জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমের মুক্তিযুদ্ধকালের অপরাধ মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু বয়স ও শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় তাঁকে মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে ৯০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ গতকাল সোমবার এ রায় দেন।
এটি একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের পঞ্চম মামলার রায়। এর আগে দুটি ট্রাইব্যুনাল চারটি মামলার রায় দিয়েছেন।
ট্রাইব্যুনাল-১ দিয়েছেন একটি, বাকি তিনটির রায় দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল-২। রায় ঘোষিত হওয়া চারটি মামলার মধ্যে তিনটিই এখন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারাধীন।
চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার প্রথম রায় দেন ট্রাইব্যুনাল-২। সেদিন জামায়াতের সাবেক সদস্য (রুকন) পলাতক আবুল কালাম আযাদকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। ৫ ফেব্রুয়ারি একই ট্রাইব্যুনাল জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
তৃতীয় রায় আসে ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে। ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। এরপর ৯ মে চতুর্থ রায়ে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে ফাঁসির আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-২।
রায় ঘোষণার দিন পূর্বনির্ধারিত থাকায় গতকাল সকাল ১০টা ১০ মিনিটে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে গোলাম আযমকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কারাকক্ষ থেকে ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসা হয়। সাড়ে ১০টার দিকে তাঁকে হাজতখানা থেকে এজলাসে আসামির কাঠগড়ায় নেওয়া হয়।
সাদা পাঞ্জাবি, ডোরাকাটা লুঙ্গি ও মাথায় টুপি পরা গোলাম আযমকে হুইলচেয়ারে করে কাঠগড়ায় নিয়ে যান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এক মিনিটের মধ্যে আদালতকক্ষে আসন নেন ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীর, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক।
রায় ঘোষণার কার্যক্রম শুরু হলে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বলেন, আজ যে মামলার রায়ের দিন ধার্য আছে, সে মামলার একমাত্র আসামি অধ্যাপক গোলাম আযম। তিনি সুপরিচিত ব্যক্তি। একাত্তরে তিনি আরও ব্যাপক পরিচিতি পান, ওই সময় তিনি পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতের আমির ছিলেন।
তিনি কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটিরও অন্যতম প্রভাবশালী সদস্য ছিলেন।
ট্রাইব্যুনাল বলেন, এই মামলার বিশেষ কয়েকটি বৈশিষ্ট্য আছে। প্রথমত, গোলাম আযমের বিরুদ্ধে এমন কোনো অভিযোগ আনা হয়নি যে তিনি অপরাধস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
দ্বিতীয়ত, ওনার প্রত্যক্ষ নির্দেশে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, এমন কোনো অভিযোগও তাঁর বিরুদ্ধে নেই। মূলত তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটির (ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দায়)।
রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগ, একাত্তরে জামায়াতের সদস্যদের নিয়ে রাজাকার, আলবদর, আলশামস, আল মুজাহিদ প্রভৃতি প্যারামিলিশিয়া বাহিনী গঠিত হয়, তিনি এসব বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন। এসব বাহিনী একাত্তরে গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ, ধর্ষণ প্রভৃতি অপরাধ করেছে। কর্তৃত্ব থাকার পরও তিনি কোনো অপরাধীকে অপরাধ করা থেকে বিরত রাখেননি, শাস্তিও দেননি। রাষ্ট্রপক্ষ বলেছে, যেসব অপরাধ রাজাকার, আলবদররা করেছে, তার দায়দায়িত্ব গোলাম আযমের ওপর পড়ে।
বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীর আরও বলেন, ‘ট্রাইব্যুনালের অন্য মামলাগুলোর সঙ্গে এটাই এ মামলার পার্থক্য।
অন্যগুলোতে সরাসরি অভিযোগ আছে, এটাতে নেই। এ মামলায় মৌখিক সাক্ষ্যের তেমন কোনো গুরুত্ব নেই, সবই দালিলিক সাক্ষ্য। বিভিন্ন পত্রিকার ক্লিপিংস থেকে দেখা গেছে, একাত্তরে গোলাম আযম বিভিন্ন বক্তৃতা করেছেন, আলোচনা করেছেন, বিবৃতি-পরামর্শ দিয়ে সাহায্য চেয়েছেন। তবে আমরা মনে করি, আরও কিছু ডকুমেন্ট দাখিল করলে আমাদের জন্য ভালো হতো। রেফারেন্স বই হিসেবে তেমন কোনো বই উপস্থাপন করা হয়নি।
’
বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীর বলেন, ‘রায় দিতে তিন মাস লেগেছে বলে অনেকে আমাদের সমালোচনা করেছেন। সমালোচনা করতেই পারেন, কিন্তু আমাদের কিছু সমষ্টিগত সমস্যা আছে। আমাদের ট্রাইব্যুনালে এক সেট স্বাধীনতাযুদ্ধের দলিলপত্র ছাড়া আর কোনো আইনের বই নেই, সেটাও দুই ট্রাইব্যুনাল শেয়ার করে পড়তে হয়। গত ৪০ বছরে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে শত শত বই লেখা হয়েছে, কিন্তু সেগুলো রাষ্ট্রপক্ষ আমাদের দেয়নি, আমরাও পাইনি। বিভিন্ন জায়গা থেকে রেফারেন্স সংগ্রহ করে আমরা রায় সমৃদ্ধিশালী করার চেষ্টা করেছি।
তার পরও আমরা সন্তুষ্ট হতে পারিনি। এ জন্য রায় দিতে বিলম্ব হয়েছে। ’ তিনি বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায় ২৪২ পৃষ্ঠার, তবে এজলাসে ৭৫ পৃষ্ঠার সংক্ষিপ্ত রায় পড়ে শোনানো হবে।
বেলা ১১টার দিকে সংক্ষিপ্ত রায় পড়া শুরু করেন বিচারপতি আনোয়ারুল হক। তিনি আসামির পরিচিতি, মামলার পদ্ধতিগত বিষয় ও বিভিন্ন আইনি প্রশ্নের জবাব তুলে ধরেন।
এ ছাড়া এ সময় মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিষয়ে বিশদ বিবরণ দেওয়া হয়।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রায় পড়া শুরু করেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন। গোলাম আযমের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ ট্রাইব্যুনাল কীভাবে নিষ্পত্তি করেছেন—তা তুলে ধরেন তিনি।
ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা: গোলাম আযমের বিরুদ্ধে আনা প্রথম অভিযোগে ছয়টি ঘটনা এবং দ্বিতীয় অভিযোগে তিনটি ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে গোলাম আযম মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যা সংঘটনের ষড়যন্ত্র এবং পরিকল্পনা করেছেন।
এ দুটি অভিযোগ মূল্যায়নের জন্য ট্রাইব্যুনাল মূলত দালিলিক প্রমাণের ওপর নির্ভর করেছেন।
রায়ে বলা হয়, আসামির লেখা আত্মজীবনী জীবনে যা দেখলাম বইয়ের তৃতীয় খণ্ডের ১৩৩ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, একাত্তরের ২৬ মার্চ গাড়িতে করে শহরে ঘুরতে বের হন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, নবাবপুর রোড, গুলিস্তান এলাকায় যান। সেখানে গিয়ে তিনি ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাদের ধ্বংস ও নৃশংসতা প্রত্যক্ষ করেন। গোলাম আযমের নিজের ভাষায়, ‘যে নৃশংস দৃশ্য দেখলাম তাতে মনে হলো সেনাবাহিনী কোনো শত্রুদেশ জয় করার জন্য আক্রমণ চালিয়েছে। ’ এতে বোঝা যায়, পাকিস্তানি সেনারা কোন ধরনের নৃশংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, সে বিষয়ে তাঁর প্রত্যক্ষ জ্ঞান ছিল।
