#৬# রাতে কল দিবে না দিবে না করেও রুপা কল দিল আবির কে , দুপুরের ঘটনার কথা একবারের জন্য ও না বলে বলল শোন কাল আমাদের ইউনিভার্সিটি তে বর্ষা বরণ ঊৎসব , তুমি চলে এসো সকাল ৯ টায় , আবির বলল আমি কেন? রুপা বলল বিয়ে হবে না তাই বলে কি আমদের বন্ধুত্ব ও থাকবে না ? আবির বলল আসব । রুপা বলল গাড়ি আনবে না বুঝলে , রাখি । ।
পরদিন আবির ভাবছিল যাবে না, কেন যাবে ? একে তো বৃষ্টি , তার উপর গাড়ি নেওয়া যাবে না , পাগল না পেট খারাপ মেয়ে টার কে জানে !!! অগত্য রিকশা যোগে হাজির হল সে নব বন্ধুর ডাকে সারা দিয়ে , রুপা যেন ওর জন্যই অপেক্ষায় ছিল ছুটে এল ওকে দেখে । রুপা কে দেখে আবির হা করেই তাকিয়ে রইল সাদা নীল শাড়ি , হাত ভরতি নীল চুড়ি ।
নীল টিপ । মাথায় বেলী ফুলের লহর ... এতদিনের পরিচয় এ আজ রুপা কে যেন নতুন করে চিনল সে। রুপা বলল এভাবে তাকিয়ে না থেকে চল অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে । রুপার গলায় “ এসো নিপবনে “ শুনে আবির মনে মনে অবাক ই হল এমন ঝগড়াটে মেয়ের গলায় এত মায়া কি করে এলো ? আবির তন্ময় হয়ে ভাবছিল “ বিয়ের পর রোজ রাতেই সে রুপা কে গান গাইয়েই ছাড়বে “ । হঠাৎ রুপার ডাকে তার ঘোর কাটল ছিঃ কি সব ভাবছিল সে ,রুপা কে বিয়ে ??? প্রশ্নই আসে না ।
সে অনেক হাই মডার্ন মেয়ে কে বিয়ে করবে। সবাই ধরল আবির কে আবির ও যে ভাল গায় রুপা কে বলেছিল আঁখি রুপা ওর বন্ধুদের বলেছে, আবির বলল সে একটা রবীন্দ্র সঙ্গীত ই জানে কিন্তু সে তা বাসর রাতে তার বউ কে শুনাবে বলেই অনেক কষ্টে শিখেছে তাই কার অনুরোধ রাখা সম্ভব না ,সবাই হেসে উঠল কিন্তু রুপা কেন জানি হাসতে পারল না , জেনিফার রবীন্দ্র সঙ্গীত পছন্দ করবে না আবির দেশি হলেও সে বিদেশি বলে উঠে গেল সে ... ... সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে , রুপা বলল এবার একটা রিকশা ধর আজ আমদের ঘুরা দিবস আজকের পর র কোন দিন তোমার আমার মত খেত মেয়ে কে সহ্য করতে হবে না । তুমি স্মার্ট জেনি কে নিয়ে ঘুরবে ,রুপার কথার আগা গোঁড়া কিছুই বুঝল না আবির হা করে তাকিয়ে রইল এবং বিরক্ত হল মনে মনে , রুপা বলল হা বন্ধ কর মাছি ডুকবে বলেই হাসতে শুরু করল । রিকশায় উঠে আবির বলল তোমার কথা কিছুই বুঝলাম না, সব কিছু তুমি জেনি তে টেনে আন কেন ?? রুপা কিছু বলল না । ।
