http://www.somewhereinblog.net/blog/Paranoid Gummo
টর্নেডো আক্রান্ত আ্যামেরিকান একটা শহর। সেখানকার খোঁজ কেউ রাখে না। পুরো পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন। মানুষজনের জীবনের কোন উদ্দেশ্য নেই। পার্টি করছে, গান গাইতে গাইতে চেয়ার ভাঙছে, ওভারব্রিজ থেকে বালক প্রস্রাব করছে নিচের মানুষদের ওপর।
আরো আছে, এ্যানিমেল টর্চার, ১৩-১৪ বছর বয়সী দুই বন্ধুর গ্লু স্নিফিং করতে করতে তাদের নিহিলিস্ট জীবন নিয়ে আলোচনা করা। এই শহরে কোন প্রাণ নেই, হাসি নেই, আনন্দ নেই। কিন্তু মানুষ তো! সে তার পথ ঠিকই বেছে নেবে। তাই তাদেরই একজন রাতের বেলা ঘুম থেকে উঠে চোখের ভ্রু কেটে ফেলার আনন্দে নাচে। এই মুভির সবচেয়ে কুখ্যাত সিন হল "দ্যা বাথটাব সিন"।
দৃশ্যটা কেমন? নিজ দায়িত্বে দেখে নিয়েন। খুব কুৎসিত একটি দৃশ্য, কিন্তু এটাই শহরবাসীর বিপর্যস্ত এবং উদ্দেশ্যবিহীন জীবনকে সবচেয়ে ভালোভাবে চিত্রায়ন করেছে। কারো কাছে দৃশ্যটা চরম ডিস্টার্বিং। আমার কাছে ডিপ্রেসিং।
ছবিটা আমার কাছে তেমন ভালো লাগেনি।
এমন ছবি আগেও দেখেছি, কিন্তু সেখানে চরিত্রগুলোর স্ফুটন ছিল, তীব্র এবং তীক্ষ্ন বিদ্রূপ ছিলো। ভাবনার অবকাশ ছিলো। কিন্তু এটাতে তেমন কিছুই নাই। পয়েন্টলেস। তবে কিছু কিছু দৃশ্য খুব সুন্দর।
।
ডাউনলোড লিংক
Red Room
একটা লো বাজেট জাপানিজ ভিডিও ফিল্ম। কাহিনীটা গতানুগতিক। একটা রুমে চারজনকে বসিয়ে দেয়া হয়। তাদেরকে চারটে কার্ড শাফল করে যেকোন একটা নিতে বলা হয়।
কার্ডগুলোর নাম্বার ১,২,৩ এবং কিং! যার ভাগ্যে কিং উঠবে সে অন্য যেকোন দুজন নম্বরধারীকে যা ইচ্ছা তাই বলবে। উদাহরণ দেই,
যে কিং হয়েছে, সে বলল" ২ কে ৩ টানা পাঁচ মিনিট ধরে থাপ্পর মারবে। এভাবে গেম চলতে থাকে। চলতে থাকবে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। জীবিতজন হবেন বিজয়ী।
যা ছিলো সাদামাঠা একটা সহজ গেম, তা ক্রমশঃ বর্বরতর হয়ে ওঠে। কেন তারা এই খেলা খেলছে যাবতীয় মনুষ্যত্ব বিসর্জন দিয়ে? কারণ, বিজয়ীর জন্যে রয়েছে এক মিলিয়ন ডলার পুরষ্কার। এবং জয়ী সেই হবে, যে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকবে।
মুভিটার মিউজিক ভালো না। সাসপেন্সঘন মুহূর্তের জন্যে উপযুক্ত না।
অভিনয় সাদামাটা।
ডাউনলোড
13 Tzameti
একটি ফ্রেঞ্চ মুভি। সেবাস্তিয়ান নামক এক তরুণ তার প্রতিবেশীর বাসায় গিয়ে একটা চিঠি নাম না খোলা অবস্থায় দেখে। কৌতূহল বশে সে চিঠিটির দিকনির্দেশনা অনুযায়ী প্যারিসের একটা ক্লাবে যায়। সেখানে ভয়ংকর এক খেলা চলছে।
প্রচুর অর্থের বিনিময়ে বিনোদন পেতে উপস্থিত হয়েছেন শহরের হোমরা-চোমরাগণ। খেলাটা হল রাশিয়ান রুলেট। নিয়ম- ১৩ জন বৃত্তাবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে। সবার পিস্তলে একটা করে গুলি লোড করে শাফল করা হবে। কেউ জানে না চেম্বারের কোন জায়গায় গুলিটি রয়েছে! প্রথমে যে তার পাশের জনকে গুলি করবে, সে মরে গেলে তো শেষ, আর বেঁচে থাকলে তার পাশের জনকে গুলি করবে।
চক্র এমনভাবে চলতে থাকবে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। একসময় খেলার উত্তেজনা বাড়ানোর জন্যে দুটি করে গুলি চেম্বারে ভরা হয়। শেষ পর্যন্ত জিতে যায় সেবাস্তিয়ান। তারপর? জানতে হলে দেখতে হবে!
