আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কোন মুর্খ জ্যোতিষী এখনো মনে করে দিন বদলের প্রবল সম্ভাবনা? কোন জানোয়ার দাবী করে জনগণ রাষ্ট্রের মালিক?

www.theeconomist2011@yahoo.com কোন জানোয়ারে দাবী করে রাষ্ট্রটি গণতান্ত্রিক? কোন বেকুবে মনে করছে সরকার তার প্রতিশ্রুত পথে আছে? কোন ভাদা/ভারতীয় এজেন্ট দাবী করে বাংলাদেশ তার ন্যায্য অধিকার ভারতের কাছ থেকে পাবে বন্ধুত্বের বিনিময়ে? কোন মুর্খ জ্যোতিষী এখনো মনে করে দিন বদলের প্রবল সম্ভাবনা? আম্লীগ, বাংলাদেশের একমাত্র দল- যাদের হাত ধরে বাংলাদেশের যা কিছু নতুন-খারাপ, মানবতা বিরোধী, সভ্যতা বিরোধী তার সবই এই বাংলার মানুষের বুকে পাথরের মতো করে চেপেছে। তারা নিয়ে এসেছে ‘‘বিশেষ ক্ষমতা আইন” থেকে শুরু করে আজকের ‘‘ভ্রাম্যমান আদালত’’ যা হরতালে প্রয়োগ হচ্ছে। কোন বিবেচনায় এই আইনের প্রয়োগ? কাদের পরামর্শে কোন মিশনের উদ্দেশ্য হিসাবে এই আইনকে সরকারকে মাত্র ২ বছরের মধ্যেই প্রয়োগ করতে হচ্ছে সেই দেশের মানুষের প্রতি যে দেশের মানুষ এই সরকারকে বিবেচনাহীনভাবেই এতগুলো সংসদীয় আসন দিয়েছিলো। যেদেশের মানুষ ৭১সালে নামাজ পড়ে বঙ্গবন্ধুর জীবন রক্ষার জন্য দোয়া করতো, যেদেশের মানুষ সকল ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে বঙ্গবন্ধুর বেচেঁ থাকা কন্যাদের দেশে এনে প্রধানমন্ত্রিত্ব দিয়েছিলো-সে দেশের মানুষকে এভাবে নির্যাতন করার ঘৃন্য মানসিকতাকে কিভাবে মূল্যায়ন করা যায়? কিন্তু এই ছবিটি একটি ইতিহাসের উপাদান হিসাবে থাকলো অগণতান্ত্রিক, সামরিক শাসকদের সুবিধা দেওয়ার জন্য। পাকি শয়তান আইয়ুবের আমলকে কেনো আজ আম্লীগকে ফলো করতে হলো? বঙ্গবন্ধুর সকল আন্দোলন সংগ্রামকে আজ পাকিস্তানের যেকেউ অবৈধ কিংবা ভুল হিসাবে ব্যাখ্যা করার সুযোগ নিতে পারে এবং এই সরকারের কার্যক্রমকে আইয়ুর এর চাইতেও অগ্রহনযোগ্য বলা যায়।

কারন স্বাধীনতার ৪০ বছর পরও সেখানেই দেখলাম আম্লীগকে, যেখানে আইয়ুবের মতো কসাইকে আলিঙ্গণ করতে হচ্ছে ২০১১ সালে বাংলাদেশে। র‌্যাব গঠনকে এই শয়তানেরা এক সময় দলীয় এজেন্ডা হিসাবে বিএনপির সমালোচনা করতো, মানবতা বিরোধী বলতো না। অথচ আজ আমরা দেখছি লিমনের পা নিয়ে এই মিথ্যুকরা নিত্য গল্প শুনাচ্ছে। র‌্যাবের অনুষ্ঠানে গিয়ে রাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে যখন বলতে শুনি ‘‘আপনারা ছাড়া আমি কিছুই না, আমার কোনো ক্ষমতা নেই। ’’ তখন জানতে ইচ্ছা করে-আপনার ক্ষমতার উৎস এদেশের মানুষ হতে পারল না? অথচ কত কান্নাকাটি করেছেন একটি ভোটের জন্য, হিজাব পড়ে ছবি তুলে এদেশের মানুষের সাথে প্রতারণা করছেন প্রতিনিয়ত-কেবল ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য।

র‌্যাব গঠনকে আমরা বলেছি মানবতা বিরোধী একটি সাময়িক মুক্তির হাতিয়ার মাত্র। নষ্টমেধাহীন বিএনপি আজ বুঝতে পারছে, মির্জা আব্বাসের বাসায় র‌্যাবের নির্দয়তা দেখে। আজকের দালালরাও একদিন বুঝবে আইনের শাসন কি, বিচার কি এবং কতটা প্রয়োজন। র‌্যাব গঠন এবং এর ক্রসফায়ারের কাহিনীর জন্য বিএনপিকে কখনোই ক্ষমা করা যায়না। কিন্তু সেদিনের দলবাজ সমালোচনাকারীরা আজ নিশ্চুপ এবং কখনো কখনো উলংগ দালালীতে আওয়ামী গণশৌচাগারের ড্রেনে ডুবন্ত।