এ জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও তিনি, তাঁর সমমনা নেতাদের নিয়ে একাত্তরের ৪ এপ্রিল সামরিক আইন প্রশাসক টিক্কা খানের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। ওই সময়ের আজাদ, পূর্বদেশ ও পয়গম পত্রিকার প্রতিবেদন বলছে, আসামি ও তাঁর সহযোগীরা মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা করার জন্য টিক্কা খানের সঙ্গে সভা করেছিলেন। যার ফল হিসেবে সহযোগী বাহিনীগুলোর সহযোগিতায় পাকিস্তানি সেনারা মুক্তিযুদ্ধকালের নয় মাস দেশজুড়ে ভয়াবহ নৃশংসতা চালিয়েছে। ষড়যন্ত্র একটি প্রাথমিক অপরাধ, এটা প্রমাণ করা জরুরি নয় যে ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনার ফলে মানবতাবিরোধী অপরাধ বা গণহত্যা হয়েছে।
রায়ে বলা হয়, দালিলিক প্রমাণ থেকে দেখা যায়, টিক্কা খান ও প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে আসামি ও তাঁর সহযোগীরা পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগী আধা সামরিক বাহিনী গঠনে যৌথভাবে ভূমিকা রেখেছেন।
তাঁরা শান্তি কমিটিকে তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দিয়েছেন; রাজাকার, আলবদর, আলশামস প্রভৃতি বাহিনী গঠন করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেছেন। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের উদ্দেশে আসামি আহ্বান জানিয়েছেন ‘প্রকৃত দেশপ্রেমিক’ রাজাকারদের অস্ত্র সরবরাহের জন্য, মুক্তিকামী বাঙালিদের নিশ্চিহ্ন করতে রাজাকারের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য। আসামির কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে যে পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য পাওয়া যায়, তার ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল মনে করেন তিনি ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন, যার ফলে আসামির অধীনস্থ আধা সামরিক বাহিনীগুলো দেশজুড়ে ব্যাপক গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করেছে।
উসকানি: এ মামলার তৃতীয় অভিযোগে মুক্তিযুদ্ধকালের ২৮টি ঘটনা উল্লেখ করে অভিযোগ আনা হয়েছে, একাত্তরে গোলাম আযম বক্তব্য ও বিবৃতি দেওয়ার মধ্য দিয়ে তাঁর অনুসারীদের মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যা সংঘটনে উসকানি দিয়েছেন। এ অভিযোগও মূল্যায়ন করা হয়েছে মূলত দালিলিক প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে।
রায়ে বলা হয়, একাত্তরের ১৯ জুলাই সংগ্রাম-এর প্রতিবেদনে দেখা যায়, একাত্তরের ১৬ জুলাই রাজশাহীতে দেওয়া শান্তি কমিটির এক সভায় গোলাম আযম বলছেন, হিন্দুরা সব সময় মুসলমানের শত্রু, হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে বন্ধুত্বের কোনো প্রমাণ নেই। এ ধরনের হিংসাত্মক বক্তব্য সুস্পষ্টভাবে হিন্দুদের প্রতি আসামির বিদ্বেষ ও সাম্প্রদায়িক অনুভূতি প্রকাশ করে, যাতে একই সঙ্গে রয়েছে এই ধর্মীয় গোষ্ঠীকে দেশ থেকে বিতাড়ন বা ধ্বংসের গূঢ় ইচ্ছা। অথচ উপমহাদেশের ইতিহাস বলে, গত এক হাজার বছর ধরে এ অঞ্চলে হিন্দু-মুসলমান শান্তিপূর্ণভাবে ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে বসবাস করছে।
ট্রাইব্যুনাল আরও বলেন, একাত্তরের ১৬ আগস্ট আজাদ পত্রিকার প্রতিবেদন অনুসারে, পাকিস্তানের আজাদী দিবস উপলক্ষে কার্জন হলে অনুষ্ঠিত সভায় গোলাম আযম বলেন, ‘পাকিস্তান না থাকলে বাঙালি মুসলমানদের অস্তিত্ব থাকবে না। এ কথা যারা বুঝতে চায় না, তাঁদের পূর্ব পাকিস্তানের মাটি থেকে সমূলে উৎখাত করতে হবে।
