আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এনজিও ও দাদনের ঋণ পরিশোধ না করতে পেরে টাঙ্গাইলে ট্রেনের নিচে ঝাপ দিয়ে গৃহবধু আত্মহত্যা

এনজিওর ঋণের কিস্তি ও দাদনের চড়া সুদের টাকা পরিশোধ না করতে পেরে ট্রেনের নিচে ঝাপ দিয়ে হাসনা বেগম (৪৫) নামে এক গৃহবধু আত্মহত্যা করেছে। টাঙ্গাইল সদর উপজেলার গালা ইউনিয়নের শালিনা গ্রামের খোরশেদ আলমের স্ত্রী রাত আটটার দিকে এই ঘটনা ঘটায়। এলাকাবাসী জানায়, শালিনা গ্রামের খোরশেদ আলম একজন দিনমজুর। সামান্য আয়ের সংসারের একমাত্র ছেলের বিয়ে ও ছেলের দোকান করে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে ঋণ গ্রহণ করেন । গৃহবধূ হাসনা বেগম বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আশা ও গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ১০হাজার টাকা, সোসাইটি ফর সোসাল সার্ভিস (এসএসএস) এর নিকট ১৫হাজার টাকা করে ঋণ নেয়।

ঋণের কিস্তি সময়মতো পরিশোধ করার জন্য বিভিন্ন জনের নিকট থেকে চড়া সুদে টাকা গ্রহণ করেন। হাসনা বেগমের ছেলে আব্দুল হালিমও ব্যবসায় ভালো করতে না পেরে একাধিক স্থান থেকে ঋণ গ্রহণ করেন। কিন্তু সময় মতো পরিশোধ করতে না পারায় পাওনাদাররা প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। চাপ থেকে রা পেতে এবং ছেলের দোকানে ব্যবসার কাজে লাগানোর জন্য স্থানীয় দাদন ব্যবাসায়ী আব্দুস সালামের নিকট থেকে ৬০ হাজার টাকাসহ আরো অন্যানদের নিকট হতে চড়া সুদে ২ লাধিক টাকা দাদন নেয়। পরে তা সময়মত পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়।

এক পর্যায় দাদন ব্যবসায়ীরা তাকে প্রচন্ড চাপ প্রয়োগ করে থাকে। পরে সে বাড়ী থেকে অন্যত্র পালিয়ে যায়। হালিমকে বাড়িতে না পেয়ে পরে দাদন ব্যবসায়ীর হালিমের মা হাসনা বেগমের উপর চাপ সৃষ্টি করে। স¤প্রতি দাদন ব্যবসায়ী সালাম হাসনা বেগমের পালিত ৩টি গরু জোড় পূর্বক নিয়ে যায়। পরে এক পর্যায় দু’এক দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধ করার শর্তে গরু গুলি ফেরত দেয়।

কিন্তু সময় পার হয়ে গেলে টাকা জোগাড় করতে ব্যর্থ হয় হাসনা বেগম ও তাঁর স্বামী খোরশেদ আলম। এসব বিষয় নিয়ে স্বামী, স্ত্রী, ছেলে ও ছেলে বউয়ের সাথে প্রায়ই ঝগড়া হতো। এক পর্যায় বুধবার সকালেই টাকার জন্য বিভিন্ন স্থানে ছুটাছুটি করে অর্থ সংগ্রহে ব্যর্থ হয়ে অত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়। এর পর থেকেই সে ট্রেন লাইনের পাশে ট্রেন আসার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। এক পর্যায় তাঁর স্বামী ট্রেন লাইন থেকে বাড়ি চলে যেতে বলে।

পরে সে ট্রেন লাইন থেকে বাড়ি দিকে রওনা হয়। কিন্তু বাড়ি না গিয়ে রাত ৮টার দিকে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী পদ্মা এক্সপ্রেসের নিচে ঝাপ দিয়ে গৃহবধু হাসনা বেগম আত্মহত্যা করে। এ দিকে এ আত্মহত্যাকে দূর্ঘটনা বলে চালিয়ে দিতে একটি প্রভাবশালী মহল উঠে পরে লেগেছে। পরে তারা এ ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে বুধবার রাতেই তাকে দ্রুত দাফন করে। ছেলে ও ছেলে বউ মায়ের লাশটি শেষ দেখা দেখতেও বাড়িতে আসেনি।

তবে পারিবারিক ভাবে দাবী করা হচ্ছে ছেলে (আব্দুল হালিম) বউ নিয়ে চট্রগামে থাকেন এ জন্য তাদের আসতে অসুবিধা হচ্ছে। এব্যপারে পাশের বাড়ির তারা বানু বলেন, ছেলে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরেই সে এ পথ বেছে নিয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া বিরাজ করছে। নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক ঐ গ্রামের একাধিক গৃহবধু বলেন, সে খুব ধার্মিক লোক ছিল। এনজিও ও দাদনের ঋণের টাকা পরিশোধ না করতে পেরেই সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.