মেঘলা দিনে রিকশায় মাতাল হাওয়ায় ওর সব কথা ভেসে গেল যেন । কি হচ্ছে বুঝতে পারছে না ২ জনের কেউ ই কিন্তু মনে হচ্ছে এত টা ভাল লাগা আগের মেঘলা কোন দিনে তাদের মনে এসে ধরা দেয়নি আড় চোখে একজন র একজন কে দেখছিল কিন্তু কেউ মুখে কোন দুর্বলতা প্রকাশে অনিচ্ছুক । অনেক্ষন পর আবির বলল এখনও কি রেগে আছ আমার উপর ? রুপা বলল আপনজনের উপর মানুষ রেগে থাকে বাইরের কারও উপর না , আবির বলল আমি যখন কেউ ই না তাহলে বন্ধু বান্ধব অনুষ্ঠান সব ফেলে আমার সাথে কি ? রুপা কিছু বলল না খুব হাসল , হাসতে হাসতে ওর চোখে পানি চলে এলো বলল এই প্রশ্নের উত্তর আমি ও অনেক খুঁজেছি পাইনি তুমি খুঁজে পেলে আমাকে জানিও প্লীজ , ফুচকা খাবে ?? রুপা ভেবেছিল আবির বলবে ছিঃ রাস্তার ফুচকা খাব আমি ?? তাকে অবাক করে দিয়ে আবির বলল খেতে পারি বিল কিন্তু আধাআধি হবে , রুপা হেসে বলল নিশ্চয় কিন্তু আজ আমাকে টাকা ধার দিতে হবে পরে শোধ করে দিব , আবির বলল সুদ দিতে হবে কিন্তু । । রুপা বলল রাজি ।
ঝাল ফুচকা খেয়ে আবির এর ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা র রুপা ওর অবস্থা দেখে হেসেই বাঁচে না । । আবির তন্ময় হয়ে ভাবছিল মেয়ে টা খেত হলেও হাসি টা অনুভব করা যায় নিজের মধ্যে । । রুপা বলল এখন চল বাসায় যাই ।
রুপা কে ওর বসার সামনে নামিয়ে দিয়ে যাওয়ার সময় বলল সব কিছু কেমন যেন বদলে যাচ্ছে মনে হচ্ছে কেন বল তো ? রুপা চুপ করে রইল একটু পর বলল আমার মেইল আইডি তোমাকে এসএমএস করে দিব , জেনিফার এর একটা ছবি মেইল করো । আবির এক দৃষ্টি তে রুপার দিকে তাকিয়ে রইল রুপা খুব তাড়াতাড়ি চোখ নামিয়ে আসি বলে চলে গেলেও আবির এর চোখে যেন অনেক কিছুই ধরা পড়ল তবে কেন যেন তা অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিলো তার। ।
#৬# রাতে কল দিবে না দিবে না করেও রুপা কল দিল আবির কে , দুপুরের ঘটনার কথা একবারের জন্য ও না বলে বলল শোন কাল আমাদের ইউনিভার্সিটি তে বর্ষা বরণ ঊৎসব , তুমি চলে এসো সকাল ৯ টায় , আবির বলল আমি কেন? রুপা বলল বিয়ে হবে না তাই বলে কি আমদের বন্ধুত্ব ও থাকবে না ? আবির বলল আসব । রুপা বলল গাড়ি আনবে না বুঝলে , রাখি ।
।
পরদিন আবির ভাবছিল যাবে না, কেন যাবে ? একে তো বৃষ্টি , তার উপর গাড়ি নেওয়া যাবে না , পাগল না পেট খারাপ মেয়ে টার কে জানে !!! অগত্য রিকশা যোগে হাজির হল সে নব বন্ধুর ডাকে সারা দিয়ে , রুপা যেন ওর জন্যই অপেক্ষায় ছিল ছুটে এল ওকে দেখে । রুপা কে দেখে আবির হা করেই তাকিয়ে রইল সাদা নীল শাড়ি , হাত ভরতি নীল চুড়ি । নীল টিপ । মাথায় বেলী ফুলের লহর ... এতদিনের পরিচয় এ আজ রুপা কে যেন নতুন করে চিনল সে।