আলোচিত এই ছবিটি একজনকে পায়ের তলায় পিষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে, যাকে পরে ভ্রাম্যমান আদালত অধিকতর পুরষ্কার হিসাবে ১ বছরের জেল দিয়েছে-সুশাসনের কি নির্মম নজির। প্রশ্ন হলো, যেখানে সাংবাদিকের ক্যামেরা নেই সেখানে কি চলছে? ভিন্নমতের মানুষ কিভাবে দিন পার করছে? এই ছবিটি হারিয়ে দিয়েছে ক্রীতদাস প্রথাকে, পিনোশেকে, মিলোস্লাভকে, হিটলারকে, মায়ানমারের সামরিক জান্তাদেরকে-এজন্য অবশ্য ক্ষমতাসীনরা পুরষ্কার পাবেন ইতিহাসে লেটার মার্কস নিয়ে। সর্বত্র আজ কেমন গুমোট অবস্থা বিরাজ করছে-শেয়ার বাজারে নিঃস্ব যুবকের চিন্তার শেষ নেই, পাওনাদারের ফোনে অপমানিত তরুণের মোবাইল ফেলে দেওয়ার অবস্থা। দ্রব্যমুল্যের চপেটাঘাতে বাজার ফেরত বাবার মুখের দিকে তাকানো যায়না, ভয়ে আদরের সন্তানরা আজ বাবার কাছে আবদার করতে ভুলে গিয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বকর্মের সুব্যবস্থায় পূর্নবাসিত হচ্ছে চরিত্রহীন পরিমলরা।

হাজার হাজার বিদেশ ফেরত হতাশ যুবকেরা লজ্জায় কেবল রিক্সা নিয়ে রাস্তায় নামতে বাকী। কাটাতারের বেড়া দিয়েও বন্দুকের গুলি খরচ করছে ভারতের মতো সুমহান বন্ধু প্রতিবেশী। ন্যায্য পানির কথা বলে বাংলায় সরকারকে নাচিয়ে যাত্রা দেখে ফিরে গেলো মনমোহন। ভারতে বসে মোসাহেবদের পাঠানো ইলিশে আহার করে মমতাময়ী মমতা। প্রথমবারের মতো বেহাল সড়কের রেকর্ডে খুশী কেলানী আবুল আর ড্রাইভারমন্ত্রীর বিনা প্রশিক্ষণে লাইসেন্স প্রাপ্তির বর্বর আবদারে চিন্তিত শংকিত দেশবাসী।

এই যখন অবস্থা তখন নিরীহ কর্মসূচী মানব বন্ধনকেও কেন বাধাঁ প্রদান করে তথাকথিত গণতন্ত্রের মানস কন্যারা!! লিফলেট প্রচারকেও পুলিশ দিয়ে ঠেকিয়ে দেয়া কেন? আনু মুহাম্মদের মতো নিরীহ ক্ষমতাহীনকে উপাধি দেওয়া হয় টোকাই আর বিদেশী এজেন্ট হিসাবে। বছরের পর বছর আন্দোলন সংগ্রামে রাস্তায় দিন পার করা আম্লীগ কিভাবে হরতালের বিপক্ষে কথা বলে, কিভাবে কোন বিবেচনায় ভ্রাম্যমান আদালত নামায়, লজ্জাবোধের বিষয়টি কি তাদের কোনো কালেই ছিলোনা? বাংলাদেশের কোন সরকার এ জাতীয় ভ্রাম্যমান আদালত হরতাল মিছিলে ব্যবহার করেছে? এটিও আগামীর ইতিহাস, তবে তা সামরিক জান্তা কিংবা অগণতান্ত্রিকদের জন্য একটি মোক্ষম হাতিয়ার হয়ে রইলো। বিরোধীদল হরতাল ডাকে সরকারের বিরোদ্ধে, সরকারের সমালোচনা করে, ভুল ধরে, চাপে রাখে কিন্তু দল হিসাবে আম্লীগের তাতে কি? তাদের কেন রাস্তায় নামতে হবে? তাহলে কি বাংলাদেশে সরকার এবং দল একাকার হয়ে যায়নি? প্রশাসনকে কেন প্রজাতন্ত্রের জন্য বলা হবে, কেন দলীয় বলা হবেনা? হাইকোর্টের বিরোদ্ধে লাঠি মিছিল, বিচারের রায় পুড়ানোর আন্দোলন, সাপ নিয়ে মিছিল, এরশাদ বিরোধী আন্দোলন, তত্ত্বাবধাক সরকার দাবীর আন্দোলন, প্রধান উপদেষ্টা বদলের আন্দোলন, প্রধান বিচাপতির দরজায় লাত্থি, লগি বৈঠার হোলি-এসব আন্দোলনে অংশগ্রহনকারী, নেতৃত্বদানকারী আম্লীগকে আজ নিজ দলীয় ক্যাডার এবং সরকারী ক্যাডার-অফিসার কিংবা কর্মচারীদের নামিয়ে বুটের তলায় নিচ্ছে কতটা বিবেকহীন হয়ে, ইতিহাস ভুলে-তা বাংলাদেশ দেখছে, দেখছে নতুন প্রজন্ম। আম্লীগে কি কোনো বিবেকবান মানুষ নেই? মিছিল কিংবা প্রতিবাদের জন্য এভাবে মানুষকে, দাবী-অধিকারকে, মানবতাকে, বিবেককে পদদলিত করা কি তাদের ঐতিহাসিক চরিত্র? নাকি সত্যিই দিন বদলের মহড়া মাত্র, এদিন বদলের স্বপ্ন কি দেখেছে কেউ? কথায় কথায় সকল নেতার সকল রোগের একই ঔষধ ‘‘যুদ্ধাপরাধের বিচার বাধাগ্রস্ত-বি২০১৩” এই মলমের ব্যবহার দেখে মানুষ তাদের এখন বিকারগ্রস্ত মনে করছে। কত বড় সেনসেটিভ এবং প্রয়োজনীয় ‘‘যুদ্ধাপরাধের বিচারকে’’ যত্রতত্র বিনা প্রয়োজনে ব্যবহারের কারনে আজ মানুষ যুদ্ধাপরাধের কোনো কথা মতলববাজদের মুখে শুনলেই সন্দেহপোষন করে।

