আমার বিদ্রোহী হতে ইচ্ছে করে। দেশ নিয়ে খুব চিন্তায় আছি রাজধানীর আদাবরে একজন সাংবাদিককে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে পিটিয়েছে পুলিশ।
বুধবার গভীর রাতে ঢাকা মহানগরীর আদাবর থানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ এই সময় ওই সাংবাদিকের মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়।
কয়েকঘণ্টা পর খবর পেয়ে অন্য সাংবাদিকরা তাকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় আদাবর থানার একজন কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক নুরুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, "অফিসের দায়িত্ব পালন শেষে বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে আদাবর থানার শেখের টেক ২ নম্বর রোডের ২৯/এ, হোল্ডিং নম্বরের আমার ভাড়া বাসায় ফিরছিলাম। বাসার সামনে গিয়ে দারোয়ানকে ডাকাডাকির সময় পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান আমার বাসার সামনে এসে থামে। "
"পিকআপের সামনে বামদিকে বসা একজন পুলিশ সদস্য আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, আপনি কি এ বাসায় থাকেন? আমি মাথা নাড়িয়ে 'হ্যাঁ' সূচক জবাব দিলে ওই পুলিশ সদস্য আমাকে গাড়ির সামনে যাওয়ার নির্দেশ দেন। আমি গাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়ালে ওই পুলিশ সদস্য আমাকে ধমক দিয়ে বলে ওঠেন, 'মাথা ঝাঁকালি কেন? কথা বলতে পারিস না?' তখন ওই পুলিশ সদস্য আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, 'এত রাতে কী করিস, কোথা থেকে এলি'।
"
এর উত্তরে নুরুজ্জামান তাদের বলেন, "আমি মানবজমিন পত্রিকার সাংবাদিক। পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে আমাকে রাতেই বাড়ি ফিরতে হয়। তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, কেন রাতে ফিরবি। "
"তখন আমি বলি- রাতে চলাফেরা করা আইনগত অপরাধ নাকি? এ প্রশ্ন শুনে তিনিসহ পিকআপে বসে থাকা অন্যান্য পুলিশ সদস্য নানা অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করে গালিগালাজ করতে থাকেন। একপর্যায়ে কনস্টেবল শাহ আলম আমার শার্টের কলার চেপে ধরে অশ্ল¬ীল ভাষা ব্যবহার করে বলেন, 'শালা, তোর কাছে আইন শিখতে হবে'।
আমি তখন তাদের গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে কনস্টেবল শাহ আলম আমার মুখে ঘুষি মারেন। "
নুরুজ্জামান জানান, পুলিশের পিকআপের সামনে বাম পাশের সিটে বসা এসআই আনোয়ার তাকে গাড়িতে তোলার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে তিনি অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের তার সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিতে বলেন এবং তিনি যেন কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারেন সে বিষয়ে ওই পুলিশ সদস্যকে সতর্ক করে দেন।
নুরুজ্জামান বলেন, "শাহ আলম আমাকে মারতে মারতে হুমকি দিয়ে বলেন, 'কিছুক্ষণ আগে এ গলিতে দুই লাখ টাকা ছিনতাই হয়েছে। ওই মামলার আসামি বানিয়ে তোকে আইন শিখাব।
পায়ে গুলি করে তোকে ছিনতাইকারী বানাবো'। "
পুলিশ তাকে ২ নম্বর গলির শেষ মাথায় নিয়ে যায়। সেখানে ২০-২৫ জন শ্রমিক রাস্তার পাশে কাজ করছিল। পিকআপ থামিয়ে এসআই আনোয়ার হোসেন নেমে ওই শ্রমিকদের কাছে ফিসফিসিয়ে কী যেন বলছিলেন। এ সময় কয়েকজন অপরিচিত যুবক শাবল ও রড নিয়ে পুলিশ পিকআপের চারদিকে ঘুরতে থাকে।
নুরুজ্জামান বলেন, "এ সময় পুলিশের আচরণে মনে হচ্ছিল, তারা আমিনবাজারে ছয়ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনার মতো আমাকে গণপিটুনির শিকার বানাবে। এই সময় আমার সঙ্গে থাকা আরেকটি প্রায় চার্জশূন্য মোবাইল ফোনে আমার একজন সহকর্মীকে ঘটনা জানাই। তিনি ও আরো কয়েকজন সাংবাদিক ছুটে এসে আমাকে উদ্ধার করেন। "
এই বিষয়ে আদাবর থানার উপ-পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়ে গেছে। আপনারা এই বারের মতো বিষয়টা ছেড়ে দেন।
ভবিষ্যতে আর হবে না। "
জামান জানান, এই ঘটনাটি ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদকে জানানো হলে তিনি তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনারকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার মো. ইমাম হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "অভিযোগ পাওয়ার পরে থানার কনস্টেবল শাহ আলমকে ক্লোজ করা হয়েছে। "
"অতিরিক্ত উপ-কমিশনার হারুন উর রশিদকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে বলা হয়েছে। তদন্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
"
- আপনাদের কি কিছু বলার আছে,হ্যা আমার বলার আছে, দেশটা স্বাধীন হয়েই বোধহয় ভুল হল নয়তো শুনেছি পাকিস্তান প্রিয়ডে এমন আইয়ামে জাহেলিয়াত অবস্থা ছিল না!
সুত্র: বিডিনিউজ২৪.কম
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।