সকালের মিষ্টি রোদ পেরিয়ে আমি এখন মধ্যগগনে,
- চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল নয়। তারপরও ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ ফাইনালের চেয়ে বড় কিছু! অন্তত উপমহাদেশের ক্রিকেটামোদীদের কাছে। হার মানতে চায় না কোনো পক্ষ। তাই রীতিমতো জানবাজি রেখে খেলেছেন ক্রিকেটাররা। শোয়েব মালিকের মারমুখী শতক ও মোহাম্মদ ইউসুফের অর্ধ শতকে পাকিস্তান ৫০ ওভারে রান তোলে নয় উইকেটে ৩০২।
জেতার জন্য ৩০৩ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে গৌতম গম্ভিরের আক্রমণাত্মক ও রাহুল দ্রাবিড় মাটি কামড়ানো অর্ধ শতকে হারজিতের পাল্লা দুলতে থাকে পেন্ডুলামের মতো। কিন্তু দ্রাবিড় বিদায় নিলে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ভারত অল-আউট হয় ২৪৮ রানে। সেই সঙ্গে ৫৪ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে পাকিস্তান।
সেঞ্চুরিয়নে সুপারস্পোর্ট পার্কে শনিবার এ গ্র"পের ম্যাচে শচীন টেন্ডুলকার দলীয় ২৩ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৮ রানে মোহাম্মদ আমেরের বলে উইকেটের পেছনে ধরা পড়লে ভারতের ইনিংসের হাল ধরেন গৌতম গম্ভির।
ব্যক্তিগত ৫৭ রানে দলীয় ৯০ রানের মাথায় দুভাগ্যজনক রান আউটের শিকার হন। ৪৬ বলের ইনিংসে তিনি চার মারেন সাতটি।
২০ ওভার পর খেলার মোড় কিছুটা পাল্টে যায়। হারিয়ে বসে পরপর দু'টি উইকেট। ১২৬ রানের মাথায় বিরাট কোহলি শহীদ আফ্রিদির বলে উমর গুলের হাতে ধরা পড়েন।
আবারো আঘাত হানেন আফ্রিদি। অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনিকে (৩) এলবিডব্লিউ-এর ফাঁদে ফেলেন দলীয় ১৩৩ রানের মাথায়।
কিন্তু সুরেশ রাইনার প্রচণ্ড মারে ভারত আবার ফিরে আসে খেলায়। ৪১ বলে ৪৬ রান করেন তিনি। এর পরপরই ইউসুফ পাঠান আউট হয়ে গেলে হারজিতের পাল্লা হেলে যায় পাকিস্তানের দিকে।
তবে রাহুল দ্রাবিড় যতক্ষণ উইকেটে ছিলেন ততক্ষণ পাল্লা দুলতে ছিল পেন্ডুলামের মতো। কিন্তু দলীয় ২৩৮ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৭৬ রানে দ্রাবিড় আউট হয়ে গেলে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়তে থাকে ভারতের।
শেষ পর্যন্ত ভারতের ইনিংস গুটিয়ে যায় ২৪৮ রানে। পুরো পঞ্চাশ ওভারও খেলতে পারেনি। খেলেছে ৪৪ ওভার ৫ বল।
পাকিস্তানের মোহাম্মদ আমের, নাভেদ-উল-হাসান, সাঈদ আজমল ও শহীদ আফ্রিদি দু'টি করে উইকেট নেন।
দিনের শুরুতে চিরপ্রতিদ্বন্দী ভারতের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিং-এ নামে পাকিস্তান। কিন্তু শুরুটা ভালো না হলেও শোয়েব মালিক ও মোহাম্মদ ইউসুফের ২০৬ রানের জুটিতে পাকিস্তানের রান পেরিয়ে যায় তিন শ'র কোঠা। থামে নয় উইকেটে ৩০৩-এ।
অত্যন্ত আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে ১২৮ রান করেন সাবেক অধিনায়ক শোয়েব মালিক।
১২৬ বল খেলে দড়ির ওপারে বল পাঠান ১৬ বার। বাদ যাননি মোহাম্মদ ইউসুফও। আশিষ নেহরার বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৮৮ বলে ৮৭ রান করেন। তিনি তার ইনিংসটি সাজান ৭টি চার দিয়ে।
এর আগে দলীয় ২৯ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ২০ রানে আশিষ নেহরার বলে হারভাজন সিং-এর হাতে ধরা পড়ে বিদায় নেন উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ইমরান নাজির।
অপর উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান কামরান আকমল ২২ বলে ১৯ রান করে নেহরার বলে সরাসরি বোল্ড হন। তখন দলের রান ছিল ৫৩।
সুবিধা করতে পারেননি অধিনায়ক ইউনিস খানও। দলীয় ৬৫ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ২০ রানে হারভাজন সিং-এর বলে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন। ৩৩ বল খেলে সীমানার ওপারে বল পাঠান তিনবার।
শোয়েব মালিক ও মোহাম্মদ ইউসুফ আউট হওয়ার পর রান রেট বাড়াতে গিয়ে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে পাকিস্তান। শহীদ আফ্রিদি (৪) ২৭৮, উমর আকমল (০) ২৮৯, শোয়েব মালিক ৩০০, উমর গুল (০) ৩০১, মোহাম্মদ আমের (০) ৩০২ রানের মাথায় আউট হন।
নাভেদ-উল-হাসান ১১ ও সাঈদ আজমল ০ রানে অপরাজিত থাকেন।
ভারতের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ছয়জন বোলার ব্যবহার করেন। তাদের মধ্যে সব চেয়ে সফল ছিলেন আশিষ নেহরা।
দশ ওভার বল করে ৪ উইকেট নেন ৫৫ রানে।
ভারত দল: গৌতম গম্ভির, শচীন টেন্ডুলকার, রাহুল দ্রাবিড়, সুরেশ রাইনা, মহেন্দ্র সিং ধোনি (অধিনায়ক), বিরাট কোহলি, হারভাজন সিং, ইউসুফ পাঠান, আর পি সিং, আশিষ নেহরা ও ইশান্ত শর্মা।
পাকিস্তান দল: ইমরান নাজির, কামরান আকমল, শোয়েব মালিক, ইউনিস খান (অধিনায়ক), মোহাম্মদ ইউসুফ, উমর আকমল, শহীদ আফ্রিদি, নাভিদ-উল-হাসান, মোহাম্মদ আমের, সাঈদ আজমল ও উমর গুল।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/টিএ/টিআর/০৩১৭ ঘ.
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।