’ এ ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে আসামি তাঁর অনুসারীদের প্রত্যক্ষ নির্দেশ দিয়েছেন মুক্তিকামী বাঙালিকে নির্মূল করার জন্য। ‘এ কথা যারা বুঝতে চায় না’ বলতে দেশের মুক্তিকামী মানুষকে বোঝানো হয়েছে।
রায়ে বলা হয়, একাত্তরের ২৩ নভেম্বর লাহোরে গোলাম আযম সাংবাদিকদের কাছে মন্তব্য করেন, পূর্ব পাকিস্তানে শান্তি স্থাপনের জন্য সরকারের উচিত হবে শান্তি কমিটির সদস্য ও রাজাকারদের স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র সরবরাহ করা। সাংবাদিকদের কাছে এ ধরনের মন্তব্য বাঙালিদের নির্মূল করতে তাঁর অনুসারীদের প্রতি প্রত্যক্ষ ও উন্মুক্ত নির্দেশ। ১ ডিসেম্বর গোলাম আযম পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেন, যা পরদিন ইত্তেফাক পত্রিকায় ছাপা হয়।
মুক্তিবাহিনীকে ‘শত্রু বাহিনী’ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ‘তথাকথিত মুক্তিবাহিনীকে প্রতিহত করতে রাজাকাররাই যথেষ্ট। ’ এ জন্য তিনি রাজাকারদের সংখ্যা বাড়ানোর ওপর জোর দেন। রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করা স্পষ্টভাবে গোলাম আযমের ঊর্ধ্বতন অবস্থান নির্দেশ করে এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যা সংঘটনে রাজাকারদের উসকানি দেওয়ার স্পষ্ট ইঙ্গিত করে। উসকানি কোনো অপরাধের প্রাথমিক পর্ব এবং গোলাম আযম তাঁর অধীনস্থ আধা সামরিক বাহিনীকে অপরাধ সংঘটনে স্পষ্ট উসকানি দিয়েছেন।
সহযোগিতা: গোলাম আযমের বিরুদ্ধে চতুর্থ অভিযোগ, তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যা সংঘটনে সহযোগিতা করেছেন।
এ অভিযোগে রাষ্ট্রপক্ষ মুক্তিযুদ্ধকালের ২৩টি ঘটনা উল্লেখ করেছে।
এ অভিযোগের মূল্যায়ন করতে ট্রাইব্যুনাল দালিলিক ও মৌখিক সাক্ষ্য বিশ্লেষণ করেছেন। ট্রাইব্যুনাল বলেন, ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনারা ঢাকায় কী ধরনের নৃশংসতা চালিয়েছে, তা গোলাম আযম আত্মজীবনীমূলক বই জীবনে যা দেখলাম -এ লিখেছেন। নিরস্ত্র বাঙালির ওপর চালানো নৃশংসতার বিষয়ে পূর্ণ জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও তিনি সমমনা রাজনীতিকদের নিয়ে টিক্কা খানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং সেনাদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
রায়ে আরও বলা হয়, এটা প্রতিষ্ঠিত সত্য যে পাকিস্তানি সেনা ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা নিরস্ত্র বাঙালিদের বৃহৎ পরিসরে ধ্বংস করার জন্য আক্রমণ চালিয়েছে।
আসামিও এটা জানতেন, কিন্তু জানা সত্ত্বেও তিনি বারবার পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের প্রশংসা করেছেন। একাত্তরের ২৯ এপ্রিল ও ১ সেপ্টেম্বরের দৈনিক পাকিস্তানে তা নিয়ে প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। দুনিয়ার কোনো বিবেকবান মানুষ হত্যাকারী বাহিনীর প্রশংসা করতে পারে না। কিন্তু গোলাম আযম উদ্দেশ্যমূলকভাবে পাকিস্তানি সেনা ও তাদের সহযোগীদের প্রশংসা করেছেন।
ট্রাইব্যুনাল বলেন, পাকিস্তানি সেনা ও অন্য আধা সামরিক বাহিনী যেমন শান্তি কমিটি, রাজাকার, আলবদর, আলশামস প্রভৃতি গোটা বাংলাদেশে যে নৃশংসতা চালিয়েছে, সে বিষয়ে পর্যাপ্ত দালিলিক প্রমাণ রাষ্ট্রপক্ষ দাখিল করেছে।
এসব আধা সামরিক বাহিনী পূর্ণ ছিল মূলত জামায়াতের তৎকালীন ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের সদস্যদের দিয়ে। জামায়াতের আমির হিসেবে এসব বাহিনীর ওপর গোলাম আযমের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ ছিল। নেতা ও সংগঠনের মধ্যে ঊর্ধ্বতন-অধস্তন সম্পর্ক থাকলে এবং অধস্তন বাহিনী সরাসরি গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করলে, অধীনস্থ বাহিনীর অপরাধের দায় ঊর্ধ্বতনের ওপর বর্তায়। ট্রাইব্যুনাল মনে করেন, আসামি পূর্ণ জ্ঞানে ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে নানা উপায়ে অধস্তন বাহিনীকে অপরাধ সংঘটনে সহযোগিতা করেছেন।
