দেশে অনেক কিছুর অভাব থাকলেও ইস্যুর কোনো অভাব নেই। মানুষের দেহে যতগুলো টিস্যু আছে, দেশে হয়তো তার চেয়েও বেশি ইস্যু আছে। একের পর এক ইস্যু নিয়ে পুরো দেশ থাকে সরগরম। এ জন্যই বোধহয় কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে বেশি গরম পড়ছে। সাম্প্রতিক ইস্যু হচ্ছে কোটা।
মলা বা কাচকি মাছ কিংবা বরবটি-কচুর লতি কোটা নয়। বলছি, সরকারি চাকরিতে কোটা-প্রথার কথা। সরকারি চাকরির কথা শুনেই হয়তো অনেকে বিভিন্ন কোটায় বিভক্ত হয়ে আলোচনা শুরু করে দিয়েছেন। আলোচনা ব্যাপারটা এমন, যাঁদের করা দরকার, তাঁরা করেন না। যেমন সরকারি চাকরির কোটা-প্রথা থাকা উচিত কি না, তা নিয়ে এখন প্রচুর আলোচনা হচ্ছে।
কিন্তু কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে একেবারেই সংযম পালন করছে। তবে কোটার গুণগান বা কোটা নিয়ে খোঁটা দেওয়ার আগে সবারই ভাবা উচিত, আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কথা। আমাদের দৈনন্দিন জীবনেও কিন্তু চালু রয়েছে অসংখ্য কোটা-প্রথা। ধরুন, আপনি বাজারে গেছেন মুরগি কিনতে। প্রথমেই আপনি ভাববেন, দেশি কোটার মুরগি কিনব, নাকি ফার্ম কোটার মুরগি? আম কেনার সময়ও একই কোটা পদ্ধতি।
রাজশাহী কোটার আম থাকে চাহিদার শীর্ষে। শুধু পণ্য নির্বাচনই নয়, কেনার সময়ও কোটা-প্রথা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ক্রেতা টাটকিনি মাছ কিনবেন, কিন্তু বিক্রেতার সঙ্গে দামে কিছুতেই বনছে না। ক্রেতা বলছেন, ২০০ টাকা, বিক্রেতা বলছেন, ৪০০ টাকা। এই নিয়ে তর্কের একপর্যায়ে ক্রেতা বিরক্ত হয়ে বললেন, ‘চেন আমাকে? আমি বরিশালের ছেলে।
’ বিক্রেতা খুশি হয়ে বলেন, ‘বরিশালের লোকদের জন্য আমার দোকানে ১০ শতাংশ ছাড় আছে। দ্যান, ব্যাগ দ্যান। ’ চারদিকেই কোটার ছোটাছুটি। তাই গবেষকেরা বলছেন, সবকিছুতেই যখন কোটা আছে, সরকারি চাকরিতে কেন থাকবে না? আবার অন্য গবেষকেরা বলছেন, সবকিছুতেই তো কোটা আছে, সরকারি চাকরিতে কোটার দরকার কী? এই নিয়ে সংঘাত চলছে। অথচ এত আলোচনা-সমালোচনার পরও কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নীরব।
কোনো মানে হয়? নীরব থাকবেন কবি, কর্তৃপক্ষের তো নীরব থাকার কথা নয়। তাই কর্তৃপক্ষের উচিত কোটা থেকে বেরিয়ে একটা যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া। নইলে যেভাবে কোটা নিয়ে ছোটাছুটি হচ্ছে, ভবিষ্যতে হয়তো ‘আহত’ কোটা চালু করতে হবে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।