আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অনিয়ন্ত্রিত তামাক ১ ঝুঁকিতে জনস্বাস্থ্য ধূমপান ৩৪ ধরনের ক্যান্সার ৩০ প্রাণঘাতী রোগের কারণ

প্রত্তেক মানুষের ভেতর ভালো গুন এবং খারাপ গুন আছে। কিন্তু আমি তার কোন গুনটা দেখবো সেটা আমার কাছে that is tha মেইন ভেপার। যদি খারাপ গুনটা দেখি তাহলে আমার কাছে সমস্ত পৃথিবীটা কস্টের,বেজাল,মনে হবে। আর যদি ভালো দিকটা দেখি তাহলে সমস্ত পৃথিবী অনেক অনেক আনন্দের ম মানুষের দেহে ৩৪ ধরনের ক্যান্সারের সৃৃষ্টির মূল কারণ ধূমপান বা তামাকজাতীয় দ্রব্য সেবন। এ ছাড়াও নতুন এক গবেষণায় জানা গেছে, ধূমপানে মানুষের দেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ চোখ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

ধূমপায়ী ব্যক্তির যতটুকু ক্ষতি হয় ধূমপানের কারণে, একই পরিমাণ ক্ষতি হয় ধূমপায়ী ব্যক্তির পাশে বসা অধূমপায়ী ব্যক্তির। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ধূমপানের কারণে দৃষ্টিশক্তি কমে যায় এবং অপরিণত বয়সেই চোখে বিভিন্ন রোগ বাসা বাঁধতে থাকে। ধূমপান অন্তত ৩০টি প্রাণঘাতী রোগের অন্যতম কারণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, পৃথিবীতে প্রতি বছর ধূমপানজনিত বিভিন্ন রোগে প্রায় ৫৫ লাখ লোক মৃত্যুবরণ করে, যা হিসাব করলে প্রতি মিনিটে প্রায় ১১ জন। ধূমপানের সঙ্গে ক্যান্সারের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে।

পৃথিবীতে প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুর সর্ববৃহৎ কারণ তামাক সেবন। তামাকবিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞার এক জরিপে জানা যায়, পৃথিবীতে প্রতি ১০ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে একজনের মৃত্যু ঘটে তামাক সেবনের ফলে। সেই হিসাবে তামাক পৃথিবীতে প্রতি বছর ৫৪ লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। বিশ্বের প্রায় ১০০ কোটি তামাক ব্যবহারকারীর ২০% নারী। বাংলাদেশে ৪৩% প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক সেবন করে।

অর্থাৎ দেশে বর্তমানে তামাক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪ কোটির বেশি। নারীদের মধ্যে এ হার ২৯% এবং পুরুষদের মধ্যে ৫৮%। ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারের হার নারীদের মধ্যে অনেক বেশি। নারীদের মধ্যে ২৮% এবং পুরুষদের মধ্যে ২৬% ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার করে। ৪৫% পুরুষ ও ১.৫% নারী সিগারেটের মাধ্যমে এবং ২১% পুরুষ ও ১.১% নারী বিড়ির মাধ্যমে ধূমপান করে।

তবে পুরুষের ধূমপানের ফলে নারীদের পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হওয়ার হার অনেক বেশি। ২০০৯ সালের তথ্য অনুসারে, ৩০% প্রাপ্তবয়স্ক নারী কর্মস্থলে এবং ২১% নারী জনসমাগমস্থলে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে। অর্থাৎ ধূমপান না করেও পরোক্ষ ধূমপানের শিকার বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটি নারী। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানার বাসিন্দা জুলেখা আক্তার (৮৫)। গত দুবছর ধরে মুখগহ্বরের ক্যান্সারে ভুগছেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'মায় খাইতো, বাপে খাইতো। বিয়ার পরে আমিও সাদা পাতা দিয়া পান খাইছি, তামুক খাইছি। লগে বিড়িও খাইছি। বুঝতে পারি নাই, এত বড় রোগ অইবো। ' জুলেখার মতো গ্রামবাংলার অসংখ্য নারী-পুরুষ বিড়ি-সিগারেটের পাশাপাশি জর্দা, গুলসহ ধোঁয়াবিহীন ও ধোঁয়াযুক্ত তামাক ব্যবহার করে।