সিরু মিয়া হত্যাকাণ্ড: গোলাম আযমের বিরুদ্ধে হত্যা ও নির্যাতনে নির্দেশ দানের একমাত্র অভিযোগের মূল্যায়ন করে ট্রাইব্যুনাল বলেন, সিরু মিয়া দারোগা ও তাঁর ছেলে আনোয়ার কামাল, নজরুল ইসলাম ও আবুল কাশেমসহ ৩৮ জনকে হত্যা ও নির্যাতনের এ অভিযোগে রাষ্ট্রপক্ষ আটজন সাক্ষীর (৭, ৯, ১১, ১২, ১৩, ১৪, ১৫ ও ১৬ নম্বর সাক্ষী) সাক্ষ্য নিয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের ১১তম সাক্ষী শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, তিনি নিজেও সিরু মিয়া, আনোয়ার কামালসহ অন্যদের সঙ্গে রাজাকারের হাতে ধরা পড়েন এবং হত্যাকাণ্ডের আগ পর্যন্ত তাঁরা একসঙ্গে ছিলেন।
রায়ে আরও বলা হয়, একাত্তরের ১ নভেম্বর মাকে লেখা আনোয়ার কামালের চিঠি ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হয়েছে। ওই চিঠিতে লেখা, ‘আম্মা, সালাম নিবেন। আমরা জেলে আছি। জানি না কবে ছুটব।
ভয় করবেন না। আমাদের ওপর তারা অকথ্য অত্যাচার করেছে। দোয়া করবেন। আমাদের জেলে অনেক দিন থাকতে হবে। ঈদ মোবারক।
-কামাল। ’
রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী আনোয়ারা বেগম (সিরু মিয়ার স্ত্রী) ও মহসিন আলী খানের (সিরু মিয়ার ভগ্নিপতি) সাক্ষ্য বিশ্লেষণ করে ট্রাইব্যুনাল বলেন, রাজাকারদের হাতে স্বামী-সন্তানের ধরা পড়ার খবর পেয়ে গোলাম আযমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন আনোয়ারা বেগম। মহসিন আলী খান (বর্তমানে মৃত) ছিলেন গোলাম আযমের দুই ছেলে আযমী ও আমীনের শিক্ষক। সিরু মিয়া ও আনোয়ার কামালকে মুক্তি দিতে তিনি গোলাম আযমকে অনুরোধ জানান। গোলাম আযম ব্রাহ্মণবাড়িয়া শান্তি কমিটির নেতা পেয়ারা মিয়ার কাছে একটি চিঠি পাঠান, যাতে সিরু মিয়া ও তাঁর ছেলেকে হত্যার নির্দেশ ছিল।
চিঠি পাওয়ার পর ২১ নভেম্বর রাতে সিরু মিয়া, আনোয়ার কামালসহ ৩৮ জনকে পাকিস্তানি সেনা, রাজাকার, আলবদররা গুলি করে হত্যা করে।
ট্রাইব্যুনাল বলেন, সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণে দেখা যায়, গোলাম আযম চাইলে তাঁর অধীনস্থ পেয়ারা মিয়াকে নির্দেশ দিয়ে সিরু মিয়া ও আনোয়ার কামালের জীবন বাঁচাতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি বরং নেতিবাচক সিদ্ধান্ত দিয়ে অপরাধ সংঘটনে সহযোগিতা করেছেন।
বেলা একটার দিকে রায় পড়া শুরু করেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান। তিনি গোলাম আযমের ঊর্ধ্বতন অবস্থান, একাত্তরে জামায়াতের ভূমিকা, দোষী সাব্যস্তকরণ ও শাস্তির অংশটুকু পড়ে শোনান।
গোলাম আযমের ঊর্ধ্বতন অবস্থান: রায়ে বলা হয়, রাষ্ট্রপক্ষের প্রথম সাক্ষী মুনতাসীর মামুন, দ্বিতীয় সাক্ষী মাহবুব উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম (এসপি মাহবুব) ও তৃতীয় সাক্ষী সুলতানা কামালের সাক্ষ্য থেকে দেখা যায়, একাত্তরে কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির প্রভাবশালী সদস্য গোলাম আযম পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগী আধা সামরিক বাহিনী গঠনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। আসামিপক্ষের একমাত্র সাক্ষী আবদুল্লাহহিল আমান আযমীও তাঁর সাক্ষ্যে বলেছেন, একাত্তরে তাঁর বাবা গোলাম আযম শান্তি কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য ছিলেন। এসব সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল মনে করেন, একাত্তরে আসামি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হয়ে ওঠেন, পাশাপাশি উচ্চ বেসামরিক পদমর্যাদার কারণে তিনি কার্যত পূর্ব পাকিস্তানের বেসামরিক প্রশাসনের প্রধানের ভূমিকা পালন করেন।