রুপা বলল এভাবে তাকিয়ে না থেকে চল অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে । রুপার গলায় “ এসো নিপবনে “ শুনে আবির মনে মনে অবাক ই হল এমন ঝগড়াটে মেয়ের গলায় এত মায়া কি করে এলো ? আবির তন্ময় হয়ে ভাবছিল “ বিয়ের পর রোজ রাতেই সে রুপা কে গান গাইয়েই ছাড়বে “ । হঠাৎ রুপার ডাকে তার ঘোর কাটল ছিঃ কি সব ভাবছিল সে ,রুপা কে বিয়ে ??? প্রশ্নই আসে না । সে অনেক হাই মডার্ন মেয়ে কে বিয়ে করবে। সবাই ধরল আবির কে আবির ও যে ভাল গায় রুপা কে বলেছিল আঁখি রুপা ওর বন্ধুদের বলেছে, আবির বলল সে একটা রবীন্দ্র সঙ্গীত ই জানে কিন্তু সে তা বাসর রাতে তার বউ কে শুনাবে বলেই অনেক কষ্টে শিখেছে তাই কার অনুরোধ রাখা সম্ভব না ,সবাই হেসে উঠল কিন্তু রুপা কেন জানি হাসতে পারল না , জেনিফার রবীন্দ্র সঙ্গীত পছন্দ করবে না আবির দেশি হলেও সে বিদেশি বলে উঠে গেল সে ... ... সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে , রুপা বলল এবার একটা রিকশা ধর আজ আমদের ঘুরা দিবস আজকের পর র কোন দিন তোমার আমার মত খেত মেয়ে কে সহ্য করতে হবে না ।
তুমি স্মার্ট জেনি কে নিয়ে ঘুরবে ,রুপার কথার আগা গোঁড়া কিছুই বুঝল না আবির হা করে তাকিয়ে রইল এবং বিরক্ত হল মনে মনে , রুপা বলল হা বন্ধ কর মাছি ডুকবে বলেই হাসতে শুরু করল । রিকশায় উঠে আবির বলল তোমার কথা কিছুই বুঝলাম না, সব কিছু তুমি জেনি তে টেনে আন কেন ?? রুপা কিছু বলল না । । মেঘলা দিনে রিকশায় মাতাল হাওয়ায় ওর সব কথা ভেসে গেল যেন । কি হচ্ছে বুঝতে পারছে না ২ জনের কেউ ই কিন্তু মনে হচ্ছে এত টা ভাল লাগা আগের মেঘলা কোন দিনে তাদের মনে এসে ধরা দেয়নি আড় চোখে একজন র একজন কে দেখছিল কিন্তু কেউ মুখে কোন দুর্বলতা প্রকাশে অনিচ্ছুক ।
অনেক্ষন পর আবির বলল এখনও কি রেগে আছ আমার উপর ? রুপা বলল আপনজনের উপর মানুষ রেগে থাকে বাইরের কারও উপর না , আবির বলল আমি যখন কেউ ই না তাহলে বন্ধু বান্ধব অনুষ্ঠান সব ফেলে আমার সাথে কি ? রুপা কিছু বলল না খুব হাসল , হাসতে হাসতে ওর চোখে পানি চলে এলো বলল এই প্রশ্নের উত্তর আমি ও অনেক খুঁজেছি পাইনি তুমি খুঁজে পেলে আমাকে জানিও প্লীজ , ফুচকা খাবে ?? রুপা ভেবেছিল আবির বলবে ছিঃ রাস্তার ফুচকা খাব আমি ?? তাকে অবাক করে দিয়ে আবির বলল খেতে পারি বিল কিন্তু আধাআধি হবে , রুপা হেসে বলল নিশ্চয় কিন্তু আজ আমাকে টাকা ধার দিতে হবে পরে শোধ করে দিব , আবির বলল সুদ দিতে হবে কিন্তু । । রুপা বলল রাজি । ঝাল ফুচকা খেয়ে আবির এর ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা র রুপা ওর অবস্থা দেখে হেসেই বাঁচে না । ।
