আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পাকিস্তানের ছয়টি স্থানে ছিলেন ওসামা

আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন আল-কায়েদার সাবেক প্রধান ওসামা বিন লাদেন ২০০২ সালের মাঝামাঝি সময় পাকিস্তানে আসেন। এরপর সেখানে এক দশকে অ্যাবোটাবাদ ছাড়াও আরও পাঁচটি স্থানে অবস্থান করেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, পাকিস্তান সরকারের গঠিত অ্যাবোটাবাদ কমিশন নামের বিচার বিভাগীয় কমিটির গোপন প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। ওসামার তিন স্ত্রী, পাকিস্তানের অন্তত ২০০ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা ও অন্যদের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়। ওই প্রতিবেদন এখনো প্রকাশিত হয়নি।

তবে সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নির্দেশে ২০১১ সালের মে মাসে মার্কিন বিশেষ বাহিনীর কমান্ডোরা পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে অভিযান চালিয়ে ওসামাকে হত্যা করে।
পাকিস্তানের ভেতর অনুপ্রবেশ করে ওসামাকে হত্যার অভিযান চালানোয় মার্কিন কর্তৃপক্ষের ওপর ক্ষুব্ধ হয় পাকিস্তান। এতে দুই দেশের সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য অবনতি ঘটে। ওসামা হত্যার পর ঘটনা তদন্তে পাকিস্তানি পার্লামেন্টের আহ্বানে স্বাধীন অ্যাবোটাবাদ কমিশন গঠন করা হয়।

পাকিস্তানের অভ্যন্তরে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) তত্পরতা সম্পর্কে স্থানীয় গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষের (আইএসআই) অজ্ঞতার বিষয়টিও খতিয়ে দেখতে বলা হয়।
৩৩৬ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে সপরিবারে ওসামার অবস্থানের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০২ সালের বসন্ত বা গ্রীষ্মের কোনো একসময় পাকিস্তানে আসেন ওসামা। ২০০৫ সালের আগস্টে অ্যাবোটাবাদে বসবাস শুরু করার আগ পর্যন্ত অন্তত পাঁচটি ভিন্ন জায়গায় বাস করেন তিনি। এসব এলাকার মধ্যে রয়েছে পেশোয়ার, পশ্চিম পাকিস্তানের উপজাতি-অধ্যুষিত দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান ও বাজু এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা সোয়াত ও হরিপুর।

শুধু তাই নয়, ওসামার পরিবারের সদস্যরা করাচি, কোয়েটা ও ইরান-পাকিস্তান সীমান্ত এলাকায় বাস করেছেন। এ সময় তাঁরা অত্যন্ত সাধারণ ও মিতব্যয়ী জীবন যাপন করতেন। তাঁরা নিজেদের প্রকাশ করতেন না। আত্মগোপনের জন্য ওসামা বিন লাদেন বিশেষ ধরনের টুপি (কাউবয় ক্যাপ) ব্যবহার করতেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওসামা বিন লাদেনের অবস্থান সম্পর্কে মার্কিন গোয়েন্দারা প্রথম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছিলেন আল-কায়েদার সদস্য খালিদ বিন আত্তাশের কাছ থেকে।

করাচি থেকে ২০০২ সালে আত্তাশকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর মাধ্যমে শনাক্ত করা হয় ওসামার ডান হাত বলে পরিচিত কুয়েতি নাগরিক আবু আহমেদ আলি কুয়েতিকে। আর এই কুয়েতির সূত্র ধরেই মার্কিনরা ওসামাকে খুঁজে পায়।
২০০১ সালের অক্টোবর বা নভেম্বরে ওসামার পরিবার করাচিতে অবস্থান নেয়। কুয়েতি তখন সঙ্গেই ছিলেন।

ওসামা ২০০২ সালে সপরিবারে পেশোয়ারে যান। ওই বছরের মাঝামাঝি তাঁদের সঙ্গে আবার যোগ দেন কুয়েতি। সেখান থেকে তাঁরা সোয়াত উপত্যকায় চলে যান। সেখানে ওসামার সঙ্গে দেখা করতে আসতেন তাঁর সহযোগী খালিদ শেখ মোহাম্মদ। তিনি এক মাস পরই রাওয়ালপিন্ডিতে গ্রেপ্তার হন।

এতে আতঙ্কিত ওসামা পরিবার নিয়ে হরিপুরে চলে যান। পরিবারটির সঙ্গে হরিপুরে ২০০৫ সাল পর্যন্ত অবস্থান করেন কুয়েতি ও তাঁর ভাই ইব্রার। এরপর সবাই অ্যাবোটাবাদে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। কুয়েতি ভুয়া পরিচয়ে অ্যাবোটাবাদে জমি কিনে বাড়ি নির্মাণের কাজ তত্ত্বাবধান করেন। বাড়িটি নির্মাণে বিভিন্ন অনিয়ম হলেও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ তা বন্ধ করতে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

তিনতলা বাড়িতে একাধিক স্ত্রীসহ ওসামা পরিবারের পাশাপাশি কুয়েতি পরিবারের জন্যও জায়গা রাখা হয়। ওসামা কখনোই টেলিফোন, ইন্টারনেট বা কেবল সংযোগ ব্যবহার করতেন না। তবে বিভিন্ন শহরে অবস্থানকালে তিনি মাঝেমধ্যে ডিশ অ্যানটেনার মাধ্যমে আল-জাজিরা টেলিভিশন দেখতেন। মার্কিন কমান্ডো বাহিনী যখন লাদেনের ঘরে ঢুকে পড়ে, তখন তিনি সশস্ত্র ছিলেন এবং গ্রেনেড খুঁজছিলেন। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.