শাহরিয়ার কবিরের মতো মানুষও হতাশা প্রকাশ করে প্রকাশ্যে। একটি দিকভ্রান্ত প্রতিহিংসাপরায়ন সরকার কেবল তাদের দলেরই ক্ষতি করেনা, দেশের সর্বনাশও করে থাকে। প্রতিবাদ, প্রতিরোধ, অধিকার আদায়ের দাবি সকল সমাজেই দেশপ্রেমের অংশ, রাজনীতিরই অংশ। কোন কুলাংগার বিশ্বাস করে যে, যুদ্ধাপরাধের বিচার সঠিক এবং নিরপেক্ষ হবে? যখন গোলাম আযম এখনো গ্রেফতারই হয়নি? মীর কাশেমের সৌদি ভ্রমনের সময় কতগুলো সুশীল কুলাংগারকে দেখলাম বিলাপ করতেছে, তিনি কিভাবে দেশত্যাগ করলেন, কিভাবে একজন স্বাধীনতা বিরোধী পালিয়ে গেলো-এসব বলে। কোথায় সেই চেতনাধারী মিথ্যাবাদী, অভিনয়কারী, নাটকবাজ হারামজাদারা? এখনতো কোনো কথা বলছেনা, কেন বলছেনা? টাকা নিয়েছে নাকি কোথাও থেকে ধাতানি খেয়েছে? নাকি তখনকার অভিযোগ মিথ্যা ছিলো? এই বজ্জাতদের কারণে বাংলাদেশ কোনো রকমে নিঃশ্বাস নিয়ে টিকে আছে।

বাংলাদেশ কেবল প্রত্যাশা করছে এমন কতগুলো সন্তানকে-যারা সত্যিই একদিন এদেশের নিরীহ সাধারন খেটে খাওয়া বঞ্চিত মানুষগুলোকে সত্যিকার সুশাসন, গণতন্ত্র আর মানবিকতা দিয়েই সেবা করবে, কখনোই শাসন করবেনা। যারা সব সময় ভাববে আমরা রাষ্ট্রের সেবক, ক্ষমতাসীন শাসক নই। আজ আমরা ভাবছি, শেয়ার বাজারে ক্ষতিগ্রস্তের কান্না আমার কাছে কিছুই না, কারন আমি বিনিয়োগকারী নই। লিমনের পা হারানো আমার কষ্টের বিষয় নয়, কারন আমার এখনো দুটো সচল পা আছে। আমিনবাজারে নিহতদের জন্য কিছুই করার নেই, কারণ আমি গণপিটুনির শিকার হইনি।

মিলনের পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু তেমন বিষয় নয়, কারন আমি এখনো জীবিত আছি। আবু বকরের মায়ের কান্নায় বিচলিত নই, কারণ আমার মা এখনো আমার জন্য কাদঁছেনা। বুটের তলায় প্রতিবাদী হতভাগার পিষ্ট হওয়ায় দুঃখ নেই, কারণ আমাকে এখনো অধিকারের দাবী করতে হচ্ছেনা। কিন্তু যেদিন আমাকে বুটের তলায় পিষ্ট করবে, সেদিন বাংলাদেশ কি আমার কান্না শুনবে, আমার জন্য কেউ কি ন্যায্য বিচার চাইবে, নুন্যতম প্রতিবাদ বা একটি মানব বন্ধন করার জন্য কি রাস্তায় দাড়ানোর সুযোগ এই শাসক নামের বুটের মালিক জগদ্দলপাথর দিবে? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.