আবির তন্ময় হয়ে ভাবছিল মেয়ে টা খেত হলেও হাসি টা অনুভব করা যায় নিজের মধ্যে । । রুপা বলল এখন চল বাসায় যাই । রুপা কে ওর বসার সামনে নামিয়ে দিয়ে যাওয়ার সময় বলল সব কিছু কেমন যেন বদলে যাচ্ছে মনে হচ্ছে কেন বল তো ? রুপা চুপ করে রইল একটু পর বলল আমার মেইল আইডি তোমাকে এসএমএস করে দিব , জেনিফার এর একটা ছবি মেইল করো । আবির এক দৃষ্টি তে রুপার দিকে তাকিয়ে রইল রুপা খুব তাড়াতাড়ি চোখ নামিয়ে আসি বলে চলে গেলেও আবির এর চোখে যেন অনেক কিছুই ধরা পড়ল তবে কেন যেন তা অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিলো তার।
।
#৭# দুঃস্বপ্নও এত ভয়াবহ হয় না আবির এর মনে হচ্ছে সে দুঃস্বপ্ন দেখছে একটু পর ই মা তাকে ডেকে তুলবে । গত রাতে আঁখির শ্বশুর বাড়ির একটা অনুষ্ঠান থেকে শহরে ফেরার পথে রোড এক্সিডেন্ট এ আবির এর মা , বোন এবং বোন জামাই মারা গেছে , আঁখির দেড় বছর এর মেয়ে মাহিন এর জ্বর ছিল বলে ওকে রেখে গিয়েছিল আবির এর বাবার কাছে । কিছুখন আগে তাদের দাফন শেষ করে সবাই ঘরে ফিরেছে আবির এর মনে হচ্ছে ঘর ভর্তি মানুষ কিন্তু ঘর টা ফাঁকা কেন? মাহিন কে কোলে নিয়ে রুপা আবির এর সামনে এসে দাঁড়ালো আবির বলল ঘর টা অনেক ফাঁকা মনে হচ্ছে তাই না? রুপা কিছু বলল না শুধু ওর চোখের পানি টা আটকাতে পারে নি, আবির বলল রুপা আমার অনেক কাঁদা উচিত কিন্তু কান্না পাচ্ছে না কেন বল তো ? রুপা কিছু না বলে মাহিন কে আবির এর কোলে তুলে দিল পিচ্চি মাহিন তার আধো আধো বোলে বলল মামাটা মা নাই । আবির কিছু বলতে পারল না মাহিন কে জড়িয়ে ধরে এক করুন আত্ম চিৎকারে পৃথিবীকে জানিয়ে দিল মা হারানোর কষ্ট শুধু যার যাই সে ই জানে মাহিন না বুঝলেও আবির ঠিক ই বুঝতে পারছে সে কি হারিয়েছে ।
র মাহিন দেড় বছর বয়সেই মা বাবা ২ জন কে হারিয়েছে , কেন এত টা নিষ্ঠুর হলে তুমি আল্লাহ , কেন?
গত কয় দিন রুপা রোজ ই আবির দের বাসায় এসেছে মাহিন কে খাওয়ায় ওর দেখা শুনা করে আবির কিছুটা স্বাভাবিক হলেও খুব একটা কথা বলে না র আবির এর বাবা খুব কিছুই যেন হয়নি এমন ভাব নিয়ে মাহিন এর সাথে খেলায় মেতে উঠে ।
একদিন সকালে রুপা বের হচ্ছিল ওর মা ওকে ডেকে বলল প্রায় ১৫ দিন তো হল র কত রোজ ওই বাসাই যাচ্ছও ব্যাপারটা ভাল দেখায় না , রুপা বলল কিন্তু মা মাহিন অন্য কার হাতে কিছু খেতে চায় না তাই...... ওর মা বলল এটা ওদের ব্যাপার ওদের ই সল্ভ করতে দাও ।
রুপা আসছেনা মাহিন ও কান্না কাটি করছে আবির ফোন করল রুপা কে ধরেই বলল তোমার কমন সেন্স এর অভাব তা কি বার বার প্রমান করতে হবে ? মাহিন কতক্ষণ না খেয়ে থাকবে শুনি? র আমার আজ জয়েনিং অফিস এ , কিছুই মনে থাকে না তাই না?
রুপা কিছু বলতে পারল না , আবির বলল কি হল ?
