প্রতিবিম্ব এর মত সবকিছু, কিছুটা বাস্তব আবার কিছুটা সময় ঠিক বিকেল ৪:৩০;
অফিস বন্ধ থাকায় আরাম করে বসেছি নস্টালজিয়ায় ভোগার জন্য। কিছুক্ষন নরম রোদ আর ফুরফুরে বাতাস গায়ে মাখাবো আর কিছু আগোছালো চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাওয়াবো। মজাটা নেয়া শুরু করার সাথে সাথে আশানরূপ ভাবে বাতাসে মিষ্টি গন্ধ পাচ্ছি। এইটা যে আসলে কিসের গন্ধ সেটা ভাবতে মননিবেশ করলাম। মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে ঘাস মারালে যে রকম ঠিক সেই রকম, আবার মনে হচ্ছে ধান কাটার পরে বেশ কিছুদিন যাওয়ার পরে মাঝের আঁইল ধরে হেটে গেলে যে গন্ধটা পাওয়া যায় সেটাই প্রকৃতি কোন এক ভাবে নিজের মধ্যে নিয়ে ঘুরে বেরাচ্ছে আর একটু পরপর নিজের ভাণ্ডার খুলে আমাদের জন্য কিছুটা দিয়ে যাচ্ছে।
আবার মনে হচ্ছে আরে না এইটাতো আগে এই সময়ে ক্রিকেট খেলার পরে সারা হাতেপায়ে ধূলা নিয়ে যখন ক্লান্ত হয়ে বসতাম তখন তরতাজা করার জন্য এই ঘ্রাণ চলে আসতো।
সেটা যাই হোক না কেন এইটা আসলে আমার ছোটবেলার নানা বাড়ির গ্রাঁমের ঘ্রাঁণ।
সেদিন কই যেন পড়লাম ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক এর কারনে ধিরে ধিরে চড়ুই সমাজ নাকি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে, এরপরে মন কিছুটা বিষণ্ণ হয়ে গেলেও এখন চনমনে লাগছে কারন আমার আশেপাশে শতখানেক চড়ুই দিনশেষে নিজেদের সাথে খুনসটিতে ব্যাস্ত আছে। যদিও অনেক আগে এইরকম এক বিকেলে বড়ভাই এর সাথে শিকারে যেয়ে ১১টা চড়ুই আর ৫টা সাদা বক মেরেছিলাম, সেই জন্যে মনে মনে তাদের নাতিপুতিদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলাম। আগেনা আমাদের ওখানে প্রচুর চড়ুই ছিল, বাড়ির দরজাতে একটা ধানের মিল, রোজ সকালে তারা ধান শুঁকাতে দিত আর কোত্থেকে অনেক চড়ুই আর কিছু কবুতর ওই ধান খেতে চলে আসতো আর আমরা ওঁত পেতে থাকতাম কি করে একটা কবুতর ধরা যায়।
এখন আর ওই ধানের মিলটা নেই, ওটাকে পরে আমার বাবাজান সরিষা তেলের মিল বানালো আর এখন সব বন্ধ, পরে হয়তো চাহিদা মোতাবেক অন্যকিছু করা হবে।
বিকেল প্রায় শেষ, মাথার উপরে কতগুলা চিল উড়ছে শেষ রোদটুকু শুষে নেয়ার জন্য। পোলাপানগুলা খেলা শেষে ক্লান্ত হয়ে ঘরের দিকে হাঁটা দিছে। এদিকে হালকা কুঁয়াশা মন খারাপ করে এলোমেলো ভাবে লেপটে আছে চারিদিকে, শীত আসে নাই বলে তারা এখনো জমে উঠতে পারেনি। অবশেষে প্রকৃতি দর্শন আজকের মত এখনে শেষ করলাম, যাই নিচে যেয়ে গরম এক কাপ চা খাই......
হেমন্তের পাড়ে বসে দেখছি আমি আজ
কি করে ধুলায় লুটায় স্বর্ণালি ঐ সাঁজ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।