আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দোস্ত শিশির সিন্ধু: তুমি জেগে আছো নাকি ক্লান্তিতে ঘুমাচ্ছো? রেস্ট নাও বন্ধু, তোমার এখন অনেক রেস্ট নেয়া দরকার

© এই ব্লগের কোন লেখা আংশিক বা সম্পূর্ণ আকারে লেখকের অনুমতি ব্যতীত অন্য কোথাও প্রকাশ করা যাবে না। গত দুইদিন ব্লগের পরিস্থিতি বেশ নাজুক ছিলো। পারসোনা এবং আসিফ মহিউদ্দীনের গ্রেফতার হওয়া নিয়ে পোস্টের কামড়াকামড়িতে আর তেমন কোনো পোস্টের কোনো খাওন ছিলো না। এইসব নিয়া ক্যাচাল পোহাইতে পোহাইতে একটা গুরুত্বপূর্ণ পোস্টই পোস্টাইতে ভুলে গেছি। সেটা হইলো আমাদের খাদক জগতে বিস্ময়কর এক ব্লগার আর আমার ভীষণ জিগরি ফ্রেন্ড শিশির সিন্ধু রে নিয়া।

যাই হোক, ঘটনা ঘটে ১লা অক্টোবর। ঐদিনে আমার এক ফ্রেন্ডের বার্থডে ছিলো। সবাই মিলে সেলিব্রেশানের প্রস্তুতি নিচ্ছি। এমন সময় শুনি শিশির সিন্ধুর এক্সিডেন্ট হয়েছে। কি হয়েছে না হয়েছে ডিটেইলস শুনতে পারিনাই।

মনটা খুব বিক্ষিপ্ত হয়ে ছিলো। সন্ধ্যায় পার্টি শেষ করে আমরা তার বাসায় যাই । গিয়ে দেখি ভয়াবহ অবস্থা। আমার দোস্ত শুয়ে রয়েছে। তার চেহারার দিকে তাকানো যাচ্ছে না।

শরীরে কোনো জখমের চিহ্ন নাই,কিন্তু ঘাড়টা ফুলে কলাগাছের মতো হয়ে রয়েছে। আর চোখের মধ্যে রাজ্যের ক্লান্তি আর ধকলের চিহ্ন। মুহূর্তের মধ্যে স্পিচলেস হয়ে গেলাম। তারপর তাকে পুরো ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। সেই ঘটনাই আপনাদের বলছি।

গত পরশুদিন শিশির সিন্ধু ও তার ৭ জন বন্ধু মিলে মানিকগন্জ্ঞে বেড়াতে যান। সেখানে গতকাল বেলা সাড়ে এগারোটা বাজে মানিকগন্জ্ঞের স্থানীয় একটি খালে শিশির সিন্ধু সহ সবাই সাঁতার কাটতে নামে। যখন পাড় থেকে পানিতে ডাইভ দিতে যাবে তখনই ঘটে দূর্ঘটনা। শিশির সিন্ধুর ডাইভটা পারফেক্ট টেন আউট অফ টেন হলেও তার ল্যান্ডিংটা খুবই অকওয়ার্ড ছিলো। তাই প্রায় পাঁচ ফিট পানি থাকলেও মুহূর্তের মধ্যে তার মাথাটা মাটিতে বাড়ি খায়।

আর বাড়ি খাওয়ার পরপরই ক্যাঁচ করে একটা শব্দ হয়। আর সেই শব্দটা বের হয়ে আসে তার ঘাড়ের মধ্য দিয়ে। এরপর কিছু সময়ের জন্য আনকনশাস হয়ে পড়ে সে। পাশে ছিলো তার এক বন্ধু রনি। রনি তাকে কোনোমতে পানি থেকে উপরে তুলে।

একটু সেন্স আসার পর, শিশির সিন্ধুর ফার্স্ট কথা ছিলো, "আজকে মনে হয় আমি মারা যাচ্ছি। " ঘটনার পরপরই গোটা দৃশ্যপট পুরোপুরি পাল্টে যায়। রনি কি করবে না করবে তৎক্ষণাত বুঝে উঠতে পারে না। কিছু সময় সে শিশির সিন্ধুকে পানির উপর ধরে রাখে নিশ্চলভাবে। কিছু সময় পর তাকে টেনে তুলে একটা ভ্যানের উপর শোয়ানো হয় এবং সবাই মানিকগন্জের বাসস্ট্যান্ডে চলে আসে।

বাসস্ট্যান্ডে এসে তারা রওনা হয় ঢাকার উদ্দেশ্যে। ততোক্ষণে শিশির সিন্ধুর অবস্থা বেশ খারাপের দিকে যেতে থাকে। ঘাড় ফুলে এ্তোখানি মোটা হয়ে যায়। পথিমধ্যে ওর সেইরকম জ্বর চলে আসে এবং বেশ কয়েকবার বমি হয়। ঢাকায় নেমেই একটা সিএনজি করে চলে যায় বাংলাদেশ মেডিক্যালে।

ঐখানে গিয়ে এক্স রে করানো হয়। ডাক্তার দেখে বলেন, খুবই অল্পের জন্য জানে বেঁচে গেছেন। এমন এক জায়গায় ব্যাথা পেয়েছেন, খুবই সেনসিটিভ জায়গা। আরো সিরিয়াস কিছু হলে প্যারালাইসিসও হতে পারতো !!!!! যাই হোক, স্রষ্টার অসীম কৃপায় আমার বন্ধুটি এখন পুরোপুরিই আশংকামুক্ত। ডাক্তার তাকে টোটালি ১০ দিনের বেড রেস্ট দিয়েছেন এবং ভীষন হাই ডোজের ঔষধ দিয়েছেন।

তার ঘাড় এবং মেরুদন্ডে ভীষণ ব্যথা রয়েছে। ঘাড় ১ ডিগ্রি বাঁকালেই সে অসহ্য ব্যথায় কুঁকড়ে ওঠে । তবে স্রষ্টার কাছে ধন্যবাদ জানাই, যে তিনি আমার বন্ধুটিকে এতোটা নিরাপদে আমাদের নিকট ফিরিয়ে এনেছেন। বন্ধু, আমি অনেক স্যরি তোমাকে নিয়ে এই পোস্টটি লেখার জন্য। মানুষ তার বন্ধুর ভালো জিনিসগুলো নিয়ে লিখতে চায়, আর আমি কিনা তোমার অসুস্থতা নিয়ে সামুতে পোস্টাইলাম !!!! এমন করুন অবস্থা যেনো কারো কপালে না জোটে।

আপনারা সবাই তার জন্য দোয়া করবেন যেনো অতি শীঘ্রই সে সুস্থ হয়ে উঠে আমাদের মাঝে ফিরে আসে। আর শিশির সিন্ধুকে বলছি, দোস্ত, জানি না,তুমি আমার এই পোস্টটা ইদানিংয়ের মধ্যে পড়বা কিনা, তুমি তাড়াতাড়ি ১০০% ফিট হও, আর জোড়েসোড়ে ফিইরা আসো। তোমারে বহুত মিসাইতেছি। [ অ.ট.: তোরে দেখতে আইসা তোরে নিয়া একটু হাসাহাসি করছিলাম, তোর লাইগ্যা আনা সুপের একবাটি নিজেরাই সাবাড় করছিলাম,তোর কিছু ফটোসেশনও করছিলাম, দোস্ত হিসেবে এই অধিকার নিশ্চয়ই আমার আছে, তাই না?? কি করবো বল? রক্তের মধ্যেই স্যাটায়ার ] ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।