রুপা বলল আবির আমার কোন অধিকার নেই তোমাদের উপর , কেন আমি রোজ আসব ? আমি তো কেউ না ... র কিছু বলতে পারল না রুপা কাঁদতে কাঁদতে ফোন রেখে দিল । আবির বজ্রাহতের মত ফোন হাতে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইল , আসলেই তো রুপা কে কোন অধিকারে সে ধমক দিল , আসছে না বলে কথা শুনাল? এই রুপা কে তাড়াতেই তার কত প্লান এখন কেন রুপা কেই তার এত দরকার হয়ে গেল?? নিজেই যেন নিজের কাছে অচেনা আবির কি হল ওর এত কষ্ট হচ্ছে কেন???
#৮# রাতে খাওয়ার টেবিল এ বাবা র আবির, মাহিন বলতে গেলে না খেয়েই শুয়েছে । আবির এর বাবা বলল মাহিন এর জন্য একটা আয়া ঠিক করেছি সকালে আসবে , আবির কিছু বলল না চুপচাপ খাচ্ছিল ।
বাবা বলল তোর জব কেমন লাগল রে ?? টিকতে পারবি ? আবির বলল ভাল,মনে হয় পারব । আবির এর বাবা বলল ও ভাল কথা রুপার মা কাল ডেকে পাঠিয়েছেন ,আবির মুখ তুলে দেখল বাবাকে কি বলতে চেয়েও বলল না , আবির এর বাবা বললেন ভাবিস না তোর মুক্তি আটকাতে তোর মা আপা এবার বাঁধা দিতে পারবে না , আবির শুধু বলল মা এর ইচ্ছা টা পূর্ণ করো বাবা এটা বলল না যে তার মন রুপা নামের খেত মেয়ে টা কি করে যেন দখল করে নিয়েছে । আবির এর বাবা হাসল এর দিন তারিখ ঠিক করে ফিরবে নাকি ? থাক সেটায় ভাল আবির কে যদি দিন ঠিক করতে দেয় বাপরে ! খেত মেয়ে টার মতিগতি ঠিক নাই ইট নিয়ে কখন আবার দৌড়ান দেয় ওকে । আবির হাসতে থাকে মনে মনে ।
অনেক রাত করে আবির এর বাবা ফিরলেন ,আবির কিছু বলার আগেই বললেন সকালে কথা বলব রে এখন শুয়ে পড়ি ।
পুরা রাত অস্থিরতায় র ঘুম ই হল না আবির এর রুপা কে ফোন করল বার কয়েক ফোন বন্ধ । সকালে বাবা কে ধরল আবির কি হয়েছে বাবা ? বাবা বললেন তোর মুক্তি হয়েছে , ওরা না করে দিয়েছে, তুই তোর পছন্দের মেয়ে কে বিয়ে করতে পারবি এখন । আবির বলল মানে?? রুপা না করে দিয়েছে ?? বাবা হুম , র বিয়ের আগেই মা হয়ে শ্বশুর বাড়িতে আসতে কে চাইবে ? এটা অনেক কঠিন দায়িত্ব । আবির বলল রুপা এ কথা বলেছে বাবা ?? বাবা বললেন বাদ দে এসব ওর সাথে তমাল নামের এক ছেলের বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে তুই জেনিফার কে বিয়ে কর । আবির এর বাবা জানতেন না রুপার বন্ধুর নাম ও তমাল না জেনেই তিনি এক ভয়ংকর আগুন জালিয়ে দিলেন আবির এর মনে ।
। বাবা উঠে চলে গেলেন নিজের রুমে, রাগ দুঃখ ক্ষোভ আবির কে যেন কিছুই বলতে দিল না র , সে বলতে পারল না জেনিফার নামে কেউ নেই । র রুপা তমাল কে বিয়ে করছে ছিঃ ওর সামনে তাহলে ওই দিন এত নাটক কেন করল ? র মাহিন ওর কাছে বোঝা ??? রাগে আবির যেন অন্ধ হয়ে গেল , এই রুপা কেই সে ধীরে ধীরে ভালবাসতে ............ না আবির র কিছু ভাবতে পারল না , রুপা কে সে সামনে পেলে এখন
,...... কি পাপে যে রুপা কে ভালবাসার মত ভুল সে করল,এর চেয়ে মৃত্যু মনে হয় কম যন্ত্রণা দেয় কিন্তু তাকে বাঁচতে হবে মাহিন কে মানুষ করে সে রুপা কে দেখিয়ে দিবে সে একাই পারে সব , .....................