একাত্তরের ২৬ সেপ্টেম্বর দৈনিক পাকিস্তান-এ প্রকাশিত ‘জামায়াত বাঙালি জাতীয়তাবাদ মেনে নিতে রাজি নয়’ শীর্ষক প্রতিবেদনের উল্লেখ করে ট্রাইব্যুনাল বলেন, গোলাম আযম ওই সময় স্থানীয় একটি হোটেলে বলেছেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর কর্মীরা মুসলিম আদর্শকে বিসর্জন দিয়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদকে মেনে নিতে রাজি নয়। ...যে উদ্দেশ্য নিয়ে জামায়াত রাজাকার বাহিনীতে লোক পাঠিয়েছে, শান্তি কমিটিতে যোগ দিয়েছে, সেই উদ্দেশ্যেই মন্ত্রিসভায় লোক পাঠিয়েছে।
’ একাত্তরে প্রকাশিত দৈনিক সংগ্রাম-এর কয়েকটি প্রতিবেদন উল্লেখ করে ট্রাইব্যুনাল বলেন, একাত্তরে মোহাম্মদপুরের শারীরিক শিক্ষা ইনস্টিটিউটে স্থাপিত রাজাকার ক্যাম্প পরিদর্শনে নিয়মিত যেতেন গোলাম আযম।
একাত্তরের ১৮ সেপ্টেম্বর সংগ্রাম-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের উল্লেখ করে রায়ে বলা হয়, ওই প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, গোলাম আযম সুনির্দিষ্টভাবে কোনো উচ্চপদে না থেকেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃত্বের বলে প্রশিক্ষিত রাজাকারদের ধর্মবিষয়ক ব্যাখ্যা দিতেন। জাতীয় জাদুঘর থেকে সংগৃহীত একটি রসিদের কথা উল্লেখ করে ট্রাইব্যুনাল বলেন, ওই রসিদ দিয়ে একাত্তরে পাকিস্তান রক্ষার জন্য চাঁদা তোলা হতো, তাতে গোলাম আযমের স্বাক্ষর রয়েছে। এতে তাঁর ঊর্ধ্বতন অবস্থানের বিষয়টি স্পষ্ট হয়।
দোষী সাব্যস্তকরণ ও শাস্তি: ট্রাইব্যুনাল বলেন, প্রাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ, দালিলিক নথি ও যুক্তিতর্কের ভিত্তিতে আসামির বিরুদ্ধে গঠন করা পাঁচটি অভিযোগের সবগুলো রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছে।
শাস্তিদানবিষয়ক সিদ্ধান্তে ট্রাইব্যুনাল বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তান রক্ষার নামে গোলাম আযম ছিলেন কার্যত একজন ঊর্ধ্বতন নেতা এবং শান্তি কমিটি, রাজাকার, আলবদর, আলশামস প্রভৃতি আধা সামরিক বাহিনীর স্থপতি। আর পাকিস্তানি সেনাদের বর্বরোচিত বাঙালি নিধনে সাহায্য করেছে এসব আধা সামরিক বাহিনী। এ জন্য রাষ্ট্রপক্ষ গোলাম আযমের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছে।
রায়ে বলা হয়, মামলার ঘটনা, আইনগত অবস্থান এবং অপরাধের গভীরতা ও গুরুত্ব বিবেচনায় ট্রাইব্যুনাল সর্বসম্মতভাবে মনে করেন, গোলাম আযম সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার যোগ্য। একই সঙ্গে এটাও বিবেচনা করতে হবে, তাঁর বয়স ৯১ বছর।
গত বছরের ১১ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনাল তাঁকে কারাগারে পাঠান। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ বিএসএমএমইউ হাসপাতালের কারাকক্ষে পাঠিয়ে দেন। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে সেদিন থেকে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন। এসব বিষয় বিবেচনা করে ট্রাইব্যুনাল সর্বসম্মতভাবে মনে করেন, গোলাম আযমকে কিছুটা প্রশমিত শাস্তি দেওয়া হলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে।