চিকিৎসকদের মতে, তামাক সেবন নারীর স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবন মুখের ক্যান্সার, খাদ্যনালীর ক্যান্সার, অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার, রক্তচাপ ও হৃদকম্পন বৃদ্ধির মতো মারাত্মক রোগের কারণ। এ ছাড়া নারীদের ক্ষেত্রে সন্তান জন্মদান সংক্রান্ত জটিলতা (যেমন কম ওজনের সন্তান জন্মদান) হতে পারে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ধূমপানের ফলে ফুসফুসের ক্যান্সার, হৃদরোগ ও স্ট্রোক, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা, অন্যান্য ক্যান্সার এবং সন্তান জন্মদান সংক্রান্ত সমস্যা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজের রেডিওলোজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দীন ফারুক দৈনিক ডেসটিনিকে বলেন, শতকরা ৯০ ভাগ মানুষের ফুসফুসের রোগের অন্যতম কারণ ধূমপান।

এ ছাড়াও মুখগহ্বরের ক্যান্সার, খাদ্যনালীর ক্যান্সার, মূত্রথলির ক্যান্সারসহ অন্যান্য ক্যান্সারের উপসর্গ সৃষ্টি হয়। যে সব পরিবারের পুরুষ ধূমপান করে থাকে, সেসব পরিবারের মেয়েদের জরায়ুমুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শিশুদের বেলায় ধূমপানের প্রভাব আরো ক্ষতিকর। গর্ভবতী নারীরা পরোক্ষ কিংবা প্রত্যক্ষভাবে ধূমপানের শিকার হলে তার কুপ্রভাব গর্ভের সন্তানের ওপর পড়ে। ভূমিষ্ঠ সন্তানটি হতে পারে বিকলাঙ্গ বা আকারে ছোট ও বুদ্ধিহীন।

ধূমপায়ী নারীদের শিশুরাই কটডেথের শিকার হয়। সংশ্লিষ্টদের মতে, নারীদের তামাকের ক্ষতি থেকে বাঁচানোর জন্য দ্রুত পদক্ষেপ জরুরি। এ ক্ষেত্রে ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবন ও পরোক্ষ ধূমপান বাংলাদেশের নারীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে এবং এটা প্রতিরোধে আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের বাংলাদেশ প্রতিনিধি তাইফুর রহমান দৈনিক ডেসটিনিকে জানান, বাংলাদেশে প্রত্যক্ষভাবে ধূমপানের শিকার ৭ লাখ এবং পরোক্ষভাবে ধূমপানের শিকার হচ্ছে প্রায় এক কোটি নারী। আর তামাক সেবনের কথা উল্লেখ করতে হলে একটি বিশাল অঙ্ক বেরিয়ে আসবে।

এ অবস্থায় দেশের নারী স্বাস্থ্যের অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে তামাকবিষয়ক আইনের কঠোর প্রয়োগ ও আইনের উন্নয়ন করতে হবে। তিনি আরো জানান, পাবলিক বাস ও পাবলিক প্লেসে পরোক্ষভাবে ধূমপানের শিকার সবচেয়ে বেশি। আর এর প্রভাব নারীর ক্ষেত্রে বেশি পড়ে। সংশ্লিষ্টদের মতে, সামাজিক ও পারিবারিক মূল্যবোধ মেনে চললে ধূমপায়ীর সংখ্যা দিন দিন কমে যাবে।

এতে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমবে। দীর্ঘদিন সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারবে। সেই সঙ্গে সরকারের করণীয় হিসেবে তামাক আইনে তামাক পণ্যের মোড়কে সচিত্র প্রতিবেদনসহ কিছু বিষয় সংশোধন ও তা বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত জরুরি বলে তারা মনে করেন।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।