবে।

’ আমি কী করবো বুঝতে পারছিলাম না। চুপ করে বসে আছি। ছেলেপক্ষের আরও কয়েকজন ততক্ষণে উত্তেজিত। দেখিয়ে দেবো, এটা করবো, সেটা করবো এমন সব কথা চলছে। বর প্রথম আলোর বন্ধুসভার সদস্য।

তার পক্ষে অনেক কিছুই করা সম্ভব। আমার বেচারা বাবা ছেলেপক্ষকে কিছুই বলতে পারছেন না। ঘটনার এ পর্যায়ে ছেলের ফুফু চলে এলেন মঞ্চের সামনে, এসে বললেন, বিয়ে তো হয়েই গেছে। এখন কিছু করার নেই। আমরা এই মেয়েকে বাপের বাড়িতেই পাঁচ বছর ফেলে রাখবো।

তখন এরা বুঝবে ঠ্যালা কাকে বলে। আজ মেয়ে তুলে নেওয়া হবে না। ’ এ কথাগুলো শুনে আমি বরের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলার তার চোখেমুখেও যেনো একই কথার সায়। আমি মনে মনে তখন অনেক কিছু ভাবলাম। এমন একটি ছেলের সংসারে গিয়ে আমি কি সুখী হতে পারবো? আমাকে যদি পাঁচ বছর বাবার বাড়িতে ফেলে রাখা হয় তখন কি হবে? আমার মস্তিষ্ক দ্রুত কাজ করতে থাকলো।

মনে হচ্ছিলো এখনই একটি সিদ্ধান্্ত নেওয়ার সময়। এবং সিদ্ধান্তটি নিলাম। এক ঝটকায় আমি উঠে পড়লাম, মঞ্চ ছেড়ে বের হয়ে গেলাম। খুলে ফেললাম বিয়ের গহনা, ছুড়ে ফেললাম শাড়ি। বলে দিলাম এ বিয়ে আমি মানি না।

এ স্বামীর সংসার আমি করবো না। এবার আসুন মেয়ের কথাগুলো ভেবে দেখি। তার কথামত ছেলের ফুফু বলেছে সামাজিকতার খাতিরে কিছুই কি দিবে না? ব্যাপারটার সাথে যৌতুকের সম্পর্কটা আসল কিভাবে? প্রতিটি বিয়েতেই কনেপক্ষ বরকে সাধারনভাবে কিছু না কিছু দেয়। এটা একটা রেওয়াজে পরিনত হয়ে গেছে আমাদের দেশে। বয়স্ক ঐ মহিলা এই কথা ভেবেই হয়ত কথাটি বলেছেন।

তারপর ঘটনা কোনদিকে মোড় নিল? ফারজানার ভাষ্যমতে জানা যায় ছেলেপক্ষ ফ্রিজ, টিভি, খাট এসব পেতে চায়। সে জেনেছে ভাল কথা কিন্তু ছেলেপক্ষের কোন সে লোক এ দাবীগুলো করেছে তার কোনো সঠিক তথ্য সে দিতে পারে নাই। ব্যাপারটি এমন হল না আমি জেনেছি মতি মিয়া খুন করেছে কিন্তু আমি নিজে দেখিও নাই নিজ কানে শুনিও নাই। তারপর বর চুপিচুপি এসে বলল “এদের থামতে বলো এবং আমার ফুফুর কাছে মাফ চাইতে বলো নইলে অঘটন ঘটবে। ’ ঘটনাটা লক্ষ্য করেন ঐ পরিস্থিতিতেও ছেলেটা শান্ত হয়ে কথা বলছিল তার মানে কোনো খারাপ কিছু ঘটুক তা তার চিন্তাতেও ছিল না।

কিন্তু এখানে কথা হল এমন কি ঘটনা ঘটল যার জন্য বর তার ফুফুর কাছে ক্ষমা চাইতে বলতে বাধ্য হল? মানে ঐ মহিলাকে বড় ধরনের অপমান করা হয়েছিল তাই না? পুরা ব্যাপার ভাল করে ভেবে দেখলে স্পষ্ট বুঝা যায় ছেলেটার কোনো দোষই নাই বরং মেয়েটা নাটক গুলো ঘটিয়েছে বিশেষ কোনো উদ্দেশ্যে। ইতিমধ্যে একটা উদ্দেশ্য সফল যথেষ্ট আলোচনায় সে এসে গেছে। জাতীয় এই বীর হয়ত তার প্রতিষ্টানে বিশেষ কোনো সুবিধাও আদায় করতে পারবে এখন। আর বাকিটা আগামি একবছরের মধ্যে আমরা দেখতে পাব। বি:দ্র: প্রচুর অ্যালকোহল সেবন ও অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনে পুরুষত্ব ধীরে ধীরে লোপ পায়।

তখন ছুকছুক করা ছাড়া উপায় থাকে না। নারীবাদিদের যতগুলারে কাছ থেকে দেখেছি তাদের সবগুলোর মাঝে এই সমস্যাটাও প্র্রকট। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।