আমাদের বিশাল বড় পরিবার। ভাই বোনরা সবাই কাজে কর্মে, পরিবার নিয়ে বিভিন্ন এলাকাতে থাকতাম, সবাইকে কোন উপলক্ষ্যেও একসাথে সহজে পাওয়া যেত না। কারো চাকুরীর ছুটি নাই, কারো ব্যবসার পিক সিজন, কারো ছেলে মেয়ের পরীক্ষা, সবাই ব্যস্ত। আব্বার শেষ কালে ইচ্ছে ছিলো, সবাইকে একসাথে নিয়ে গ্রামের বাড়ীতে বেড়াতে যাবে, গ্রামের বাড়িটাতে নতুন রং করা হয়েছে, সাজানো হয়েছে, সবাইকে নিয়ে কয়েকদিন গ্রামে থাকবে। ।
কিন্তু সেই ইচ্ছে আর পূরণ করা হয় নাই।
২০০৬ সালে আব্বা মারা গেলেন, ডেডবডি গ্রামে নিয়ে যাওয়া হলো, আমরা যে যেখানে ছিলাম, সবাই গ্রামে চলে গেলাম, কেউ কেউ এক কাপড়ে। গ্রামে গিয়ে সবাই ছিলাম ৭ দিন পর্যন্ত। একভাবী ছিলেন সন্তানসম্ভবা, তিনিও ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম চলে গেলেন বাসে চড়ে। এক বোনের পিচ্চির বয়স দিলো ৩ মাস, তাকেও নিয়ে ঢাকা থেকে গ্রামে চলে গেল বাসে।
অসুস্হতা, বাচ্চার পরীক্ষা, গ্রামে অসহনীয় লোডশেডিং, চাকুরীর ট্রেনিং, সামনে টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা --সবাই সবকিছু ভুলে গেল এক নিমিষেই।
জন্ম থেকে শহরে বড় হওয়া বড়-ভাইবোনদের ছেলে মেয়েরা একেবারে গ্রামের সাথে মিশে গেল। ছোট ছোট ছেলেমেয়ারা, তাদের কাছে শোকটা অত প্রকট নয়। খালি পায়ে দাপাদাপি, পুকুরে নামা, গোল্লাছুট খেলা, মনে হচ্ছে তাদের একটা পিকনিক চলছে। খালি গায়ে কাদা মাখামাখি করছে।
আব্বা মারা যাওয়ার শোক ছিলো সবার মনে, সেই শোক থেকেই হয়ত পরিবারের সবাই আবার নতুন করে পারিবারিক বন্ধনটাকে দৃঢ় করলাম। তবে ভালো লাগছিলো, ভাগ্নে, ভাতিজারা গ্রামকে নতুনভাবে চিনতে পারলো, এরা আগে গ্রামে গেলেও কখনো ১ রাতও থাকতো না।
আমাদের রাষ্ট্রপতি মারা যাওয়ার পর সরকার এবং বিরোধীদল যে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন, সেটা দেখে খুব ভালো লাগছে। বিরোধীদলীয় নেত্রী বঙ্গভবনে যাবেন, এটা হয়ত অনেকে কল্পনাও করতে পারেন নাই। আমরা কি পারি না রাজনৈতিক বন্ধনগুলোকে আরো একটু দৃঢ় করতে? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।