ছবিটি সাদা-কালোয় নির্মিত। এ কারণে আলাদা একটা ভিন্টেজ/ফিল্ম নয়র ছাপ রয়েছে।
স্টাইলিশ একটা ছবি। পুরো সময়টায় স্নায়ুদৌড় চলে! আ মাস্ট সি।
Visitor Q
Visitor Q
এটাও জাপানিজ মুভি। এক অদ্ভুত পরিবারের গল্প। সেখানে বাবা মিডিয়া জব থেকে চাকুরিচ্যুত হয়ে ঠিক করে একটা ডোমেস্টিক সেক্স-ভায়োলেন্স নির_ভর ডকুফিল্ম বানাবে।
তার ঘরেতে সেই জিনিসের অভাব নেই অবশ্য! সেখানে ছোট ছেলে স্কুল থেকে নিগৃহীত হয়ে এসে মাকে পিটায়। তার মেয়ে চলে গেছে দেহ বিক্রী করতে। বাবা সবকিছু ভিডিও করে রাখেন। একদিন হঠাৎ তার একজন পথিকের সাথে দেখা হল। যার হাতে একটা পাথর।
সেই অদ্ভুত পথিকের নামই "ভিজিটর কিউ"! ধীরে ধীরে অদ্ভুত সব ঘটবা ঘটতে থাকে। এমন অদ্ভুত এবং ডিসগাস্টিং মুভি খুব কম দেখেছি। শেষটা আরো অদ্ভুত। তবে তার মাঝে একটা মেসেজ আছে। খুঁজে নিয়েন।
ডাউনলোড
Man Bites Dog
ফিল্মের ভেতর ফিল্ম! অর্থাৎ আমরা যে ফিল্মটাকে দেখছি তার দুটো অডিয়েন্স। একদল আমরা আরেকদল সেই ফিল্মের নির্মাতারা! একজন বেলজিয়ান সিরিয়াল কিলারের জীবন কাহিনী নিয়ে ডকুমেন্টারি তৈরি করছেন দুই তরুণ পরিচালক। সিরিয়াল কিলার মহাশয়ের বচন থেকে আমরা জানতে পারি যে তিনি অত্যন্ত রূচিশীল, ফ্যাশন সচেতন এবং শৈল্পিক মননের মানুষ। তিনি এও জানান যে কীভাবে খুন করে কোথায় লাশ ফেললে আর খোঁজ পাওয়া যাবে না এসবের ব্যাপারে তার প্রভুত জ্ঞান রয়েছে ! ধীরে ধীরে ফিল্ম ইউনিটটাও তার সাথে খুন এবং ধর্ষণে জড়িয়ে পড়ে। ঘটনা জটিল থেকে জটিলতর হতে থাকে।
ফিল্মটা এমন রিয়েলিস্টিকভাবে বানানো হয়েছে,যে অনেকে বুঝতেই পারে নি এটা সত্যি নাকি ফিল্ম (দুনিয়াতে বেকুবের অভাব নাই)। একটা চরম শকিং এক্সপেরিয়েন্স চাইলে এটার জবাব নাই!
ডাউনলোড
Incendies
দুই ভাই বোন মায়ের মৃত্যুকালে রেখে যাওয়া অদ্ভুত রকম একটা চিঠি পেয়ে চলে যায় নির্দেশমত অন্য একটি শহরে একজনকে খুঁকে বের করতে। আর বলব না,খালি দেখেন পুরাটা।
ডাউনলোড
Idioterne
ড্যানিশ ফিল্ম গুরু লার্স ভন এর অন্যরকম একটা মুভি। কিছু বুদ্ধিমান এবং সফল ব্যক্তি ঠিক করেন যে, তারা আর এই "স্বাভাবিক" মানুষদের মাঝে থাকবে না।
তারা একসাথে বেরিয়ে পড়েন। স্বল্পমাত্রার বুদ্ধিমত্তার জীবন কাছ থেকে দেখতে। এ কাজ করতে গিয়ে তারা এতটাই অবসেসড হয়ে পড়েন, যে তারাও তাদের মত আচরণ শুরু করেন। মানুষকে যতভাবে বিরক্ত করা সম্ভব করতে থাকেন! সবার কাছ থেকে এক্সট্রা এ্যাডভান্টেজ নেন। এ জীবন তাদের ভালো লাগে যায়।
মানুষগুলোকে ভালো লেগে যায়। তারপর একদিন... ফিরতেই হয় ঘরে। একটি দৃশ্য আছে গ্রুপের একজন মেয়েচরিত্রের বাসায় ফেরার পরে খাবার দিলে প্রতিবন্ধীদের মত আচরণ করা, সামান্য একটা দৃশ্য, কিন্তু প্রতি সেকেন্ডে আপনার স্নায়ুর ওপর চাপ প্রবল হতে থাকবেই!