#৯# আবির রুপা ২ জন ই ঠিক করল র ভাব্বে না একজন র একজন কে , কিন্তু এটা ভাবতে গিয়ে র ও বেশি ভাবছে এক জন র একজন কে
রুপার মাহিন এর খবর নিতে খুব ইচ্ছা করে কিন্তু আবির কে জেনির প্রেমিক কে সে কেন ফোন করবে ?? রুপা কোন দুঃখে আবির এর প্রতি এত দুর্বল হল ? সুন্দরি রুপার পিছনে কি কম ছেলের লাইন ছিল কিন্তু শেষ পর্যন্ত আবির ই কেন ?? কেন তমাল ভাই কে সে এক বার এর জন্য ও নিজের বর ভাবতে পারছে না , কেন ঘৃণা হচ্ছে নিজের উপর ই...ছোট খাট অনেক কিছু নিয়ে আবির অপমান করত রুপা কে অনেক রাগ হত রুপার কিন্তু পরে ভাবে নিজেই হেসে গড়িয়ে পরত , কিন্তু আবির ওকে সত্যি খেত ভাবত ??? এটা কেন একবার ও রুপার বিশ্বাস হত না ???????
রুপার বিয়ের দিন এগিয়ে আসছে দ্রুত,রুপা স্বপ্ন দেখত আবির একদিন ওকে ফোন করবে বলবে ওই খেত মেয়ে আমায় ছেড়ে চলে যাবে ??? রুপা কি করবে তখন খুশিতে হাসতে হাসত লুটিয়ে পরবে না বাঁধ ভাঙ্গা আনন্দে কেঁদে বুক ভাসাবে , কিন্তু বাস্তব র সপ্ন এক হয় না আবির ফোন করে না ওর কাছে ।
একদিন হঠাৎ ই একটা সুপার শপ এ রুপা দেখল মাহিন তার ছোটো ছোট পা ফেলে দৌড়ে বেড়াচ্ছে , রুপা গিয়ে ধরে ফেলল ওকে রুপা কে দেখে মাহিন ওকে জড়িয়ে ধরে বলল লুলপা লুলপা আমি চক্কেত খাব । রুপা ওকে কোলে তুলে নিয়ে গেল চকলেট কেস এর সামনে মাহিন ওর পিচ্ছি হাতে একটা একটা চকলেট তুলে নিচ্ছে , মাহিন কে খুজতে এসে আবির রুপা কে দেখে জ্বলে উঠল কেড়ে নিল রুপার কোল থেকে একটা ধমক দিয়ে বলল বলেছিনা তোমাকে কারো কাছ থেকে চকলেট নিবে না , র এক বার যদি বলতে হয় মাইর দিব মাহিন ... মামার ধমকে পিচ্ছি মাহিন ভয়ে কুঁকড়ে গেল ।
রুপা বলল ওকে ধমকাচ্ছ কেন? আমি ই ওকে এখানে নিয়ে এসেছি , আবির রাগে হিতাহিত জ্ঞান হারাল যেন বলল এত দরদ এত নাটক অন্য কোঁথাও গিয়ে দেখাও আমাকে মাফ কর , রুপা বলল মানে ?? কি বলতে চাও তুমি? আবির মাহিন এর আয়ার কোলে ওকে তুলে দিয়ে ফিরে এসে রুপা কে বলল মানে তুমি কিছুই বুঝ না ? আমি তোমাকে খেত বলেছিলাম বলে খুব গায়ে লেগেছিল তাই না ??? তমাল এর কথা বলেছিলাম বলে অপমানে চোখে পানি দেখে আমি ও ভড়কে গিয়েছিলাম , র এখন তমাল কে বিয়ে করতে যাচ্ছ , এত নাটক কি করে কর তোমরা মেয়ে রা ?? রুপা অবাক হয়ে বলল কি বলছ এসব তুমি ?? আবির বলল ওওও জান না কিছু না ?? মাহিন বোঝা তোমার কাছে র আজ এসেছ দরদ দেখাতে ওর মা নেই বাবা নেই ওকে দরদ দেখালে