আমরা জানি একদিন আমরা মরে যাব এই জন্যেই পৃথিবীটাকে এত সুন্দর লাগে। যদি জানতাম আমাদের মৃত্যু নেই তাহলে পৃথিবীটা কখনোই এত সুন্দর লাগতো না বিংশ শতাব্দীর এক অপার বিস্ময় বিশ্বের সর্ববহৎ জাহাজ ছিল টাইটানিক । আটলান্টিক মহাসাগরে বিভিন্ন সময়ে অসংখ্য জাহাজডুবির ঘটনা ঘটেছে কিন্তু টাইটানিকের ডুবে যাওয়ার ঘটনা ছিল বিস্ময়কর ও রহস্যজনক। ১৯১২ সালে প্রথম সমূদ্র যাত্রাতেই ডুবে যায় বিশ্বের বৃহত্তম যাত্রীবাহী জাহাজ টাইটানিক । টাইটানিকের প্রথম অভিযান ছিল দুই অভিজাত এলাকা বিট্রেন থেকে নিউইয়র্ক ।
১১ এপ্রিল ১৯১২ সাল । দুপুর ২-০০ টায় কুইন্স টাউন থেকে ১৩১৬ জন যাত্রী ও ৮৯১ জন ক্রু নিয়ে নিউইয়র্কের পথে আপলান্টিক পাড়ি দিতে যাত্রা শুরু করে টাইটানিক। যাত্রার দিন থেকে পাঁচ দিনে তাদের গন্তব্যে পৌঁছার কথা ছিল কিন্তু চতুর্থ দিন অর্থাৎ ১৪ এপ্রিল রাত ১১-৪০ মিনিটে হিমশৈলের সাথে ধাক্কা খাওয়ার প্রায় আড়াই ঘন্টা পর সমূদ্রের অতলে তলিয়ে যায় টাইটানিক । যা আজও বিশ্ববাসীর কাছে রহস্যময় । নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হোয়াইট ষ্টার লাইন তাদের জাহাজটি নির্মাণ ও সাজ-সজ্জার জন্য ব্যয় করেছিল ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ।
টাইটানিকের নিজস্ব ওজন ছিল ৪৬ হাজার ৩২৮ টন। যাত্রী ও মালামালসহ বহন ক্ষমতা ছিল ৬৬ হাজার টন। টাইটানিক লম্বায় ৮৮২.৫ ফুট প্রস্থে ৯২.৫ ফুট । বিরাট চারটি চিমনি ছিল। একদম তলা থেকে চিমনির শীর্ষ পর্যন্ত উচ্চতা ছিল ১৭৫ ফুট।
দশটি ডেক ছিল টাইটানিকের। জলসীমা থেকে বোট ডেকের উচ্চতা ৬২.৫ ফুট। ডেকগুলো হেঁটে বেড়ালে সাত মাইল হাঁটার সমান হতো। প্রায় ১১ তলা দালানের সমান উচ্চতা ছিল টাইটানিকের । আর গতিবেগ ছিল ২৪.২৫ নট।
যাত্রীদের দেখাশুনা ও বিভিন্ন সেবা প্রদানের জন্য গড়পড়তা প্রতি যাত্রীর জন্য প্রায় একজন করে কর্মচারী ছিল হাহাজে । রাজকীয় কায়দায় আয়োজিত সব সুযোগ সুবিধা ছিল জাহাজে। টাইটানিকের সমূদ্র যাত্রার পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ৬৩ বছর বয়স্ক ক্যাপ্টেন স্মিথকে যার ছিল দীর্ঘদিন সমূদ্র যাত্রার ব্যাপক অভিজ্ঞতা । দূর্ভাগ্য সবকিছুতেই পিছু নিয়েছিল টাইটানিকের । ২০২০৭ জন ব্যক্তির জন্য জাহাজে লাইফবোট ছিল মাত্র ২০টি ।
কারণ টাইটানিক এমনভাবে নির্মাণ করা হযেছিল যে, ধরে নেয়া হয়েছিল এটি কখনও কোন অবস্থাতে ডুববেনা তাই মালিক পক্ষ অযথা লাইফবোট দিয়ে ডেকের জায়গা নষ্ট করতে চান নি। দুই স্তরবিশিষ্ট খোলের সমন্বয়ে এটি তৈরী করা হয়েছিল। কেবল আয়তনেই বিশলাল ছিল না এটি দেখতেও অত্যন্ত মনোরম ছিল।
১৯১১ সালের ৩১মে শিপইয়ার্ডে প্রথম জ্বলে ভাসানোর পর প্রায় ১০ মাস সময় ব্যয় করা হয়েছিল এটিকে মনোহর করে সাজাতে।
মালিক পক্ষের সৌভাগ্যের সম্মানের,গর্বের আর অহংকারের বিষয় ছিল যে টাইটানিক দুর্ভাগ্যই পরিণতি হয়েছিল তার ।
আর সেই সঙ্গে দুর্ভাগ্য বয়ে এনেছিল তৎকালীন ব্রিটেনের অভিজাত ব্যক্তিবর্গের জন্য যারা বিশ্বের সর্ববৃহৎ জাহাজের ১ম যাত্রার অংশীদার হয়ে সৌভাগ্য অর্জন করতে চেয়েছিল। টাইটানিকের ডুবে যাওয়া আজোও বিশ্ববাসীর কাছে অপার রহস্যময় হয়ে আছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।