ডাউনলোড
Inside
ফ্রেঞ্চ মুভি। ঘটনার সুত্রপাত একটি গাড়ি দুর্ঘটনা দিয়ে। একজন নারী তার স্বামী হারান, কিন্তু তার অনাগত বাচ্চার কোন ক্ষতি হয় না।
ঘটনার চার মাস পরে এক অদ্ভুত দেখতে মহিলা তার বাসায় এসে উপস্থিত হন। কে তিনি? কেনই বা, কীসের জন্যে বাসার সবাইকে হত্যা করা শুরু করলেন? এসব প্রশ্নের উত্তর দিলে বিশাল স্পয়লার হয়ে যাবে। ছবিটায় কাটাকুটি এবং ভয়ার্ত পরিবেশের এক অসাধারণ সমন্বয় ঘটিয়েছেন পরিচালক। কিছু কিছু দৃশ্য সহ্য করার মত না। একদম কাঁটার মত বিঁধে থাকবে।
ডাউনলোড
A Serbian Film
স্নাফ মুভির নাম শুনেছেন নিশ্চয়ই? এমন কিছু মুভির কথা প্রচলিত আছে, যেগুলোতে সত্যিকারের খুন এবং ধর্ষণ রেকর্ড করে গোপন বাজারে পাঠিয়ে দেয়া হয় চড়া মূল্যে। পারভার্ট বড়লোকেরা এগুলো কেনেন। এই ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র মিলোস নামক একজন প্রাক্তন পর্ন সুপারস্টার। তবে সে ওসব ছেড়ে দিয়ে একজন সুগৃহিনী এবং ফুটফুটে সন্তান নিয়ে কায়ক্লেশে জীবন কাটাচ্ছেন। দারিদ্রতার কারণে কিছুটা হতাশও।
ভালো কোন কাজ দরকার। সেই সময় ভুকমির নামক একজন ব্যক্তি তার কাছে নতুন একটা ফিল্মের প্রস্তাব দেন। সেটা হবে খুবই ইরোটিক একটা সেমি-পর্ন। টাকা পয়সার কথা চিন্তা করে মিলসের রাজি না হয়ে উপায় ছিলো না।
শুরু হয় তার নিজেকে ফিরে পাওয়ার জন্যে কঠোর পরিশ্রম।
শুরু হয় শুটিং এর কাজ। কাজগুলো বেশ অদ্ভুত। ফিল্ম কি এমন হয়? ধীরে ধীরে সেক্স আর পারভার্শনের প্রক্রিয়া দ্রুততর হতে থাকে অস্বাভাবিক ভাবে। সে বুঝতে পারে, আসলে তাকে নিয়ে একটি 'শৈল্পিক' স্নাফ ফিল্ম বানানোর পরিকল্পনা চলছে। সে যতই বের হতে চাক না কেন, পারে না।
তাকে স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ দিয়ে এক কামুক মহাদানবে পরিণত করা হয়।
এই জাতীয় ছবিতে সাধারণত কে কত রক্ত, যৌনতা, পারভার্শন এসব দেখাতে পারে তার প্রতিযোগিতা চলে। এই ছবিতে সবই আছে, সেই সেইসাথে মানবিক দৃষ্টিতে দেখারও অবকাশ আছে। এমন ছবি শেষ করলে মন খারাপ হয় না। এটার জন্যে হয়।
ডাউনলোড
এবং সবশেষে যে মুভিটার কথা বা বললে তালিকাটা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে তা হল, Salò, or the 120 Days of Sodom
পৃথিবীর সবচেয়ে বিতর্কিত ফিল্মগুলোর মাঝে একটা। কাহিনীর সার সংক্ষেপে বলা আছে, "Four fascist libertines round up 9 teenaged boys and girls and subject them to 120 days of physical, mental and sexual torture"
ভুলে যান ওসব ফ্যাসিজম! ভুলে যান ইতালি! আপনার কাছে অসীম ক্ষমতা থাকলে যৌনবিকৃতি, হত্যা এবং অত্যাচার নেহায়েৎ একটা বিনোদনের উৎস। আমি বেশি ডিটেইলসে যাবো না। শুধু শেষের দিকের দুটো দারুণ দৃশ্যের কথা উল্লেখ করব। একটা হচ্ছে, যখন খোলামাঠের ওপর বালক-বালিকাগুলোকে ওভাবে অত্যাচার করা হচ্ছিল, তখন সেই ফ্যাসিস্ট দূরবীন দিয়ে দেখলো কেন? দূরবীনটাকে ক্লোজআপে নিয়ে আসা হল কেন? এটা অডিয়েন্সকে নিয়ে একটা খেলা।
হ্যাঁ, প্রিয় দর্শকমন্ডলী আপনারা যতটা না ফিল্ম দেখছেন তার চেয়েও বেশি। আপনাকে জাস্ট দুরবীনটা ধার দেয়া হল! তাদের জায়গা আমরা থাকলে হয়তো আমরাও এমন করতাম। মানুষের নিম্নস্তরে পতিত হবার কোন শেষ নাই। দূরবীন দিয়ে হত্যা এবং নির্যাতন দেখা শেষ করে মৃদুলয়ের সঙ্গীতের সাথে তাল মিলিয়ে নেচে সাধারণ কথাবার্তা বলি আসুন! এমনটাই যেন স্বাভাবিক!
আমার প্রিয় একটি মুভি। আমার বস Micheal Haneke এরও!
Salò, or the 120 Days of Sodom
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।