একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত কারাবন্দি বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী (সাকা চৌধুরী) এখন কম কথা বলেন। আগের মতো তিনি আর কারাগারের কর্মচারীদের সঙ্গে উচ্চবাচ্য ও হাসি-ঠাট্টা করেন না। সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে তার এক সেবককে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মামলা হওয়ার খবর শোনার পর থেকে তার মধ্যে এ পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় বলে জানায় কারা কর্তৃপক্ষ।
নির্যাতিত ওই সেবকের বাবা আব্দুস সালাম গত ১৮ মার্চ গাজীপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। বাদির বাড়ি শেরপুর জেলার হাতিআগলা গ্রামে।
বিচারক জয়দেবপুর থানার ওসিকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ২০ মে মামলার পরবর্তী শুনানির দিন রেখেছেন বিচারক।
চট্টগ্রামের সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধের মামলার বিচার চলছে। তিনি কাশিমপুর কারাগারে ডিভিশনপ্রাপ্ত আসামি।
মামলার বাদি আব্দুস সালাম অভিযোগ করেন, তার ছেলে একটি খুনের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়ার পর ২০০৮ সাল থেকে কাশিমপুর কারাগারে ছিলেন।
কারা কর্তৃপক্ষ তাকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সেবক হিসাবে নিয়োগ দিয়েছিল। সালাউদ্দিন কৌশলে তাকে যৌন হয়রানি করেন।
শনিবার বিকাল ৩টার দিকে সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ফরহাদ কাদের চৌধুরী, ছেলে হুম্মান কাদের চৌধুরী ও ফাইয়াজ কাদের চৌধুরী কাশিমপুরের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১ তার সঙ্গে এ দেখা করতে যান।
সাক্ষাৎ শেষে ছেলে হুম্মান কাদের চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাবা কারাগারে ভালই আছেন। তার কোন সমস্যা নেই।
তিনি ৩৫ বছর ধরে সুনামের সাথে রাজনীতি করছেন। তাকে যারা পছন্দ করেন না অর্থাৎ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তার সুনাম নষ্টের পাঁয়তারা করছেন। বর্তমান সরকারও একই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। ”
যৌন নিপীড়ন মামলার বাদি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ওয়াজ উদ্দিন মিয়া জানান, কাশিমপুর কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় ওই সেবককে জামিন দেওয়ার লোভ দেখিয়ে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে গত বছরের ২০ নভেম্বর থেকে এ বছরের ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে তাকে একাধিকবার যৌন নিপীড়নের অভিযোগে রয়েছে।
কাশিমপুরের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পার্ট-১-এর কারারক্ষক মো. নেছার আলম জানান, ওই সেবকের বাবা এর আগে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে কারা মহাপরিদর্শক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে কারা তত্ত্বাবধায়ক জামিল আহমেদ চৌধুরীকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। অভিযোগের তদন্ত করা হলেও প্রতিবেদন তৈরি শেষ হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে কারা তত্ত্বাবধায়ক জামিল আহমেদ চৌধুরীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
কারারক্ষক জানান, ওই সেবককে সাকা চৌধুরীর কক্ষ থেকে জানুয়ারির শেষ দিকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয় এবং ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে তাকে ময়মনসিংহ কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে অন্য একজন তার সেবক হিসেবে কাজ করছেন।
কারাগারে ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিদের জন্য সরকারিভাবে সেবক নিয়োগের বিধান রয়েছে। সাধারণত কয়েদীদের মধ্যে থেকেই এ নিয়োগ দেয়া হয়। সে অনুযায়ী সাত মাস আগে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এক কয়েদীকে সেবক নিয়োগ করা হয়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।