আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গৃহবধু এবং প্রতিবাদী রীনার জন্য সাহায্য চাই । হিল্লা বিয়ের প্রতিকার চাই । ফতোয়াবাজদের ফঁাসি চাই

কামনায় পৃথিবীর সকল সুন্দর দুচোখ মেলে দেখতে চাই সকলের অন্তর। একটু আগে একটা সংবাদ পড়লাম। সংবাদটা সবার সাথে শেয়ার করছি। কারও কোন ক্ষমতা থাকলে প্লিজ অসহায় মেয়েটির পাশে গিয়ে দঁাড়ান। "'হিল্লা বিয়ে' মানি না।

যে বিয়েতে অন্য একজনের সঙ্গে তিন মাস ১৩ দিন সংসার করে আবারও পুরনো স্বামীর সংসারে আসতে হবে_ এটা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। এর চেয়ে মৃত্যু ভালো। রাগের মাথায় দেয়া তালাক বৈধ হলে আদালতের মাধ্যমে তার সমাধান করুন। সরকার হিল্লা, দোররা ও ফতোয়া অবৈধ করেছে। এ জাতীয় কিছু করার চেষ্টা করলে আইনের আশ্রয় নেব।

কথাগুলো বললেন কুমিল্লা দেবীদ্বার উপজেলার সীমারকান্দা গ্রামের গৃহবধূ রীনা আক্তার (৩০)। তাকে গত দু'দিন ধরে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ওই গৃহবধূর স্বামী মিজানুর রহমান (৩৫) পারিবারিক কলহের জের ধরে তার স্ত্রী রীনা আক্তারকে তালাক দেয়। বিষয়টি নিয়ে এলাকার লোকজন শুক্রবার জরুরি বৈঠকে বসেন। মো. রোশন আলীর (৭৫) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সালিসের সিদ্ধান্তানুযায়ী ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সমাধানে মতামতের জন্য চার সালিসদারকে ধামতী আলীয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আলহাজ আবদুল হালিম পীর সাহেবের কাছে পাঠানো হয়।

ওই চার ব্যক্তি তালাকপ্রাপ্তা গৃহবধূর স্বামী মিজানুর রহমান (৩৫), ভাসুর মোহাম্মদ আলী (৪৫), প্রতিবেশী আবদুল মালেক (৬৫) ও নজরুল ইসলাম (৫৫) ধামতী আলীয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আলহাজ আবদুল হালিম পীর সাহেবের মতামত ও সিদ্ধান্তের আলোকে এলাকায় এসে গ্রামবাসীদের নিয়ে সন্ধ্যায় আবারও বৈঠকে বসেন। বৈঠকে সালিসদাররা জানান, আমাদের বক্তব্য শুনে হুজুর তালাক বৈধ বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন। এর সমাধান ইসলামী শরিয়া মতে একমাত্র 'হিল্লা বিয়ে। ' যেহেতু 'হিল্লা বিয়ে' সরকারি আইনে নিষিদ্ধ, সেহেতু আপনারা পারিবারিকভাবে বসে ওলামা একরামদের নিয়ে তার সমাধানের ব্যবস্থা করুন। ওই সিদ্ধান্তের আলোকে ভাসুর মোহাম্মদ আলী জানান, হুজুরের সিদ্ধান্তানুযায়ী তালাক বৈধ হয়েছে, ইসলামী শরিয়ানুযায়ী এর সমাধান 'হিল্লা বিয়ে'র বিকল্প নেই।

তা না হলে কাবিননামার ধার্যকৃত এক লাখ টাকার অর্ধেক দিয়ে তাকে বিদায় করতে হবে। তবুও আমরা পারিবারিকভাবে বসে বিকল্প কি করা যায়_ এ ব্যাপারে রাতের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেব। কিন্তু ওই সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ গৃহবধূ রীনা আক্তার। তার দাবি, হিল্লা বিয়ে কুসংস্কার, অনেকে হিল্লা বিয়ে করে ফেরত দেয় না। আমার দুই পুত্রসন্তান সীমারকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র মো. রিফাত হোসেন (১০) ও শিশু শ্রেণীর ছাত্র মো. সিফাত হোসেন হৃদয়ের (৪) পিতা-মাতার পরিচয়ে কলঙ্কের প্রলেপ দিতে চাই না।

আমাদের বিয়ে কোর্টের মাধ্যমে হয়েছে। আজকের সমাধানও কোর্টের মাধ্যমে চাই, তবে বিবাহ বিচ্ছেদ নয়। গৃহবধূ রীনা আক্তারের শাশুড়ি জানান, বিষয়টি ছোট ঘটনা। গ্রামের কিছু লোক আমাদের পরিবারের সম্মান ক্ষুণ্ন্ন করতে বিষয়টিকে অনেক বড় করে দেখিয়েছেন। রাগের মাথায় তালাক দিয়েছে।

বাইন তালাকও বলেনি, তওবা পড়িয়ে সংসার করা যায়। এটাকে নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করা, মোল্লাদের কাছে দৌড়ঝাঁপ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। গৃহবধূ রীনা আক্তারের পিতা তিতাস উপজেলার দুলারাম্পুর গ্রামের সফিকুল ইসলাম জানান, প্রায় ১৩ বছর আগে আমার মেয়ের সঙ্গে মিজানের বিয়ে হয়, বিয়ের পর থেকে পারিবারিক কলহ নিয়ে অনেক সালিস হয়েছে। মেয়েটা এখানে শান্তিতে নেই। এখন কি করব বুঝে উঠতে পারছি না।

তার শ্বশুর পরিবারের লোকজন হিল্লা বিয়ে দিতে চায়। অন্যথায় বিয়ের কাবিননামার এক লাখ টাকার মধ্যে অর্ধেক টাকা দিয়ে মেয়েকে বিদায় করতে চাচ্ছে। গত দুই দিন ধরে মেয়েকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। ঘর থেকে বের হতে দেয়া হয় না, কারো সঙ্গে কথা বলতে দেয়া হয় না। সালিসদার আবু তাহের শেখ জানান, আমরা চারজন হুজুরের কাছে গিয়েছিলাম।

হুজুর জানতে চেয়েছেন আমরা 'লা মুজাবি, নাকি হানাফি', 'লা মুজাবি' হলে কোন মন্তব্য করবেন না, আর 'হানাফি' হলে তালাক বৈধ হবে। এর সমাধান একমাত্র 'হিল্লা বিয়ে। ' হিল্লা বিয়ে রাষ্ট্রীয় আইনে নিষিদ্ধ। তাই আপনারা বসেই সিদ্ধান্ত নেবেন। এখন আমরা বিব্রত।

কোন সিদ্ধান্তে যাব। এ ব্যাপারে অসুস্থ থাকার কারণে ধামতী আলীয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আলহাজ আবদুল হালিম পীর সাহেবের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি সার্বিক) স্বপন কুমার নাথ জানান, তালাকের ঘটনায় যদি কেউ রাষ্ট্রীয় আইনে নিষিদ্ধ হিল্লা বিয়ে দিতে চায়, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এ ব্যাপারে লিখিত বা মৌখিকভাবে কেউ প্রতিকার চায়নি। প্রতিকার চাইলে ব্যবস্থা নেব।

" ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.