চূড়ান্ত আদেশে ট্রাইব্যুনাল বলেন, আসামি গোলাম আযমকে প্রথম (ষড়যন্ত্র) ও দ্বিতীয় (পরিকল্পনা) অভিযোগে ১০ বছর করে ২০ বছর কারাদণ্ড, তৃতীয় (উসকানি) অভিযোগে ২০ বছর কারাদণ্ড, চতুর্থ (সহযোগিতা) অভিযোগে ২০ বছর কারাদণ্ড এবং পঞ্চম (সিরু মিয়া হত্যাকাণ্ড) অভিযোগে ৩০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হলো।
কারাদণ্ডের প্রতিটি শাস্তি ধারাবাহিকভাবে একটির পর একটি বা মৃত্যু পর্যন্ত চলবে।
বেলা পৌনে দুইটার দিকে রায় ঘোষণা শেষ করে ট্রাইব্যুনাল গোলাম আযমকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
দণ্ড ঘোষণা শেষ হলে এজলাসে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। এজলাসে উপস্থিত গোলাম আযমের ছেলে সাবেক সেনা কর্মকর্তা আবদুল্লাহহিল আমান আযমী কাঠগড়ার কাছে গিয়ে গোলাম আযমকে বলেন, ‘সব ঠিক আছে, ফাঁসি হয়নি। ’ এ সময় আযমীকে উৎফুল্ল দেখা গেছে।
আসামিপক্ষের উপস্থিত আইনজীবীদের চোখে-মুখে ছিল স্বস্তি। তাঁরাও আসামির কাঠগড়ায় বসা গোলাম আযমের দিকে এগিয়ে যান।
গোলাম আযমকে সর্বোচ্চ শাস্তি না দেওয়ায় কেঁদে ফেলেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি তুরিন আফরোজ। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, ‘অপরাধ তো আমরা করেছি। কেন ৪০ বছর পর বিচার করতে গেছি?’ রাষ্ট্রপক্ষের অন্য কৌঁসুলিদেরও হতাশ ভঙ্গি দেখা গেছে।
তবে রায় শুনে কোনো কথা বলেননি বা বক্তব্য দেননি আসামি গোলাম আযম। শুধু তাঁকে বস্ফািরিত চোখে তাকিয়ে থাকতে দেখা গেছে। উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা তাঁকে কাঠগড়া থেকে নামিয়ে হাজতখানায় নিয়ে রাখেন।
রাষ্ট্রপক্ষের প্রতিক্রিয়া: রায়ের পর রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের প্রধান সমন্বয়ক এম কে রহমান বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ গোলাম আযমের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে সব কটিই প্রমাণ করতে পেরেছে। কিন্তু তাঁর সর্বোচ্চ শাস্তি না হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষ হতাশ।
আপিলের বিষয়ে তিনি বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর আপিল করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক আবদুল হান্নান খান বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা ছিল, গোলাম আযমকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে। কিন্তু বয়স বিবেচনা করে তাঁর শাস্তি কমিয়ে দেওয়ায় আমরা হতাশ। ’
আসামিপক্ষের প্রতিক্রিয়া: গোলাম আযমের ছেলে আযমী বলেন, ‘এই রায় আমরা প্রত্যাশা করিনি। এটা ন্যায়ভ্রষ্ট রায়।
তিনি (গোলাম আযম) একাত্তর সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে কাজ করেননি। পাকিস্তানের অখণ্ডতার পক্ষে কথা বলেছেন। ’
গোলাম আযমের প্রধান আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক বলেন, গোলাম আযম রাজনৈতিকভাবে অখণ্ড পাকিস্তানে বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি পাকিস্তানের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের পক্ষে কাজ করেছেন। শান্তি কমিটির সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা ছিল।
মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের সঙ্গে বিষয়গুলোর সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে গতকাল বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে রাজ্জাক বলেন, ‘এ রায় আবেগতাড়িত। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব। এ রায়ে আমরা ক্ষুব্ধ, বিস্মিত। আমরা মনে করি, এ রায় ন্যায়ভ্রষ্ট।
’।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।