সবাই তোমাকে সাধুবাদ দিবে তাই ?? মাহিন কে কৃপা করার অধিকার কে দিয়েছে তোমাকে ? পুরা শপ যেন স্তব্ধ হয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে ছিল, রুপা তা খেয়াল করল বলল একটা ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে মাস্ট বী চল কোথাও বসে আমরা কথা বলি , এ কথায় আবির যেন র ও ফেটে পরল তোমার মত ছোট লোকের সাথে কথা বলতেও ঘৃণা হয় বুঝলে , ছোট লোক ! বলেই আবির ধুম করে বের হয়ে গেল , র পাথর হয়ে দাড়িয়ে রইল রুপা ।
রাতে তমাল ফোন করল আবির কে । তমাল এর ফোন দেখে আবির আবার খেপল ফোন ধরেই বলল বিয়ের দাওয়াত দিতে ফোন করেছ বুঝি ?? কিন্তু আফসোস আমি কন ছোট লোকের মুখ র দেখতে চাই না । তমাল বলল আবির কাল একবার প্লীজ একবার আমরা দেখা করি প্লিজ আবির ফর গড সেক !!
আবির র তমাল বসে আছে মুখমুখি বসে এতক্ষণ কথা বলছিল সব শুনে আবির মাথা নিচু করে ভাবছিল রুপা ওর মত পাঁঠা কে ভালবাসার মত ভুল করল আসলেই সে একটা খেত ... একটু পর রুপা ও ঢুকল , রুপা কে দেখে পুরাই চমকে গেল আবির কি হয়েছে মেয়েটার এ কি হাল পুরাই বিধ্বস্ত !
আবির ভুলেই গেল অনেক রেগে ছিল সে রুপার উপর উঠে দাঁড়াল বলল কি হয়েছে তোমার ?? রুপা ভুলে গেল সে একটা পাবলিক প্লেস এ ছুটে এসে আবির এর উপর এলোপাথাড়ি হাত ছুরতে লাগল র বলতে লাগল আমি ছোট লোক আমি ??? তুমি কি ????এত সব মিথ্যা কথা আমার নামে কোন সাহসে বললে তুমি ???? কেন বললে ?? আবির শুরু তে রুপা কে আটকানোর চেষ্টা করে নি পরে রুপার হাত ২ টা নিজের বুকে চেপে ধরে বলল তুমি পারতে না আমাকে ফোন করতে ?? রুপা বলল কেন করব??? জেনি কে বিয়ে করার জন্য তোমার মন উথলা তা কি আমি জানতাম না ?? আবির বলল জেনি নামে কেউ নেই বিয়ে ভাঙতে জেনি কে আমি ই সৃষ্টি করেছি তখন কি জানতাম প্রেম নামের আদিখ্যেতা আমাকেও পেয়ে বসবে । রুপা অবাক হয়ে আবির এর দিকে তাকিয়ে বলল তাই এত বলার পর ও ছবি দাও নি ??? মিথ্যুক ।
আবির বলল ছবি থাকলেই ত দিব ??? বলে একটা হাসি দিল ...। তমাল বুঝল তার র দরকার নেই সে চুপচাপ বেরিয়ে গেল। রুপা আবির কে বলল কথা গুলা তুমি আমার হাত টা ছেড়ে দিয়েও বলতে পার সবাই দেখছে , আবির বলল এতক্ষণ যে তোমার হাতে মার খেলাম তা কেউ দেখে নি তাই না ?? ভাগ্যিস দেখে নি না হয় আমার মান সম্মান যেত , রুপা খিলখিল করে হেসে উঠল বলল ওই দিন শপে আমাকে ছোট লোক বলেছ ভাগ্যিস তা ও কেউ শুনে নি ...
