যা হচ্ছেনা বলা-
প্রথমে জেনে নেই ৩৪তম বিসিএস প্রিলিমিনারি এর অবস্থা। গত ৭ ফেব্রুয়ারি ৩৪তম বিসিএসের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। ২ লাখ ২১ হাজার ৫৭৫ জন এই পরীক্ষার জন্য অনলাইনে আবেদন করেন। গত ২৪ মে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। আর এতে ১ লাখ ৯৫ হাজার পরীক্ষার্থী এতে অংশ নেন।
আংগুলে গুনে দেখেন ২৬ হাজার ৫৭৫ জন নেই ৪ মাসে। ১ লাখ ৯৫ হাজার পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেন সাধারণ ক্যাডারের ৪৪২টি পদসহ মোট দুই হাজার ৫২টি পদের জন্য। অর্থাৎ একটি পদের বিপরীতে প্রায় ৯৫/৯৬ জন।
ওরা ১৫০ জন মেধাবী, কোটা প্রথার বিলুপ্তির জন্য প্রতিবাদ করল, রোজার আগের দিন শাহবাগের মত গুরুত্বপূর্ন একটা মোড় আটকিয়ে পুরা ঢাকাবাসীকে নাকাল করতে। যে শিবির-বিএনপি রোযার মাসে হরতালের ব্যাপারে সংযমি তাদের চাইতেও কয়েক ধাপ এগিয়ে গিয়ে আমাদের মেধাবী ভাইরা রাস্তা আটকালেন।
মিশ্র প্রতিক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আন্দোলনে একটা দিন পার করলেন, পুলিশ প্রশাসনও কিংকর্তব্যবিমুর ছিলো আন্দোলনের প্রথম দিন। দ্বিতীয় দিনের আন্দোলনে পুলিশ বাধা দিলো, আমাদের মেধাবী ভাইয়েরা আগুন, সাধারণ মানুষের গাড়ি ভাংচুর সহ নানান কৃর্তী করলেন। আশা করা যায় আগামীকালও মেধাবী ভাইয়েরা তাদের মেধার সহিংস ভূমিকা রাখবেন।
মেধাবী ভাইয়েরা বাস্তবের গান্ধিবাদি বা সিনেমার লাগে রাহো মুন্না ভাই এর মেধাবী সংস্করণের কোনো আন্দোলন করে দেখিয়ে দিতে পারতেন।
মেধাবী ভাইয়েরা মেধা দিয়ে কি বিচার করবেন এই ব্যাপারগুলো? একজন উপজাতি তার পাহার পর্বত অন্চলে যে সব প্রতিকুলতার মধ্য দিয়ে লেখাপড়া করে আপনি তার কত টুকুর মধ্য দিয়ে যান? যতই বলি নারী-পুরুষের সমান অধিকার, একজন নারী সমাজের/শরীরের/সংসারের নানান প্রতিকুলতার মধ্য দিয়ে যে লেখাপড়া করে জীবন সংগ্রামে টিকে থাকে আপনাকে তার কতটুকু ছুঁয়ে যায়? গ্রামের সেই যুবকটি যে ক্ষেতে কাজ করে, পরিবারের ঘানি টানে তার সাথে কি আপনারও তুলনা চলে? প্রতিবন্ধী এখনো আমাদের সমাজে অবহেলিত।
তারা যে করুণার দৃষ্টি নিয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার মনোবলে টিকে থাকে আপনি কি তা অনুভব করেন? বৈষম্যর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা বলছেন, হ্যাঁ তারা বৈষম্যর বিরুদ্ধেই যুদ্ধ করেছেন পাশাপাশি চেয়েছেন তার, তার পরিবারের জন্য একটি সুন্দর জীবন। যে মুক্তিযোদ্ধাদের কারণে আজ আপনি মেধাবী দাবি করতে পারছেন সেই মুক্তিযোদ্ধাদের বা তাদের পরিবারের প্রতি সম্মান জানাতে আপনার মেধা কেন বাধা দিবে? তিন লক্ষ নির্যাতিত মা-বোন দের কথা বলেন, তাদের পরিবারের একটি অংশের কোটাও চালুর দাবি করেন না কেন? দুই হাজার ৫২টি পদের জন্য ছোট করছেন মুক্তিযোদ্ধাদের, তাদের অবদানের। আপনার মেধা দিয়েই ধরে নিন না ১ হাজার ২৬ টি পদের জন্য আপনাদের মেধার লড়াই?
উন্নত বিশ্বে শুধু লেখাপড়া বা চাকরিতে নয় বাসে, ট্রেনে এবং অনান্য ব্যাপারেও প্রতিবন্ধী, মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ব্যাবস্থা আছে। উপজাতি কিংবা দলিতদের জন্য কোটা ব্যাবস্থা আছে। গরীবদের জন্য কোটা ব্যাবস্থা আছে।
আপনার মেধা কি প্রতিবন্ধী, উপজাতী, নারী, মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে একটু আলাদা, একটু সম্মানের চোখে দেখতে শেখায় না?
আপনার মেধা যদি আপনার অতীতকে শ্রদ্ধা করতে না শেখায় তবে আপনার মেধা দিয়ে ভবিষ্যতে কি করবেন?
সব জাতীর জীবনে মুক্তিযুদ্ধ আসেনা, সব জাতী রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা কিনেনা।
মুক্তিযুদ্ধের এই বাংলাদেশে, অবহেলিত, সুযোগ বন্চিতের এই বাংলাদেশে আপনার মেধার লরাই হউক ১ হাজার ২৬ টি পদের জন্য। আপনার পরিবারের কেউ গর্বের এই মুক্তিযুদ্ধের সময় হয়ত নানান কারণে অংশ নিতে পারে নাই, কিংবা পারেনাই মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে তাই বলে কি আপনার মেধা সম্মান করবেনা '৭১ এর বীর যোদ্ধাদের? তাদের অবদানের অস্বীকার করা মানে কি আপনার মেধার সীমাবদ্ধাতা নয়??! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।