#১০# বাসর ঘরে ঢুকেই আবির দেখে মাহিন র রুপা ওর ল্যাপটপ এ গেইম খেলছে , হায়্ হায় করে তেড়ে এল সে বলল আমার ৫২০০০ টাকার ল্যাপটপ ছাড় তোমারা একে বলেই কেড়ে নিল । । রুপা বলল এত কিপটা কেন তুমি ?? আমার কাছ থেকে ১০০০ টাকা নিয়ে ছেড়েছিলে মনে আছে ?? আবির বলল র তুমি যে ৫ টাকার জন্য রিকশা ওয়ালার গুষ্ঠি উদ্ধার করছ ভুলে গেছ ?? র তোমার কাছে সুদ সহ ফুচকার টাকা এখন পাই আমি ।
ওদের ঝগড়ার মাঝখানে মাহিন ঘুমিয়ে পড়ল আয়া এসে ওকে নিয়ে গেল রুপা ও যাচ্ছিল পিছন পিছন আবির ওর হাত চেপে ধরল বলল এম্নিতেই অনেক গুলা লাইন ভুলে গেছি তার উপর তুমি যদি র ও দেরি কর পুরা গান ই ভুলে যাব , রুপা বলল কি গান ? কর, আবির ২ হাত রুপার কাধে রেখে শুরু করল “ আজি এ বাসর ও রাতে , তুমি আমি এক সাথে , সপ্ন দেখিব, আদর ও করিব , ভাল ও বাসিব “” রুপা থামিয়ে দিয়ে বলল এটা রবীন্দ্রনাথ কন দিন লিখে ছিলেন ??? আবির বলল লিখেছিলেন লিখে শুধু আমার জন্যই রেখে গেছেন ওই যে আজি এ বসন্ত এ যে দিন লিখে ছিলেন তার পর দিন লিখেছেন , রুপা বলল র যাবার আগে তোমাকে মেইল করে গেছেন না?? আবির বলল হুম ঠিক তাই । রুপা বলল তাহলে ওই দিন মিথ্যা বললে কেন বাসর ঘরে শুনাবে ? আবির বলল র এ গাধা তোমাকে ইমপ্রেস করার জন্য বুঝলাম তোমার রবীন্দ্র প্রীতি আছে তাই মুহূর্তের মধ্যেই কাহিনী বানিয়ে ফেললাম , ভুল করিনি দেখলাম নিজের জায়গায় জেনি কে ভেবে কি কষ্ট তুমি পেয়েছিলে , হা হা হা হা ............। রুপা লজ্জায় রাঙ্গা হয়ে আবির কে মারতে শুরু করল মিথ্যুক মিথ্যুক র কি কি বানিয়ে বলেছ বল ??? আবির রুপা কে জড়িয়ে ধরে বলল অত কি মনে আছে ??? একটা খেত মেয়ের হাতে মাইর খেতে খেতে আমি তো সব ভুলে গেলাম, রুপা আবির এর বুকে মাথা রেখে বলল কি করবে চিরকাল মাইর খাবে কপালে করে এনেছ খেতে তো হবেই ....... ২জন ই হাসতে লাগল , আবির গেয়ে উঠল “
তোমাই নতুন করে পাব বলেই হারায় ক্ষণে ক্ষণ ,
ও গো আমার ভালবাসার ধন ;
ও গো তুমি নও আড়ালের ,
তুমি আমার চিরকালের ‘’........................... রুপা ভালবাসা কান্না খুসি সব মিশ্রিত এক অদ্ভুত দৃষ্টি তে আবির এর দিকে তাকিয়ে ছিল আবির ও রুপার মায়া ভরা মুখেই যেন খুঁজে পেল আপন জন হারানোর তীব্র শোকের পর ও মানুষ কি করে কেন বেঁচে থাকে তার উত্তর !!!!!!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।